ইনসাইড গ্রাউন্ড

ইউরোপের ফুটবল ক্লাবগুলো জার্সি থেকে কত আয় করে?


প্রকাশ: 31/12/2023


Thumbnail

বিশ্বব্যাপী দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়েই চলেছে। তাই পাল্লা দিয়ে সবকিছুর দামই বাড়ছে। তাইতো ইউরোপের ক্লাবগুলো খরচ কমাতে চাইলেও উল্টো প্রতি বছরই খরচ বাড়ে। ক্লাবগুলো খরচ করে কিন্তু এই খরচ উঠে লাভ হয় কোন পদ্ধতিতে? ক্লাবগুলোর আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস টেলিভিশন সম্প্রচারস্বত্ব। এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে জার্সি চুক্তি ক্লাবগুলোকে এনে দেয় কোটি কোটি ইউরো।

জার্সি চুক্তি থেকে আয়ে এগিয়ে রয়েছে স্পেনের দুই পরাশক্তি রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা। রিয়াল মাদ্রিদ এ খাত থেকে ১৯ কোটি ইউরো ও বার্সেলোনা ১৮ কোটি ৩০ লাখ ইউরো আয় করছে। তিনে রয়েছে ফরাসি ক্লাব প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি)। 

একটি ক্লাব জার্সি চুক্তি থেকে কত আয় করবে তা নির্ভর করছে তারা এটিকে বাণিজ্যিকভাবে সর্বোচ্চ কীভাবে কাজে লাগাতে পারবে, তার ওপর। স্পেনের লা লিগায় যেমন জার্সিতে সর্বোচ্চ পাঁচটি বিজ্ঞাপনের জায়গা নেয়া যাবে। আর ইতালির সিরি-আ লিগে চারটি জায়গা নেয়ার সুযোগ রয়েছে। কোনো ক্লাব যদি এককভাবে জার্সিতে জায়গা পেতে চায় তবে একক স্পন্সর হিসেবে তাদের খরচও বেশি হবে। 

রেকর্ড ১৪ বারের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদের জার্সির সম্মুখভাগে বড় করে লেখা থাকে ফ্লাই এমিরেটস। এজন্য তারা আমিরাতি বিমান কোম্পানির কাছ থেকে বছরে নেয় ৭ কোটি ইউরো। এছাড়া বুকের ওপরের দিকের কোনায় অ্যাডিডাসের লোগো ও বামদিকের ওপরের কোনায় থাকে ক্লাবের লোগো। 

এখানে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় পরিষ্কার করা প্রয়োজন। যেসব টেকনিক্যাল স্পন্সর (অ্যাডিডাস, নাইকি, পুমা) খেলোয়াড়দের জার্সিসহ কিট তৈরি করে থাকে বড় ক্লাবগুলো তাদের লোগো ব্যবহার করেও বিশাল অংক আয় করে থাকে। এখানে ইউরোপের অন্য সব ক্লাবকে পেছনে ফেলে স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা। টেকনিক্যাল স্পন্সরের কাছ থেকে আয়ে রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সার সমান পায় শুধু ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। বিশ্বব্যাপী এ তিন ক্লাবের জার্সিই বেশি বিক্রি হয়। জার্সি বিক্রিতে ম্যানইউর কাছাকাছি থাকে রিয়াল ও বার্সা।  

এখন বিশ্বব্যাপী অনেক ক্লাব তাদের মালিকানার সঙ্গে সম্পৃক্ত কোম্পানির কাছ থেকে বিজ্ঞাপন বাবদ আয় করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, ইতালিতে জুভেন্টাস মালিক আন্দ্রেয়া অ্যাগনেলিসের কোম্পানি জিপ তার মালিকানাধীন ক্লাবের অন্যতম স্পন্সর। তেমনি ফিওরেন্টিনায় মিডিয়াকম ও সাসুওলোতে মাপেই। এটা ততক্ষণ পর্যন্ত বৈধ যতক্ষণ পর্যন্ত না ক্লাবের আয়ের একটা নির্দিষ্ট হারকে অতিক্রম করে।

ফ্রান্সের ক্লাব পিএসজির মালিক কাতার। যদিও কাতার ইনভেস্টমেন্ট অথরিটির (কিউএসআই) মাধ্যমে ক্লাবটি পরিচালনা করে থাকে তেলসমৃদ্ধ দেশটি। ক্লাবটির পৃষ্ঠপোষক আবার কাতার এয়ারওয়েজ, যার মালিকও কাতার সরকার। কাতার এয়ারওয়েজ ছাড়াও নাইকির সঙ্গে আকর্ষণীয় চুক্তি রয়েছে পিএসজির। নাইকি তাদের বছরে দেয় ৮ কোটি ইউরো। এছাড়া এয়ার জর্ডানের সঙ্গে তাদের চুক্তি রয়েছে। বছরে ১ কোটি ৮০ লাখ ইউরো প্রদান করে ২০২২ সালে পিএসজির অন্যতম স্পন্সর হয়েছে গোট। যদিও লিওনেল মেসির আগমনের কারণেই চুক্তিটি করেছিল গোট। এ বছর গ্রীষ্মে মেসি চলে গেছেন ইন্টার মিয়ামিতে। ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার নাম লেখান সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলালে। 

অনেক নাটকীয়তার পর এখনো ক্লাবটিতে রয়ে গেছেন ফরাসি সুপারস্টার কিলিয়ান এমবাপ্পে। অবশ্য চলতি গ্রীষ্মে তাকে বিক্রি করতে পারলে প্রায় ২০ কোটি ডলার আয়ের সুযোগ ছিল ক্লাবটির। মেসি ও নেইমারের পর পরের মৌসুমে এমবাপ্পেও যদি চলে যান, তবে পিএসজির আয়ে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। 

আগামী মৌসুমে ম্যানইউর স্পন্সর হিসেবে আর থাকছে না টিম ভিউয়ার। তাদের জায়গা নেবে সিঙ্গাপুরভিত্তিক কোম্পানি কোয়ালকম টেকনোলজিস। এটা হবে রেড ডেভিলদের জন্য ঐতিহাসিক এক চুক্তি, যা ইংলিশ জায়ান্টদের মোট আয়কে নিয়ে যাবে ১৭ কোটি ইউরোয়, যদিও ২০১৩ সালের পর তারা ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জিততে পারেনি। তখন জার্সির সম্মুখভাগের বিজ্ঞাপন থেকে আয়ে তাদের ওপরে থাকবে শুধুই ম্যানচেস্টার সিটি। যদিও সিটির স্পন্সর ইতিহাদ এয়ারওয়েজ আবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রীয় কোম্পানি, ক্লাবটির মালিকানাও আমিরাতি।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭