ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

বাংলাদেশকে ভবিষ্যতের চীন হিসেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র?


প্রকাশ: 26/12/2023


Thumbnail

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অগ্রগতি ও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন বিশ্ব-পর্যায়ে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে। অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধাতর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে উন্নয়নের গতি অর্জন করেছে তা দেশকে শীঘ্রই উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করবে। ২০৪১ সালকে সামনে রেখে সেই লক্ষ্যে কাজ করছে আওয়ামী লীগ সরকার। আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন রিপোর্টে বলছে, এ লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ যেভাবে উন্নয়ন করছে তার গতিপ্রকৃতি অনেকটা চীনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাছাড়া বাংলাদেশের উন্নয়নে চীন অনেক বড় অংশীদার। যে কারণে বিশেষজ্ঞরা বলছে, দক্ষিণ এশিয়ায় ভবিষ্যতের চীন হবে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের এই চীন হয়ে ওঠার বিষয়টি ভালভাবে গ্রহণ করছে না যুক্তরাষ্ট্র। বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও ঈর্ষণীয় সফলতা দেখিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের এমন দ্রুত উন্নয়ন অগ্রযাত্রার পিছনে চীনের অংশগ্রহণ অনেক বেশি। চীনের সাহায্যে বাংলাদেশ বেশ কিছু মেগা প্রজেক্ট শেষ করেছে। বাংলাদেশের প্রতি চীনের এ সুদৃষ্টি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দুশ্চিন্তায় ফেলেছে । মূলত, বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই চীনের সাথে এমন সম্পর্ক তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া নজরে রয়েছে বাংলাদেশ সরকারও। 

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমেই চীনের সাথে বন্ধুত্ব ও অংশীদ্বারিত্ব নতুন মাত্রা অর্জন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে শত্রুতা নয়’ এই পররাষ্ট্রনীতি মেনে চলেন। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালীন চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও বাড়বে বলে ধারণা করছে বিশেষজ্ঞরা। 

বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও বিস্তৃত পরিসরে বিকশিত হবে। ফলে আগামী দিনগুলোতে চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে, যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে ভালভাবেই অবগত। 

অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। তবে মহান মুক্তিযুদ্ধে বা  ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিকূল ভূমিকা সবারই জানা। যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে। বর্তমানকালেও পদ্মা সেতু নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বব্যাংকের ‘নগ্ন রাজনীতি’ প্রকাশ্যে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্র জানে বাংলাদেশের সাথে এই অবস্থায় সম্পর্ক উন্নয়ন করা সহজ হবে না। তাই বাংলাদেশে একটি ভিন্ন ধারার সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। যাতে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক উন্নত করতে পারে দেশটি। 

যুক্তরাষ্ট্র চায় বাংলাদেশের সরকারকে দুর্বল করতে অথবা মানবাধিকার বা গণতন্ত্র রক্ষার আড়ালে বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তন করতে। ফলে বাংলাদেশকে বিভিন্নভাবে নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কের তিক্ততা আরও বাড়ছে।   

যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল এজেন্ডা হচ্ছে রাশিয়া ও চীনের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামরিক সম্প্রসারণ রোধ করা। সে জায়গায় মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি ও কৌশল বাংলাদেশের মতো ছোট দেশের কাছে সফলতার মুখ দেখছে না। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চীন ও বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক অনুরূপ। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, বাংলাদেশ যদি নতুন চীনে পরিণত হয় তবে দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের জন্য পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনা করা অসম্ভব হয়ে দাড়াবে। যুক্তরাষ্ট্র চায় না বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এমন ঝুঁকি নিতে। তাই আগামীতেও বাংলাদেশের উপর চাপ বাড়াবে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭