প্রকাশ: 25/12/2023
ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগগুলোর মধ্যে আইপিএল সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সমাদৃত। সারা
বিশ্বের ক্রিকেটাররা এই লিগে খেলতে মুখিয়ে থাকেন।
আইপিএলে ভালো খেলে দেশের জার্সি পরার সুযোগ পান রিঙ্কু সিংহ, আরশদীপ সিংহের
মতো প্রতিভাবান ক্রিকেটারেরা। কিন্তু, ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে এমন অখ্যাতদের কী করে ক্রিকেটের
মূল স্রোতে নিয়ে আসে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলি এই নিয়ে কৌতুহল নানা মনে।
আইপিএল নামক এই কোটিপতি লিগে ভালো খেলেই ভারতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছিলেন
যশপ্রীত বুমরা, হার্দিক পাণ্ডিয়ারা।
২০২২ সালের নিলামের আগে লক্ষ্মৌ সুপার জায়ান্টসের মেন্টর গৌতম গম্ভীর ঘরোয়া
ক্রিকেটের ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলেন দিল্লিতে। দিল্লির তরুণ ক্রিকেটার আয়ুষ বাদোনির খেলা
দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। ভারতের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলা বাদোনির উপর যাতে কোনও রকম
চাপ তৈরি না হয়, তাই কাউকে কিছু না জানিয়েই মাঠে গিয়েছিলেন গম্ভীর। সেই ম্যাচ দেখার
পরই তরুণ ক্রিকেটারকে নেওয়ার জন্য নিলামে কেনার আগ্রহ প্রকাশ করে লক্ষ্মৌ। গম্ভীর তার
ঘনিষ্ঠ সোর্সের মাধ্যমে তরুণ প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের
ব্যসপারে খোঁজ রাখেন। সেই তরুণদের না জানিয়েই
তাদের খেলা দেখতে চলে যান।
তরুণ, অখ্যাত ক্রিকেটারদের দলে নিয়ে চমকে দেওয়ার পথটা অবশ্য দেখিয়েছিল মুম্বাই
ইন্ডিয়ান্স। পরে বাকি দলগুলোও তাদের অনুসরণ করতে শুরু করে। গোটা ভারত জুড়ে খেলা দেখে
ক্রিকেটার খুঁজে নেয় আইপিএলের দলগুলো। ভারতীয় ক্রিকেটের পরবর্তী তারকা খুঁজে নিতে দলগুলো
বয়সভিত্তিক, ঘরোয়া ক্রিকেটের সঙ্গে নজর রাখে ক্লাব ক্রিকেটেও। সেখান থেকেই তারা খুঁজে
নেয় প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের। প্রতি বছর কোনও না কোনও অনামি ক্রিকেটার কোটিপতি হয়ে
যান। এবারের নিলামেও সেটার ব্যতিক্রম হয়নি। সমির রিজ়ভিকে ৮ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা দিয়ে
কিনে নেয় চেন্নাই সুপার কিংস।
কিন্তু এই খোঁজার প্রক্রিয়াটা কেমন? এসব ক্রিকেটারকে খুঁজে বের করার যে
প্রক্রিয়া তাকে বলা হয় স্কাউটিং। এই প্রক্রিয়ায় প্রথমেই বিরাট সংখ্যক ক্রিকেটারদের
একটা তালিকা তৈরি করা হয়। সেখানে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের ক্রিকেটারদের বেছে নেওয়া
হয়। এরপর চলে সেই তালিকা ছোট করার প্রক্রিয়া। ওই সব ক্রিকেটার বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়
কেমন খেলছেন, তাদের পরিসংখ্যান, ট্রায়ালে কেমন খেলছেন, সব কিছুর উপর ভিত্তি করে নাম
বাদ দেওয়া হয়। আর এই কাজ শুধু আইপিএলের আগে হয়, এমনটা নয়। সারা বছর ধরেই দলগুলি এই
প্রক্রিয়া চালায়। আইপিএলের দলগুলো প্রাক্তন ক্রিকেটার, পরিসংখ্যানবিদ, আম্পায়ার, ম্যাচ
রেফারি এবং ধারাভাষ্যকারদের একটা দলকে এই দায়িত্ব দেয়। তারা সারা বছর ধরে তথ্য যোগাড়
করেন।
অনেক দল আবার মৌসুম শুরুর আগে ক্যাম্প করে। সেখানে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা
নেওয়া হয় ক্রিকেটারদের। গুজরাট টাইটান্স যেমন নিলামের আগে ক্যাম্প করেছিল। দিল্লি ক্যাপিটালসও
কলকাতায় ক্যাম্প করেছিল। সেই ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিলেন সৌরভ গঙ্গুলি। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স
এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুও ক্যাম্প করেছিল নিলামের আগে। দলগুলো একই সময়ে
ক্যাম্প রাখে না। ক্রিকেটারেরা বিভিন্ন দলের ক্যাম্পে যোগ দেন। তাই দলগুলো বিভিন্ন
সময়ে ক্যাম্প শুরু করে। ক্রিকেটারদের কথা মাথায় রেখেই এটা করা হয়।
আইপিএলের সব দলই প্রায় ২০-২৫ জন ক্রিকেটারকে দলে রাখে। ৮ জন বিদেশি বাদ
দিলে বাকি সকলেই ভারতীয়। এত জন প্রতিভাবান ভারতীয় ক্রিকেটারকে খুঁজতে হলে সারা বছর
দলগুলোকে সন্ধান রাখতে হয়। আর সেই কাজটাই করেন স্কাউটেরা।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭