ইনসাইড বাংলাদেশ

যুক্তরাষ্ট্রের নীরবতা: শেষ পর্যন্ত কী করবে?


প্রকাশ: 08/01/2024


Thumbnail

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ৭ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত কোন রকম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেনি। যদিও নির্বাচনের পর গতকাল থেকেই বিভিন্ন বন্ধু রাষ্ট্র বাংলাদেশের বিজয়ী দলকে অভিনন্দন জানিয়েছে। আজ ১১ টি দেশের রাষ্ট্রদূতরা প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এই তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র নেই। এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচনের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেনি। 

আজ গণভবনে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান। শুধু ভারত নয়, চীন, রাশিয়া, ভুটান, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর ও শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রদূতরা প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এর আগে আগা খান ডিপ্লোম্যাটিক রিপ্রেজেন্টেটিভের একটি প্রতিনিধি দলও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। গতকাল রাতেই রাশিয়ার পক্ষ থেকে বাংলাদেশের নির্বাচনকে অসাধারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয় এবং এই নির্বাচনকে একটি দৃষ্টান্ত হিসাবে উল্লেখ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আজ ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সাক্ষাৎ করেন এবং তিনিও ফুল দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান। 

বিভিন্ন দেশ যখন নির্বাচনে টানা চতুর্থবারের মতো বিজয়ী আওয়ামী লীগকে অভিনন্দন জানাচ্ছে জানাচ্ছে ঠিক সেই সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং জাপান এখন পর্যন্ত নীরবতা পালন করে আসছে। তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্য দেশগুলো হয়তো নতুন সরকার গঠনের পরপরই বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানাবে। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আসলে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এটি এখন কোটি টাকার প্রশ্ন। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের নির্বাচন যে সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেই সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সাপ্তাহিক ছুটি এবং ছুটির পর আজ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দপ্তরগুলো খুলবে এবং তখনই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানা যেতে পারে। 

তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে বাংলাদেশের নির্বাচনটি এমন একটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় সংঘটিত হয়েছে, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চটজলদি করে কোন নিষেধাজ্ঞা নাও দিতে পারে। বিশেষ করে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৪০ শতাংশের বেশি। যা যেকোনো বিবেচনায় একটি ভাল গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য পর্যাপ্ত। এছাড়াও নির্বাচনে কোন বড় ধরনের কারচুপি হয়নি। কোনো কোনো মহল থেকে যারা পরাজিত হয়েছেন তারা নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ করেছেন। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর জন্য এটি একটি অনিবার্য বাস্তবতা। কারণ যারাই নির্বাচনে হারে, এমনকী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে যারা পরাজিত হয়েছে তারা নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ করেছে। নির্বাচনে যে সমস্ত বিদেশি পর্যবেক্ষকরা ছিলেন, তারা এই নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য বলেছেন। নির্বাচনের সুষ্ঠু উপস্থিতি বলেছেন। বিএনপি অংশগ্রহণ না করলেও নির্বাচন যে শান্তিপূর্ণ হয়েছে এটি নিয়ে কারও কোন সন্দেহ নেই। এরকম বাস্তবতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচনকে নিয়ে কী ভাবছে বা কী চিন্তাভাবনা করতে পারে সেটি নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে। 

কেউ কেউ মনে করছেন যে, এই নির্বাচনের বিষয়টি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পূর্ণ এড়িয়ে যেতে পারে। নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর কোন রকম আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছাড়াই নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আবার কেউ কেউ মনে করছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিবর্তন হয়নি। তারা পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে এবং নির্বাচনের বিভিন্ন দিকগুলো পর্যালোচনা করেছে। এই সমস্ত পর্যালোচনার প্রেক্ষিতে তারা যে কোনো একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে, যে সিদ্ধান্ত নেতিবাচক হতে পারে। আবার কেউ কেউ মনে করছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আসলে পুরো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং সার্বিক বিবেচনা করে তারা তাদের মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই নির্বাচনকে কীভাবে দেখে তার ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু। দেখার বিষয় যে তারা কী প্রতিক্রিয়া জানায়?



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭