প্রকাশ: 08/01/2024
সাকিবের ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষ প্রান্তে। তবুও তিনি জনপ্রিয় দেশে-বিদেশে।
সাকিব আল হাসান যেন এই সুযোগটাই কাজে লাগালেন। নামের পাশে ‘সাবেক ক্রিকেটার’ তকমা যুক্ত
হওয়ার আগেই রাজনীতির মাঠে পা রাখলেন তিনি। সেই ধারাবাহিকতায় সাংসদ হওয়ার দিকেও আপাতত
চোখ রাখছেন টাইগার এ অলরাউন্ডার। সাকিব আল হাসান এখন ক্রিকেটারের পাশাপাশি রাজনীতিবিদও।
প্রশ্ন হচ্ছে, নতুন এ পরিচয়ের আগমনে গত ১৭ বছরের পরিচয় কি তবে বিলুপ্ত হওয়ার পথে? নাকি
অলরাউন্ডার সাকিব যেভাবে সব সামলে ছুটে যান, এবারও ঠিক সেভাবেই ছুটে বেড়াবেন?
২০২৩ বিশ্বকাপেই বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। বিশ্বকাপের
পর ইনজুরি, নির্বাচনী ব্যস্ততায় ক্রিকেট থেকে খানিকটা দূরে তিনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ
নির্বাচনে মাগুরা-১ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। প্রথমবার নির্বাচনে অংশ নিয়ে মাগুরা-১
আসর থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে ১,৮৫,৩৮৮ ভোট পেয়েছেন তিনি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী
কাজী রেজাউল হোসেন ডাব প্রতীক নিয়ে ৫,৯৭৩ ভোট পেয়েছেন। এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪,০০,৪৮৫
জন।
বাংলাদেশ এতদিন ক্রিকেটার সাকিবকে দেখেছে। এবার দেখছে একজন সাংসদ হিসেবেও।
জনপ্রতিনিধির এই ভারিক্কি, দায়ভার কিছুতো বর্তাবেই সাকিবের কাঁধে। প্রশ্নটা
তাই অনুমেয়ই বটে, সাকিব ক্রিকেট আর রাজনীতিকে এক সূত্রে গাঁথতে পারবেন তো?
এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে মাশরাফির কথাই সবার আগে আসবে। ২০১৯ সালে নির্বাচন
করেছেন। সে বছরই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অধিনায়কত্ব করেছেন। এখন পর্যন্ত পেশাদার ক্রিকেট
খেলেও যাচ্ছেন। কিন্তু মূল বাস্তবতাটা হলো, এমপি হওয়ার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মাশরাফি
ছিলেন ‘না থাকার’ মতোই। বিশ্বকাপ শেষের পর একটি মাত্রই সিরিজ খেলেছেন। এরপরই বাংলাদেশের
জার্সি গায়ে অঘোষিত বিদায় হয়ে গেছে সাবেক অধিনায়কের।
মাশরাফি এখন পর্যন্ত ঘরোয়া ক্রিকেট খেলছেন। বিপিএলে অধিনায়কত্ব করছেন। খেলছেন
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও। কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেট আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, দুটোই একটি অপরটির
চেয়ে বেশ আলাদা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পারফর্ম করার চাপ যতটা মাশরাফিকে সইতে হয়েছে,
তার সামান্য অংশও অনুভূত হয়নি ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার সময়ে। সাকিবের ক্ষেত্রেও এই ব্যাপারটা
একই রকম। সাকিবের মতো ক্রিকেটারের ঘরোয়া ক্রিকেট চালিয়ে যেতে না আছে বাঁধা, কিংবা না
আছে কোনো প্রতিবন্ধকতা।
কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মানেই হোম ও অ্যাওয়ে কন্ডিশনে দৌঁড়াদৌড়ি, আইসিসির
টুর্নামেন্ট, এশিয়া কাপ। সব মিলিয়ে ব্যস্ততাটা অনেক। চলতি বছরের কথাটাই ধরা যাক। এই
এক বছরেই ১৪ টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। তাছাড়া বছরের মাঝামাঝি সময়ে আছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের
আসর। আর এ বছরেই এমপি হিসেবে রাজনীতির ময়দানে অভিষেক ঘটতে যাচ্ছে সাকিবের।
সাংসদ হওয়ার পর মাশরাফিকে খুব সামান্যই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে নিয়ে ভাবতে
হয়েছে। তবে বিসিবির ভাষ্যমতে, এখনও বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব। আর এখানেই মূলত প্রশ্নের
উদয়। ক্যারিয়ারের গোধুলী লগ্নে থাকলেও, বাংলাদেশ দলে সাকিবের অপরিহার্যতা রয়েছে। জাতীয়
দলের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় হয়তো সাকিব থাকবেন না। তবে আগামী দুই বছরে বাংলাদেশের
সামনে অপেক্ষা করছে কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট। আর সেই সব আসরে বাংলাদেশের অন্যতম
সারথি হওয়ার পথেই থাকছেন সাকিব। কিন্তু রাজনৈতিক ব্যস্ততায় ২২ গজে সাকিব নিজের কতটা
দিতে পারবেন সেটিই এখন প্রশ্নের বিষয়।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭