ইনসাইডার এক্সক্লুসিভ

কী হচ্ছে মির্জা আব্বাসকে নিয়ে?


প্রকাশ: 29/12/2023


Thumbnail

বিএনপির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা মির্জা আব্বাস। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পর তাকে দলের দ্বিতীয় প্রধান ব্যক্তি হিসাবে মনে করা হয়। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকে বাদ দিলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং মির্জা আব্বাস দুজন মিলেই ঢাকা এবং বাংলাদেশের রাজনীতিতে নীতি নির্ধারকের ভূমিকা পালন করেন বলে অনেকে মনে করেন। 

একটা সময় লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়ার সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সেই দূরত্ব মিটে যায়।মির্জা আব্বাস এবং তার স্ত্রী দুজনই বিএনপির রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। ২৮ অক্টোবরের তাণ্ডবের পর প্রথমে মির্জা ফখরুল, তারপর মির্জা আব্বাস গ্রেপ্তার হন। মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তবে দুর্নীতির একটি মামলায় তার রায় তিন দফা পিছিয়েছে। এই রায় পেছানোর পেছনে কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ইঙ্গিত আছে কিনা এ বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন ভাবে আলোচনা হচ্ছে। 

বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, সরকার নির্বাচন পরবর্তী আন্দোলন এবং বিএনপির কার্যক্রমকে নিয়ন্ত্রণের জন্য মির্জা আব্বাসকে ব্যবহার করতে চাইছে। আর এ কারণেই মির্জা আব্বাসের মামলার রায় পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। একটি সূত্র  জানিয়েছে যে মির্জা আব্বাসের সঙ্গে সরকারের যোগাযোগ রয়েছে। বিশেষ করে মির্জা আব্বাস তার স্ত্রীর সঙ্গে সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার ব্যক্তিদের নিবিড় বৈঠকের খবর এখন বিএনপির নেতা কর্মীদের মুখে মুখে। তারা দাবি করছেন যে, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর বিএনপি ঘরে ফিরে যাবে এবং কোন আন্দোলনের কর্মসূচি তারা দেবে না। আস্তে আস্তে সরকারকে স্বাভাবিক বৈধতা দেবে এবং সরকারের সঙ্গে পরবর্তীতে সমঝোতার মাধ্যমে তারা স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করার প্রক্রিয়া শুরু করবে—এরকম একটি রাজনৈতিক পরিকল্পনা এখন টেবিলে। আর সেই রাজনৈতিক পরিকল্পনায় বিএনপির পক্ষ থেকে মূল নেতৃত্ব দেবেন ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, মির্জা আব্বাস। আর সে কারণেই তার মামলার রায় পিছিয়ে যাচ্ছে বলে একাধিক সূত্র মনে করে। 

মির্জা আব্বাসের সঙ্গে এর আগেও সরকারের গোপন এবং ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। দীর্ঘ ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকলেও মির্জা আব্বাসের ঢাকা ব্যাংক এবং তার পরিবহন ব্যবসার মোটেও ক্ষতি হয়নি। বরং সরকারের সঙ্গে নানা রকম গোপন সম্পর্কের মাধ্যমে তার এই সমস্ত ব্যবসার আরও বারবাড়ন্ত হয়েছে। আর এই কারণেই তারেক জিয়ার আস্থা হারিয়েছিলেন মির্জা আব্বাস। কিন্তু পরবর্তীতে মোটা অঙ্কের লেনদেনের বিনিময়ে তিনি বিএনপিতে ভালো মতোই
গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেন। 

বিএনপির একজন নেতা বলছেন, বিএনপির রাজনীতিতে আদর্শ বলে কোন কথা নেই। সেখানে যার কাছে টাকা আছে তিনি বড় নেতা। আর এই সূত্রে মির্জা আব্বাস দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন। তারেক জিয়াও তাকে মেনে নিয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যে মির্জা আব্বাস কি একা পারবেন বিএনপিকে সব আন্দোলন থেকে গুটিয়ে নিতে? সেই সক্ষমতা বা সেই দক্ষতা কি তার রয়েছে? 

এর আগে শাহজাহান ওমরকে দিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চেষ্টা করেছিল। শাহজাহান ওমরের সঙ্গে কারাগারেই সরকারের দর কষাকষি হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত শাহজাহান ওমর আওয়ামী লীগ ফিরিয়ে আনা হয়েছে। যেটাতে আওয়ামী লীগের লাভের চেয়ে ক্ষতি হয়েছে। এখন মির্জা আব্বাসের ক্ষেত্রে যে দেন দরবার, দরকষাকষি হচ্ছে তার ফলাফল কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেটাই দেখার বিষয়। 

তবে মির্জা আব্বাসের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, মির্জা আব্বাস কোনো অবস্থাতেই বিএনপি ত্যাগ করবেন না। তবে বিএনপিতে মির্জা ফখরুলের অবস্থান এক বছর আগেও অনেক দুর্বল ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়েছেন। আর এই কারণেই বিকল্প হিসাবে মির্জা আব্বাসকে নেতৃত্বে বসিয়ে অনুগত বিএনপি বানানোর প্রক্রিয়া কতটুকু সফল হবে সেটিও একটি বড় প্রশ্ন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭