ইনসাইড পলিটিক্স

যেভাবে ভেস্তে যেতে পারে অসহযোগ আন্দোলনও


প্রকাশ: 25/12/2023


Thumbnail

বিএনপি গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশে ডেকেছিল। গুঞ্জন ছিল সেদিন থেকেই তারা ঢাকার রাজপথ দখল করবে এবং ধারাবাহিক কর্মসূচি শুরু করবে। সচিবালয় ঘেরাও, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও, গণভবন ঘেরাও এর মতো কর্মসূচির কথাও শোনা যাচ্ছিল গত ২৮ অক্টোবরের আগে। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের বিএনপির পরিকল্পিত তাণ্ডবে সব কিছুই ভেস্তে গেছে নিজেদের অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের কারণে। 

২৮ অক্টোবর সকাল থেকে রাজধানীর পরিস্থিতি ভালো থাকলেও দুপুর নাগাদ বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডব চালায়। বিশেষ করে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে হামলার ঘটনা ছিল বিএনপির আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। এ সমস্ত নারকীয় তাণ্ডবের ঘটনায় দলটির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা হলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে নেতাদের গ্রেপ্তার করা। ফলে বিএনপি হয়ে পড়ে একেবারে নেতৃত্ব শূন্য। ফলে সরকার পতন আন্দোলন আবার মুখ থুবড়ে পড়ে। সচিবালয় ঘেরাও, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও, গণভবন ঘেরাও এর মতো কর্মসূচি দলটির জন্য হয়ে উঠে অলীক ভাবনা। তবে এর মধ্যেও দলটি আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বিরতি দিয়ে দিয়ে ১১ দফায় অবরোধ ডাকে বিএনপি। কিন্তু তাতেও সুবিধা করতে পারেনি বিএনপি। এরই মধ্যে দেশ নির্বাচনী আবহে প্রবেশ করে। বিএনপিও আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। ডাক দেওয়া হয় অসহযোগ আন্দোলনের। অসহযোগ আন্দোলন সমর্থনে প্রথম দফায় চারদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। সমমনাদের সঙ্গে চলে দফায় দফায় বৈঠক। 

এদিকে, এতোদিন জামায়াত এককভাবে আন্দোলনে থাকলেও এবার অসহযোগ আন্দোলনে জামায়াতকে শরিক করার চেষ্টা চালাচ্ছে বিএনপি। কিন্তু এতেই বিপত্তি বাধে। সরকার পতনের ব্যাপারে বিএনপির সমমনা সমস্ত দলগুলো সহমত থাকলেও জামায়াতের সঙ্গে একত্রে আন্দোলনের ব্যাপারে সমমনাদের তীব্র আপত্তির কথা জানা গেছে। বিশেষ করে এক মঞ্চে আন্দোলনে আপত্তি জানিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ। ফলে অসহযোগ আন্দোলন শেষ মুহুর্তে আশার আলো দেখবে তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।

জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে এক মঞ্চে আন্দোলনের ব্যাপারে ইতোমধ্যে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা মিত্রদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে বিএনপির। অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে রোববার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। গণতন্ত্র মঞ্চ একই কর্মসূচি দেওয়ার কথা থাকলেও এদিন প্রথমবারের মতো তারা ভিন্ন কর্মসূচি বিক্ষোভ মিছিল পালন করেছে। আবার নতুন তিন দিনের গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি দিলেও তা গণতন্ত্র মঞ্চ দিয়েছে দুই দিনের। অথচ এক মঞ্চে আন্দোলনে জামায়াতের প্রসঙ্গ আসার আগে বিএনপির প্রতিটি কর্মসূচি সমান্তরালভাবে পালন করে এসেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। এ রকম বাস্তবতায় এবার অসহযোগ আন্দোলনও যে ভেস্তে যাবে তা বলাই বাহুল্য। কারণ এর আগে বিএনপির সরকার পতন আন্দোলন সফল না হওয়ার পেছেন সমন্বয়হীনতা কথা বলেছেন খোদ বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বই। এ রকম সমন্বয়হীনতা মধ্যে বিএনপি অসহযোগ আন্দোলন কিভাবে এগিয়ে নেয় সেটাই এখন দেখার বিষয়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭