ইনসাইড পলিটিক্স

প্রচারণায় ব্যস্ত নৌকা, আমেজ নেই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের


প্রকাশ: 30/12/2023


Thumbnail

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রচারণা জমে উঠলেও অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থীর তেমন আমেজ নেই। আওয়ামী লীগের শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীদের কারণে প্রচারে বিমুখ হয়েছেন অনেক প্রার্থী। ভোটের মূল আনুষ্ঠানিকতার আর সপ্তাহখানের বাকি থাকলেও আওয়ামী লীগ ছাড়াও অন্য প্রার্থীদের তেমন জোড়ালো প্রচারণা দেখা যাচ্ছে না।

নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা নিয়মিত প্রচারণা চালাচ্ছেন, নির্বাচনী এলাকাজুড়ে পোস্টার টাঙাচ্ছেনে, করছেন গণসংযোগ-মাইকিং। কিন্তু, আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বীরা নামমাত্র প্রচারণায় ব্যস্ত, অনেকস্থানে অনুপস্থিতও বটে। নির্ভরযোগ্য এবং গণমাধ্যমের প্রতিবেদনসূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

তথ্য ও দলীয় সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদন বলছে, আওয়ামী লীগের প্রার্থী থাকা ২৬৬ আসনের মধ্যে শতাধিক আসনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে। কারণ, এসব আসনে দলেরই নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। জাতীয় পার্টির জন্য আওয়ামী লীগের ছেড়ে দেওয়া ২৬টি আসনের মধ্যে ১৬টিতে এবং জোট শরিকদের ছেড়ে দেওয়া ৬টি আসনে উল্লেখযোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস রয়েছে।

মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের প্রতিদ্বন্দ্বী চারজন। তারা হলেন বাংলাদেশ কংগ্রেসের কাজী রেজাউল হোসেন, জাতীয় পার্টির সিরাজুস সায়েফিন, বিএনএফের কে এম মোতাসিম বিল্লাহ এবং তৃণমূল বিএনপির সঞ্জয় কুমার রায়। এর মধ্যে কেবল বাংলাদেশ কংগ্রেসের ডাব প্রতীকের কিছু পোস্টার ও প্রচার মাইক দেখা যায়।

পাবনা-৫ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম ফারুক পোস্টার টানিয়ে শহর প্রায় ভরে ফেলেছেন। প্রতিদিনই গণসংযোগ করছেন তিনি। কিন্তু তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রচারে দেখা যাচ্ছে না বললেই চলে। গোলাম ফারুক বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। কাগজে-কলমে তার প্রতিদ্বন্দ্বী চারজন। তারা হলেন জাতীয় পার্টির আবদুল কাদের খান, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মো. জাকির হোসেন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মো. আবু দাউদ ও তৃণমূল বিএনপির মো. আফজাল হোসেন।

নৌকার প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টির জাকির হোসেনের কিছু পোস্টার দেখা যায়। তৃণমূল বিএনপির আফজাল হোসেনের পোস্টার নেই। তবে তার পক্ষে ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশা দিয়ে এক ব্যক্তি শহরে ঘুরে ঘুরে মাইকিং করেন। বাকিরা পোস্টারে নেই, গণসংযোগে নেই, মাইকিংয়েও নেই।

স্থানীয় রাজনীতির খোঁজ রাখা ব্যক্তিরা বলছেন, পাবনা-৫ আসনে নৌকার প্রার্থীর জয় মোটামুটি নিশ্চিত। চার প্রতিদ্বন্দ্বীকে মূলত জামানত রক্ষার জন্য লড়তে হবে।

নির্বাচনে হবিগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সংসদ সদস্য মো. আবু জাহির। বিপরীতে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী আট প্রার্থীর কারও কারও প্রচার একেবারেই কম, কারও কারও কোনো প্রচারই নেই।

আবু জাহির ছাড়া এই আসনে জাতীয় পার্টির আবদুল মুনিম চৌধুরী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. আবদুল কাদির, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের মো. আদম আলী, জাকের পার্টির মো. আনছারুল হক, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মো. আবদুল ওয়াহেদ, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. নোমান হাছান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএমের মো. বদরুল আলম সিদ্দীকী ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. শাহীনুর রহমান প্রার্থী হয়েছেন। হবিগঞ্জ সদর নৌকার পোস্টারে ভরা। জাতীয় পার্টির কিছু পোস্টার দেখা যায়। অন্য দলের নেই।

যেসব আসনে নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রচার একেবারেই কম, তার একটি নেত্রকোনা-৪ (মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরী) আসন। এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব সাজ্জাদুল হাসান। তিনি বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। তাঁর বাবা প্রয়াত চিকিৎসক আখলাকুল হোসাইন গণপরিষদ সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। সাজ্জাদুলের তিন প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন জাতীয় পার্টির মো. লিয়াকত আলী খান, জাসদের মো. মুসফিকুর রহমান ও তৃণমূল বিএনপির মো. আল মামুন।

ঢাকা জেলা ও মহানগরে মোট আসন ২০টি। এর মধ্যে ১৪টিতেই তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে না বলে ধারণা স্থানীয় ভোটার ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। এর মধ্যে ঢাকা-৭ (নৌকার প্রার্থী সোলায়মান সেলিম), ৮ (আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম), ১০ (ফেরদৌস আহমেদ) ও ১৩ (জাহাঙ্গীর কবির নানক) আসন ঘুরে দেখা যায়, সেখানে ব্যাপক প্রচার চলছে। তবে প্রচার মূলত নৌকার।

চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগরের ১৬টি আসনের মধ্যে ছয়টিতে ভোটের তেমন কোনো উত্তাপ নেই। চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড ও নগর আংশিক), চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান), চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া), চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) ও চট্টগ্রাম-১২ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে নৌকার প্রার্থী অনেকটাই নির্ভার। চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরও (আনিসুল ইসলাম মাহমুদ) চিন্তা কম। তার পক্ষে আওয়ামী লীগের অনেকে কাজ করছেন।

চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর প্রতিদ্বন্দ্বী চারজন। তারা হলেন জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ সফিক-উল আলম চৌধুরী, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের স ম জাফর উল্লাহ, তৃণমূল বিএনপির মো. ইয়াহিয়া জিয়া চৌধুরী ও স্বতন্ত্র শফিউল আজম।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭