ইনসাইড বাংলাদেশ

নীলফামারী-২: ভোটের মাঠে শক্ত অবস্থানে দুই হেভিওয়েট প্রার্থী


প্রকাশ: 04/01/2024


Thumbnail

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী- ২(সদর) আসনে জমে উঠেছে ভোটের লড়াই। আসনটিতে এবার তিন দলের চারজন প্রার্থী থাকলেও ভোটের লড়াই হবে দ্বিমুখী। ভোটের মাঠে নিজেদের শক্ত অবস্থান জানান দিচ্ছেন হেভিওয়েট প্রার্থী চার বারের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর এবং জেলা আওয়ামী লীগের এক সময়ের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন। আসনটিতে জাতীয় পার্টির হয়ে শাহজাহান আলী চৌধুরী প্রার্থী হলেও ভোটের মাঠে নেই তার শক্ত অবস্থান। এছাড়াও আসনটিতে বাংলাদেশ কংগ্রেসের হয়ে মোরছালিন ইসলাম নামের এক যুবক প্রার্থী হলেও ভোটের মাঠে নেই সে।

নীলফামারী সদরের ১৫টি ইউনিয়ন আর একটি প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসন নীলফামারী-০২ (সদর)। ১৯৭৩ প্রথম এবং ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে জয় পায় আওয়ামী লীগ। আসনটি আওয়ামী লীগের হলেও ১৯৮৬ তৃতীয় এবং ১৯৮৮ সালে চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে এটি দখল করে নেয় জাতীয় পার্টি। এরপর ১৯৯১ সালে সিপিবির সাথে জোটবদ্ধ হয়ে নৌকা প্রতীক দিয়ে আওয়ামী লীগ আসনটি উদ্ধার করলেও ১৯৯৬ সালে ১৫ ফ্রেবুয়ারী ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে এটি দখল করে বিএনপি এবং ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম সংসদ নির্বাচনে এটি চলে যায় জাতীয় পার্টির দখলে।

২০০১ সালে অষ্টম সংসদ নির্বাচনে বাকের ভাই খ্যাত দেশ বরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূরকে প্রার্থীতা দিয়ে আসনটি উদ্ধার করে আওয়ামী লীগ। সেই বার প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। ২০১৪ সালের বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচন বর্জন করায় বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও ২০০১, ২০০৮ এবং ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোটের প্রার্থীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হতে হয়েছেন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী আসাদুজ্জামান নূরকে। এবারও তার ওপরেই আস্থা রেখেছে আওয়ামী লীগ।

এবারের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করলেও প্রার্থীতা দিয়েছে জাতীয় পার্টি ও বাংলাদেশ কংগ্রেস। তবে ভোটের মাঠে এই দুই প্রার্থীর শক্ত অবস্থান না থাকলেও আসাদুজ্জামান নূরের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়ে উঠেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন। জয়নাল আবেদীন আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ১৯৯৬ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সামান্য ভোটে পরাজীত হয় জাতীয় পার্টির প্রার্থী আহসান আহমেদের কাছে। এরপর ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আসাদুজ্জামান নূরের কাছে। এবার জয়নাল আবেদীন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ট্রাক প্রতীক নিয়ে নৌকা প্রতীকের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় করছেন। তাই এবার ভোটের মাঠে আসাদুজ্জামান নূরের বিপরীতে তিনিই একমাত্র হেভিওয়েট প্রার্থী।

ভোটাররা বলছেন, এবার নির্বাচনের ভোটের তিব্র লড়াই হবে আসাদুজ্জামান নূরের নৌকা প্রতীকের সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীনের ট্রাক প্রতীকের। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে কে জয়ী হবেন তা এখনই নিশ্চিত করে বলার কোন সুযোগ নেই। তবেই যেই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হোক না কেন শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং এক জেলার সাথে আরেক জেলার যোগাযোগ নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি করণে জোর দেওয়ার দাবি জানান সাধারণ ভোটারা।

ভোটারদের মন জয় করতে ভোটাদের দ্বারে গিয়ে তুলে ধরছেন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আর বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে চাইছেন নিজের ট্রাক প্রতীকে ভোট। সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ ভোট হলে ভোটারদের রায় তার পক্ষে যাবে বলে দাবি করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন। 

তিনি বলেন,‘আমরা শুধু একটি জিনিসে মনে করি। নীলফামারীর সর্বস্তরের মানুষ আজকে জেগেছে। পরিবর্তন চায়। আগামী ৭ তারিখের নির্বাচন দিয়ে এদেরকে পরাজিত করবে। অশুভ শক্তি পরাজিত হবে। ভালো মানুষের হাতে ক্ষমতা আসবে এবং নীলফামারীতে আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি নীলফামারীকে একটি সুন্দর মডেল নীলফামারী উপহার দিতে পারব।’

এদিকে আসাদুজ্জামান নূর পরিচ্ছন্ন ইমেজধারী। তার হাত ধরে ঘটেছে জেলার বেশ উন্নয়ন। নিজের ইমেজ ধরে রাখতে এবং নৌকা প্রতীকের জয় নিশ্চিত করতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তিনি। অভিযোগের বিচারের ভার ছেড়ে দিয়েছেন সাধারণ ভোটাদের মাঝে। সেই সাথে ভোটারদের কাছে গিয়ে দিচ্ছেন নতুন নতুন প্রতিশ্রুতি। 

তিনি বলেন, ‘আমরা উন্নয়ন করেছি কি করিনি, আমার সেখানে কোনো ভূমিকা ছিল কি ছিল না এটা বিচার করবে আমার এই নির্বাচনী এলাকার জনগণ। আমি বিচারের দায়ভার তাদের হাতেই দিতে চাই। আগামী ৭ তারিখের নির্বাচনে জনগণ তাদের রায় প্রদান করবে।’


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭