ইনসাইড বাংলাদেশ

আওয়ামী লীগের বিজয়, বাধা মোকাবিলার সময়


প্রকাশ: 08/01/2024


Thumbnail

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে চালিত সংগঠন আওয়ামী লীগ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিয়ে টানা চতুর্থবার জয়লাভ করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, সংগঠনের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শক্ত হাতে নৌকার হাল ধরেছেন বলেই এমনটি সম্ভব হয়েছে। 

গতকাল রোববার (৭ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বেসরকারি ফলে ২৯৮টি আসনের মধ্যে ২২৭টিতেই নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬০টি আসনে বিজয়ী হয়েছেন। প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকা জাতীয় পার্টি ১০ আসনে জয়লাভ করেছে। বিএনপির সমমনা দল কল্যাণ পার্টি জিতেছে একটি আসনে।

বিশ্লেষকগণ বলছেন, বাংলাদেশের উত্থানে আওয়ামী লীগই নেতৃত্বদানকারী। দলটি এখনো সর্বেসর্বা। ছয় দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ বাংলাদেশের উত্থানে দলটির নেতৃবৃন্দ কখনো আপোস করেননি। অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষভাবে দ্বাদশ জাতীয় সংদস নির্বাচন করে আরও এগিয়ে গেছে আওয়ামী লীগ।

তাদের মতে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় বঙ্গবন্ধু এবং তার কন্যা শেখ হাসিনার। ৩০০ আসনে শরিকদের কিছু আসন ছেড়ে দিলেও দুই শতাধিক আসনে জয়ী হয়েছে নৌকা প্রতীক। আওয়ামী লীগও টানা চারবার মন্ত্রীসভা গঠন করতে যাচ্ছে। কিন্তু, তাদের সামনে কিছু বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। অর্থনীতি শক্তিশালীকরণ, দুর্নীতি নির্মূল, বাজার নিয়ন্ত্রণ, সিন্ডিকেট দমনের বিকল্প নেই। 

বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত তিন জাতীয় নির্বাচনে প্রতিটি বিভাগ-জেলা-উপজেলা এমনকি ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদের দিক নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আওয়ামী লীগকে এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনার সঙ্গে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন দলীয় উচ্চপদস্ত নেতৃবৃন্দ। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে এ সময়ে বিপুল কিশোর-তরুণ-যুবক আওয়ামী পতাকার তলে এসেছেন। এমনকি বিএনপি থেকে এসেও নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়ী হয়েছে প্রবীণ নেতা। দলটিতে যেমন রাজনীতির চর্চা হয়, তেমনি হয় গণতন্ত্রের চর্চা। কিন্তু, অন্যায় করে ছাড় পাওয়ার দৃষ্টান্ত নেই। গাজীপুর, জামালপুর এর উদাহরণ। 

নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো বলছে, গত প্রায় দেড় দশকে দেশের রাজনীতির মোড় পাল্টে সুস্থধারার রাজনীতির প্রবর্তন করেছে দলটি। সহিংসতা, হামলা, সংঘর্ষ এমনকি দলাদলিও জায়গা পায়নি সংগঠনে। দ্বাদশ নির্বাচনে স্বতন্ত্র কিংবা বিদ্রোহীপ্রার্থীদের চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে ছাড় দেওয়া এর উদাহরণ। শেখ হাসিনা তথা আওয়ামী লীগের উদার নীতির কারণে নির্বাচন করতে আগ্রহী সকলেই বিনা বাধায় প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার সুযোগ পেয়েছে। গত নবম, দশম, একাদশ নির্বাচনে তেমন ছাড় পায়নি বিদ্রোহীরা। কিন্তু, এবার নির্বাচন করার সুযোগ দেওয়ায় অনেক আসনে নৌকার ভরাডুবিও হয়েছে, জনপ্রিয় নেতারা হয়েছেন সংসদ সদস্য। এদের বেশিরভাগই আওয়ামী লীগ অথবা অঙ্গসংগঠনের ত্যাগী কর্মী।

নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো আরও বলছে, বিগত তিন নির্বাচনে কঠিন সময় পার করেছে আওয়ামী লীগ। বিচ্ছিন্ন ঘটনাও ঘটেছে অনেক। এর মধ্যে অনেক উচুপর্যায়ের নেতাকর্মীকে বহিস্কার করা হয়েছে। কিন্তু, নীতিমালা থেকে বিচ্যুত হয়নি দলটি। এখনো শেখ হাসিনার পর পদবী এবং যোগ্যতাবলে দলটি নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যগণ, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে থাকা অভিজ্ঞ রাজনীতিকগণ। 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অনেক প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দ নৌকাপ্রতীক পাননি। অনেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও কাওকেই আওয়ামী লীগ বা অঙ্গ সংগঠনের বাইরে রাখা হয়নি। ছাড় দেওয়ার মানসিকতা কিংবা উদারনীতির কারণে এসব বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র প্রার্থীও সংগঠনের কাছে দায়বদ্ধ এবং কৃতজ্ঞ।  

এখন দেখার বিষয়, আওয়ামী লীগের নতুন মন্ত্রীপরিষদ এবং বিদ্রোহী সংসদ সদস্যরা কতটা জনসম্পৃক্ত কাজে নিজেদের সংযুক্ত রাখতে পারে, জনগণের প্রত্যাশা যথাযথভাবে পূরণ করতে পারে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭