ইনসাইড পলিটিক্স

৭ জানুয়ারি: তিন অপেক্ষায় বিএনপি


প্রকাশ: 30/12/2023


Thumbnail

আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচন প্রতিহত এবং বর্জনের ডাক দিয়েছে বিএনপি। কিন্তু নির্বাচনের মাত্র এক সপ্তাহ আগে নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য যে ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করা উচিত ছিল তার ধারেকাছেও নেই বিএনপি। বরং আগামী দুইদিন বিএনপি লিফলেট বিতরণের মতো দায়সারা নামকাওয়াস্তের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এই ধরনের কর্মসূচি দিয়ে নির্বাচন ঠেকানো যাবে না বিএনপি নেতারাও তা স্বীকার করছেন। বরং বিএনপি নেতারা মনে করছেন যে তারা অন্য কিছুর অপেক্ষায় আছেন। কিছু অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটবে। আর তার ফলে ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হবে না। আর হলেও সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। 

বিএনপির বিভিন্ন নেতারা বলছেন, ৭ জানুয়ারি আসতে এখনও অনেক বাকি। এর মধ্যে অনেক কিছুই ঘটতে পারে। তবে কি ঘটবে সে সম্পর্কে বিএনপি নেতাদেরও কোন স্পষ্ট ধারণা আছে বলে মনে হয় না। তবে বিএনপি তিনটি ঘটনার অপেক্ষায় আছে। তাদের নেতাদের ধারণা এই ধরনের যে কোনো একটি ঘটনা ঘটলেই বিএনপির আন্দোলন চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করবে। 

যে তিনটি ঘটনার অপেক্ষায় আছে বিএনপি তার মধ্যে;

১. নির্বাচনে ভোটার কম উপস্থিতি এবং কারচুপি: বিএনপির অনেক নেতাই বিশ্বাস করেন যে, নির্বাচনে কারচুপির যে অভ্যাস গড়ে উঠেছে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এখন কোন অবস্থাতেই হারতে রাজি নয়। এই মানসিকতা থেকে তারা এবারের নির্বাচনেও শেষ পর্যন্ত বেরিয়ে আসতে পারবে না। নির্বাচনে কারচুপি হবেই। যে সমস্ত প্রভাবশালী নেতারা হারার শঙ্কায় থাকবেন তারা শেষ মুহূর্তে প্রশাসনকে ব্যবহার করে নির্বাচনে কারচুপি করবেন, ভোট কারচুপি করবেন, জোর করে জেতার চেষ্টা করবেন। এই রকম ঘটনা যখনই ঘটবে তখনই আন্তর্জাতিক মহল এই নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্যতার স্বীকৃতি দেবে না। আর সেই স্বীকৃতি যদি না দেওয়া হয় তাহলে এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ জয়ী হবে না। বরং জয়ী হবে বিএনপি। এরকম একটি অনিয়ম বা কম ভোটার উপস্থিতির নির্বাচন বিএনপির জন্য আশীর্বাদ হতে পারে বলে বিএনপি নেতারা মনে করছেন। বিএনপি সে রকম একটি ঘটনার অপেক্ষায় আছেন। 

২. আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ: বিএনপির কিছু কিছু নেতা মনে করেন যে, নির্বাচনের আগে নাটকীয়ভাবে কোন আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ হতে পারে। বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলো চুপচাপ আছেন। শেষ মুহূর্তে তারা নাটকীয় কোন পদক্ষেপ নেবে। ২২ জানুয়ারি ২০০৭ এর নির্বাচনের ঠিক আগের মুহূর্তেও এরকম একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এখনও সেরকম পরিস্থিতি হতে পারে বলে বিএনপির কোনো কোনো নেতা বলছেন। তারা মনে করেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চুপচাপ বসে থাকবে এমনটি হতে পারে না। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও নির্বাচন বানচালে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের কথা বলেছেন। এরকম কোন নাটকীয় ঘটনার অপেক্ষায় আছে বিএনপি। এ রকম ঘটনা ঘটলে সেটি বিএনপির জন্য বিজয় হিসেবে বিবেচিত হবে। 

৩. নির্বাচন পরবর্তী আন্তর্জাতিক চাপ, নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদি: বিএনপি মনে করছেন যে, শেষ পর্যন্ত একটি নির্বাচন হয়তো আওয়ামী লীগ করতে পারবে। তবে সেই নির্বাচন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাবে না যায়। নির্বাচনের পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বাংলাদেশের ওপর নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেবে না। তখন আওয়ামী লীগ সরকার একটি অবৈধ সরকারে পরিণত হবে বলে বিএনপি নেতাদের ধারণা এবং সেটি হবে বিএনপির আন্দোলনের সবচেয়ে বড় অর্জন। 

এই তিন অপেক্ষায় বিএনপি রয়েছে। তাদের নিজেদের শক্তিতে নয়, অন্য কোন ঘটনা ঘটলে, সেই ঘটনার ইতিবাচক ফলাফল তাদের ঘরে আসবে। অর্থাৎ অন্য কোন ঘটনার বেনিফিশিয়ারি হবে বিএনপি। এ রকম অপেক্ষায় এখন বিএনপির রাজনীতি।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭