কালার ইনসাইড

বিশ্বে নতুন বছর উদযাপনের প্রস্তুতি, বাংলাদেশে ডিএমপির সতর্কতা


প্রকাশ: 31/12/2023


Thumbnail

বছরের সকল দুঃখ-বেদনা ভুলে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নতুন আশা নিয়ে ২০২৪ সালকে স্বাগত জানাবে পুরো বিশ্ব। পৃথিবীর প্রতিটি দেশেই নিউ ইয়ার কিংবা ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনে সংস্কৃতি বরাবরই চালু আছে। ইতোমধ্যেই বিশ্বব্যাসী নানান আয়োজনের মধ্য দিয়ে ২০২৪ সালকে বরণ করবে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনকালে মানুষের নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার নির্দেশনা দিয়েছে ডিএমপি।

পৃথিবীর নানা প্রান্তের বিভিন্ন সংস্কৃতি ও জাতিগোষ্ঠির লোকজন তাদের নিজস্ব রঙে ও ঢঙে নববর্ষ পালন করে থাকেন। বছরের প্রথম দিনটিকে নববর্ষ হিসেবে পালনের রীতি প্রায় চার হাজার বছর যাবত মানব সভ্যতার মাঝে চালু রয়েছে। আজকালকার দিনে নিউ ইয়ার উদযাপনের শুরুটা হয় গ্রেগোরিয়ান ক্যালেন্ডারের শেষ দিন ৩১শে ডিসেম্বর সন্ধ্যায়, যা বিশ্বব্যাপী নিউ ইয়ার'স ইভ নামে পরিচিত। এ উৎসব আয়োজন চলতে থাকে বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ পহেলা জানুয়ারির সারাদিন জুড়ে।

নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ২০২৪ সালকে স্বাগত জানাতে বরাবরের মতোই সেজে উঠেছে বিশ্বের নামকরা বর্ষবরণ কেন্দ্রগুলো। এরইমধ্যে প্রস্ততি শেষ হয়েছে সিডনি হারবার, টাইমস স্কয়ারের মতো আলোচিত বর্ষবরণ ভেন্যুগুলোয়। ভৌগোলিক কারণে সবার আগে ২০২৪ সালকে স্বাগত জানাবে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। ২০২৪ সালকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত লাতিন দেশগুলোও। দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় প্রার্থনার পাশাপাশি শুরু হয়ে গেছে কার্নিভ্যাল। আলোকসজ্জায় সাজানো হলেও রাশিয়ার শহরগুলোয় এবছরও হবে না আতশবাজি। উদযাপন নির্বিঘ্ন করতে ইউরোপের দেশগুলোয় সর্বোচ্চ নজর দেয়া হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থায়। এছাড়াও দুবাইয়ের বিভিন্ন এলাকার ৩২টি জায়গায় জমকালো আতশবাজির আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও চীন, ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স, কানাডা, রাশিয়াসহ ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে থার্টিফাস্ট নাইট উদযাপন ও নতুন বছর বরণে চলছে নানা আয়োজন।

এদিকে, গত শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নতুন বছর উদযাপন নিয়ে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর বিবৃতি প্রকাশ করেছ। সেখানে জানানো হয়, নববর্ষ মানেই উৎসবমুখর একটি দিন। প্রতিবছর ৩১ ডিসেম্বর রাত ১২টা এক মিনিট থেকেই শুরু হয় নতুন বছর উদযাপনের উন্মাদনা। মুহুর্মু শব্দ করে আকাশে ছড়িয়ে পড়ে আতশবাজির আলোকছটা। প্রতিবছরই ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রাতের বেলা আতশবাজি ও ফানুস পোড়ানো হয়। ফলশ্রুতিতে বছরের প্রথম দিন শুরু হয় অস্বাস্থ্যকর বায়ু সেবন করে এবং সরব উপস্থিতিতে শব্দ দূষণের মত নীরব ঘাতকে সঙ্গে নিয়ে। এই আকস্মিক বায়ু ও শব্দ দূষণ মানুষ, পশুপাখি ও পরিবেশ প্রতিবেশ উপর উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) রাজধানিবাসির উদ্দেশ্যে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনকালে মানুষের নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় ৩১ ডিসেম্বর রাজধানীর কয়েকটি সড়কে যান চলাচলে ট্রাফিক নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনে (থার্টিফার্স্টে) ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় নগরবাসী স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিভিন্ন আনন্দ উৎসবে অংশগ্রহণ করবে। তবে এ আনন্দ উদ্যাপনের নামে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি নিজস্ব সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ও ঐতিহ্যবিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়ে থাকে। 

ডিএমপি খবর সূত্র জানায়, ইংরেজি নববর্ষের প্রাক্কালে রবিবার (৩১ ডিসেম্বর)  রাতে ঢাকার নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছে। ঢাকা মহানগরীতে নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ১২ টি নির্দেশনা মেনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে সহযোগিতা করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হয়।

নিউ ইয়ার সেলিব্রেশনের পিছনের ইতিহাসটা ঠিক কেমন অথবা কীভাবেই পেল পহেলা জানুয়ারি বছরের প্রথম দিনের মর্যাদা, বিশ্বব্যাপী দিনটিকে কেন এত সমাদরের সঙ্গে বরণ করে নেয়া হয়? 

ইতিহাসবিদদের মতে, নিউ ইয়ার সেলিব্রেশনের প্রথম রেকর্ড পাওয়া যায় খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ সহস্রাব্দের কাছাকাছি সময়ে তৎকালীন ব্যাবিলনে। সে উৎসব ব্যাবলিনীয়রা পালন করত বসন্তে, মার্চের শেষভাগে যখন বিষুব অঞ্চলে দিন ও রাত সমান দৈর্ঘ্যে উপনীত হতো। দিনটি তারা স্মরণীয় করে রাখতো 'আকিতু' নামে জাঁকজমকপূর্ণ এক ধর্মীয় উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে। ব্যাবিলনীয়নদের পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী, আকাশের দেবতা মারদুক এক ভীষণ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে সমুদ্রের পিশাচিনী তিয়ামাতকে পরাজিত করেন। ব্যাবিলনীয়দের আকিতু উৎসব ছিল সে বিজয়গাথাকে স্মরণ করার উৎসব। এটিকেই তারা নববর্ষ হিসেবে পালন করত। উৎসবটির রাজনৈতিক তাৎপর্যও কম ছিল না। এদিন নতুন ব্যাবিলনিয় রাজাকে মুকুট পরিয়ে দেয়া হতো, অথবা পুরাতন রাজার শাসন দন্ডকে প্রতীকিভাবে নবায়ন করা হতো।

২৫ ডিসেম্বর বড়দিন উপলক্ষ্যে বিশ্বের বড় বড় শহরগুলো আগেই সেজে ওঠে এবং ৩১ ডিসেম্বর সেই সাজ আরও বর্ণিল জমকালো হয়ে ওঠে। ৩১ ডিসেম্বর রাত ১২ টা ১ মিনিটেই শুরু হয়ে যায় ইংরেজি বছরকে স্বাগত জানানোর উৎসব। রঙিন আলো এবং চোখ ধাঁধানো আতশবাজির আলোয় বরণ করা হয় নতুন বছরকে। জানা যায়, বছর বিদায়ের রাতটির উৎসব পরিচিত নিউ ইয়ার ইভ নামে। নববর্ষ পালনের ক্ষেত্রে একেক দেশ একেক রীতি পালন করে । যেসব দেশে গ্রেগোরিয়ান ক্যালেন্ডার ব্যবহার করা হয়, তারা সাধারণত ১ জানুয়ারিতে নববর্ষ পালন করে। সেই থেকেই মানব সমাজে নতুন বছর উদযাপনের মধ্য দিয়ে সারা বিশ্ব আলোকসজ্জিত হয়ে থাকে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭