ইনসাইড বাংলাদেশ

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে আসামিকে মারধরের ঘটনায় সাত পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা


প্রকাশ: 28/12/2023


Thumbnail

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে আবদুর রহিম রনি (৪০) নামে এক আসামিকে আটকের পর মারধরের অভিযোগে সাত পুলিশের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এঘটনায় পুলিশ সুপারকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আদেশ প্রাপ্তির তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে পুলিশ সুপারকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. বেলায়েত হোসেন এ আদেশ দেন। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে আদালতের পেশকার নুরুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদি রিনা আক্তার তাঁর স্বামীকে মারধরের ঘটনায় সাত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বুধবার বিকেলে মামলা দায়ের করেন। সন্ধ্যায় মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য জেলা পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন বিচারক।

এ মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, রায়পুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আবু হানিফ, নুরুল ইসলাম, মো. আবু হানিফ, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সফিক মিয়া, সাখাওয়াত হোসেন, কনস্টেবল আতিক উল্যা ও ইউসুফ ঢালি।

মামলার বাদী রিনা রায়পুর উপজেলার পূর্ব চরপাতা গ্রামের আব্দুর রহিম রনির স্ত্রী। পুলিশের দায়েরকৃত তিনটি মামলায় তার স্বামী রনি জেলা কারাগারে রয়েছেন। রনি পূর্ব চরপাতা গ্রামের মো. কহিদ উল্ল্যাহর ছেলে।

বাদীর আইনজীবী আবদুল আহাদ শাকিল পাটওয়ারী বলেন, রনিকে আটকের সময় তার কাছে কোনো ধরনের অস্ত্র ও মাদক পাওয়া যায়নি। তাকে থানা হাজতেও রাখেনি অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা। কোনো একটি গোপন কক্ষে রেখে তাকে মারধর করে। পরে একইদিন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দিয়েছে। এ ঘটনায় রনির স্ত্রী রিনার মামলা আদালত আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার আদালতের আদেশ কপি জেলা পুলিশ সুপারের কাছে পাঠানোর কথা রয়েছে।

এজাহার সূত্র জানায়, ১৭ ডিসেম্বর (রোববার) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের বর্ডার বাজার রায়পুর-চাঁদপুর সড়ক থেকে অভিযুক্তরা রনিকে আটক করেন। তখন তার সঙ্গে গরু বিক্রির ৯০ হাজার টাকা ছিল। ওই টাকা অভিযুক্তরা নিয়ে গেছেন। পরে তাকে নিয়ে এসে মারধর করে এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আটকের খবর পেয়ে রনির স্ত্রী রায়পুর থানায় বারবার গেলেও স্বামীর সন্ধান পাননি। পরে তিনি সদর থানা, গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয় ও জেলা কারাগারেও খোঁজ নিয়ে স্বামীর সন্ধান পাননি। ফের রায়পুর থানায় গেলে সেখানে রনির মোটরসাইকেল দেখতে পান তিনি। এতে স্বামীর সন্ধান চাইলে বিভিন্ন কথা শুনতে হয় তাকে। পরে তিনি এসআই হানিফকে কল দিয়ে স্বামীর সন্ধান চান। হানিফ তার স্বামীকে ছাড়তে ২ লাখ টাকা দাবি করেছেন। এতো টাকা নেই বলে জানালে রনিকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা।

এদিকে রায়পুর থানা পুলিশ জানায়, ১৮ ডিসেম্বর (সোমবার) ডাকাতির প্রস্তুতিকালে রনিসহ দুইজনকে একনলা বন্দুক, ২ রাউন্ড কার্তুজ, দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র, ১৮০ পিস ইয়াবা ও ২০০ গ্রাম গাঁজাসহ আটক করা হয়। পরে পুলিশ বাদী হয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি, অস্ত্র আইন ও মাদকদ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার বাদি রিনা আক্তার বলেন, একদিন আগে আটক করে অভিযুক্তরা তাঁর স্বামীকে মারধর করে। তিনি বার বার থানায় গেলেও তারা তার স্বামীকে দেখায়নি। পরদিন রাতে তারা ৩টি মামলা দিয়ে রনিকে কারাগারে পাঠিয়েছে। এঘটনায় অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে তিনি মামলা করেছেন বলে দাবি করেন।

রায়পুর থানার ওসি ইয়াসিন ফারুক মজুমদার বলেন, অস্ত্র, মাদক ও ডাকাতি প্রস্তুতি মামলায় রনিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে তার স্ত্রীর আনা অভিযোগগুলোর বিষয়ে তাঁর জানা নেই। তাদের কাছ থেকে এসআই হানিফের টাকা চাওয়ার বিষয়টি তাঁর জানা নেই। এবিষয়ে আসামির স্ত্রী তার কাছে কোনো অভিযোগও করেননি বলে জানান ওসি।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭