ইনসাইড বাংলাদেশ

নির্বাচনের পরে রাজনীতি কোন পথে?


প্রকাশ: 06/01/2024


Thumbnail

আগামীকাল জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রাজনৈতিক বিভক্তি এবং বিভাজনের মুখে এই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিএনপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ২৮ টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। সকল প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় নির্বাচন কতটা উৎসবমুখর হবে সেই চিন্তা যেমন আছে অন্যদিকে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং গণতন্ত্র সুরক্ষার জন্য এই নির্বাচনে কোনো বিকল্প নেই। 

প্রশ্ন উঠেছে যে নির্বাচনের পরে কী হবে? বিরোধীদল চেষ্টা করেছিল যেন শেষ পর্যন্ত নির্বাচন না হয়, একটি অরাজনৈতিক শক্তি ক্ষমতা দখল করে, আন্তর্জাতিক মহল যেন নির্বাচন বন্ধে সরাসরি হস্তক্ষেপ করে। কিন্তু তেমন কিছু ঘটেনি। বরং সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে সরকার একটি নির্বাচন আয়োজন করতে সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। এরকম বাস্তবতায় নির্বাচনের পরে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোনপথে মোড় নেবে সেটি এখন আলোচনার বিষয়।

বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নির্বাচনের পরও বিএনপি তাদের আন্দোলনের কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে পারে। ইতোমধ্যে বিএনপি অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। কাজেই ধারণা করা হচ্ছে যে নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পরই বিএনপি তার আন্দোলনের কর্মসূচি থেকে সরে আসবে না। বরং এই আন্দোলনের কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা নতুন নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। 

একাধিক সূত্র বলছে যে নির্বাচনের পরে বর্তমান সরকারকে অবৈধ ঘোষণা করে একটি প্রবাসী সরকার গঠন করা বা একটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রবাসী সরকার গঠন করার একটি পরিকল্পনা বিএনপির মধ্যে আছে। সেই পরিকল্পনা নিয়ে তারা কাজ করছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যেন সরকার স্বীকৃতি না পায়, এই সরকার যেন বিভিন্ন দেশের কাছে অবৈধ এবং অগ্রহণযোগ্য সরকার হিসেবে পরিচিতি পায় সেটার জন্য বিএনপি চেষ্টা করছে। তবে সংবিধান সম্মত ভাবে একটি নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর সরকার স্বীকৃত সংকটে ভুগছে এমনটা ভাবার কোন কারণ নেই। কাজেই বিএনপির এই ধরনের উদ্যোগ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে সেটা বলাই বাহুল্য। তবে নির্বাচনের আগে বিএনপি সারা দেশে যেভাবে সন্ত্রাস, সহিংসতা এবং নাশকতা করেছে সেই ধারা তারা যদি অব্যাহত রাখে তাহলে দেশে একটি অস্থিতিশীল এবং অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এক্ষেত্রে সরকারের সামনে দুটি বিকল্প রয়েছে। 

প্রথমত, সরকার কঠোরভাবে এই ধরনের সন্ত্রাস এবং অপরাজনীতি দমন করতে পারে। নতুন সরকারের হাতে পুরোপুরি ম্যান্ডেড থাকবে এবং এই ম্যান্ডেড অনুযায়ী তারা যেকোনো বিশৃঙ্খল তৎপরতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সক্ষম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আবার কোন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছে, সরকার হয়তো এই নির্বাচনের পরে বিভক্তি এবং রাজনৈতিক কোন্দলের বীজ উপড়ে ফেলে জাতীয় ঐক্যমতের ডাক দেবে। নির্বাচনের আগে যেটি সম্ভব হয়নি নির্বাচনের পরে তেমন একটি আবহ সৃষ্টির জন্য সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করবে। রাজনৈতিক সংলাপ এবং সমঝোতার মাধ্যমে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার একটা উদাত্ত আহ্বান জানাতে পারে নতুন সরকার। 

এছাড়াও যে সমস্ত বিএনপির নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদেরকে আস্তে আস্তে মুক্তি দিয়ে একটি স্বাভাবিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া চালু করারও উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে সরকার। তবে রাজনৈতিক সংঘাত সহিংসতা নির্বাচনের পরে বেশিদিন থাকুক এটা কেউই চায় না। জনগণ স্বাভাবিক জীবন চায়। আর আগামীকাল নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন যে সরকার গঠিত হবে সেই সরকার রাজনীতির বিশৃঙ্খল পরিবেশ, সন্ত্রাস, অগ্নিসংযোগ প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে দেশকে একটি ঐক্যমতে ধারায় নিয়ে আসার চেষ্টা করবে বলেই সাধারণ মানুষ প্রত্যাশা করে। নির্বাচনের পরে রাজনৈতিক গতি প্রবাহ কীভাবে এগোয় তার ওপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের অগ্রগতি এবং উন্নয়ন অভিযাত্রার পরবর্তী পদক্ষেপগুলো।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭