ইনসাইড পলিটিক্স

বিরোধী দলের মর্যাদা হারানো জাতীয় পার্টি কী করবে?


প্রকাশ: 07/01/2024


Thumbnail

এবার নির্বাচনে সবচেয়ে বিপর্যস্ত দলটির নাম জাতীয় পার্টি। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের ৩২ টি আসন ছিল। এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এখন পর্যন্ত ১১৬ টি আসনের ফলাফলে জাতীয় পার্টি মাত্র ৮ টি আসনে বিজয়ী হয়েছে।

জাতীয় পার্টি গতবারের যে ৩২ টি আসন তা ধরে রাখতে পারবে না মোটামুটি নিশ্চিত। জাতীয় পার্টির চেয়ে বেশি পেয়েছে এখন পর্যন্ত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। ১১৬ টি আসনের ফলাফলে দেখা যায় যে, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৩১ টি আসনে বিজয়ী হয়েছে। 

জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের মর্যাদা পেতে অন্তত পক্ষে ৩০ টি আসন পেতে হয়। জাতীয় পার্টির সেই ৩০ টি আসন এবারের নির্বাচনে পাবে এমনটি মনে করার কোন কারণ নেই। অন্তত ভোটের যে ধারা চলছে তাতে জাতীয় পার্টি ১০টি আসন শেষ পর্যন্ত পেলে বর্তে যাবে অর্থাৎ সংসদে একটি রাজনৈতিক জোট গঠনের জন্য বা বিরোধী দল হিসেবে নিজেদের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য যে পরিমাণ আসন দরকার, সেই পরিমাণ আসন তারা পাবে না। এ ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দলের মর্যাদা পেতে হয় স্বতন্ত্রদের ওপর নির্ভর করতে হবে অথবা বিরোধী দলের মর্যাদা হারাতে হবে। কিন্তু স্বতন্ত্র যারা বিজয়ী হয়েছেন, তারা অধিকাংশই আওয়ামী লীগ ঘরনার। তারা জাতীয় পার্টিকে সমর্থন দেবে এমনটা ভাবার কোন কারণ নেই। তাছাড়া এবার নির্বাচনে যারা স্বতন্ত্র বিজয়ী হয়েছে তাদের অনেকেই জাতীয় পার্টিকে পরাজিত করেই বিজয়ী হয়েছেন। এরকম পরিস্থিতিতে জাতীয় পার্টি কী করবে? 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে জাতীয় পার্টির মধ্যে নির্বাচনের পর দুটি মতামত রয়েছে। একটি অংশ তারা নির্বাচন থেকে সরে যাওয়া, সংসদে না যাওয়া, নির্বাচন বর্জনের বিষয়টি বিবেচনার জন্য চাপ দিচ্ছে। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির মহাসচিব, জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও রুহুল আমিন হাওলাদারের মতো যারা বিজয়ী হয়েছেন তারা সংসদে থাকার পক্ষে মতামত দিয়েছেন। এরকম একটি বাস্তবতায় জাতীয় পার্টি নির্বাচনের পরবর্তীতে একটা নতুন সঙ্কটে পরিণত হতে যাচ্ছে।

নির্বাচনের আগেও জাতীয় পার্টি নির্বাচন করবে কি করবে না- এ নিয়ে এক ধরনের রহস্য ছিল। জাতীয় পার্টির মধ্যে এ নিয়ে বিরোধও ছিল। শেষ মুহূর্তে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে যায়। কিন্তু এই নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ভরাডুবির পর জাতীয় পার্টি কি আওয়ামী লীগের সঙ্গে গাটছাড়া বেঁচে থাকবে? নাকি আওয়ামী লীগের কাছ থেকে চলে যাবে, নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করবে- সেটিই এখন দেখার বিষয়। 

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছে যে নির্বাচন হয়ে গেছে, এখন জাতীয় পার্টি নির্বাচনে থাকা না থাকা, ভোট বর্জনের সঙ্গে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার কোন সম্পর্ক নেই। জাতীয় পার্টি যদি এই ভোট বর্জন করে বা নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে তাহলে পরে ক্ষতিগ্রস্ত হবে জাতীয় পার্টি। অস্তিত্ব সঙ্কটে থাকা দলটি হয়তো কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে একটি ভুল রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭