ইনসাইড বাংলাদেশ

এমপির আশায় দুই দিকই হারাল সাবেক মন্ত্রী লতিফ বিশ্বাস


প্রকাশ: 08/01/2024


Thumbnail

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-৫ আসন থেকে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন না পেয়ে ওই আসনে ঈগল প্রতিক (স্বতন্ত্র) প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস। নির্বাচনে অংশ নিয়ে দুই দিকই হারালেন সাবেক এই এমপি। 

রোববার (৭জানুয়ারি) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও নির্বাচন মাঠে পিছুপা হননি। ধাপিয়ে বেড়িয়েছেন পুরো নির্বাচনী আসন। অবশেষে আব্দুল লতিফ বিশ্বাস তার ঈগল প্রতীক নিয়ে পরাজিত হয়ে ২য় স্থান অর্জন করেন। ঈগল (স্বতন্ত্র) প্রতীকে প্রাপ্ত ভোট হচ্ছে ৭৩ হাজার ১৮৩ ভোট। এই নির্বাচনে বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শিল্পপ্রতি আব্দুল মমিন মন্ডল ৭৭ হাজার ৪২২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছে। আব্দুল লতিফ বিশ্বাস নির্বাচনে পরাজিত ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ হারিয়ে এখন হয়েছেন দিশেহারা।

জানা যায়, আওয়ামীলীগের মনোনয়ন না পেয়ে গত ২০২৩ সালের (২৮ নভেম্বর) জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ করেন আব্দুল লতিফ বিশ্বাস। আর তাই রোববার নির্বাচনকে সামনে রেখে ঈগল (স্বতন্ত্র) প্রতিক প্রার্থী হয়ে তিনি উঠান বৈঠক, গণসংযোগ আর প্রচারণা করেছিলেন এবংকি নির্বাচনী মাঠ অনেকটা গরমও করেছিলেন এই নেতা। তিনি ১৯৯৬-২০০১ ও ২০০৮-২০১৪ সালে দুই মেয়াদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে তিনি মন্ত্রী হওয়ার পর তার জামাতা ও জামাতার ছোট ভাইয়েরা বেলকুচিতে অনেক অপকর্ম ও দুঃশাসন করায় গত রোববার (৭ জানুয়ারী) সংসদ নির্বাচনে সাধারণ মানুষ নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকা প্রার্থীকে বিজয়ী করেছেন।

এদিকে আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের স্ত্রী (বেগম আশানুর বিশ্বাস) হলেন বেলকুচি পৌরসভার সাবেক মেয়র ও বর্তমানে বেলকুচি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক। এমপি প্রার্থীর আশায় বেলকুচি উপজেলা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন আব্দুল লতিফের জামাতা নুরুল সাজেদুল ইসলাম, জামাতার ছোট ভাই বেলকুচি পরিষদের মেয়র মোঃ সাজ্জাদুল হক রেজা।

সোমবার (৮ জানুয়ারি) আশানুর বিশ্বাস অভিযোগ দিয়ে বলেন, গত ৭ জানুয়ারী নির্বাচনে আব্দুল মমিন মন্ডল তার গার্মেন্সের ৩৫টি গাড়ীতে লোকজন নিয়ে এসে সালাম ফকিরের বাড়ীতে অবস্থান করে। পরে মেঘুলা, আজুগরা, আটারদাগ, তামাই, গোপালপুর, চানপুরসহ বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে জাল ভোট প্রয়োগ করেছে। জাল ভোটের কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস হারলেও সাধারণ মানুষের মানের মাঝে রয়েছে তিনি।

সিরাজগঞ্জ-৫ এর সদ্য এমপি আব্দুল মমিন মন্ডল বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে সবাই ভোট কেন্দ্রে এসে উৎসর মুখর ভাবে ভোট দিয়ে আমাকে বিজয়ী করেছেন। তিনি এমপি ও মন্ত্রী থাকাবস্থায় নির্বাচনী এলাকায় যে অত্যাচার করেছে সাধারণ মানুষেরা ভোটের মাধ্যমে তার জবাব দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, সিরাজগঞ্জ-১ (কাজিপুর-সদর একাংশ) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয় ২ লাখ ৭৮ হাজার ৯৭১ ভোট ও তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী মোঃ জহুরুল ইসলাম লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ১৩৯ ভোট, সিরাজগঞ্জ-২ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত ড. জান্নাত আরা হেনরী ১ লাখ ৮৪ হাজার ৮৫৮ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আমিনুল ইসলাম ঝন্টু লাঙ্গল প্রতীকে ৪ হাজার ৫৮০ ভোট, সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আব্দুল আজিজ ১ লাখ ১৭ হাজার ৬৪২ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি সাখাওয়াত হোসেন সুইট স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকে ৪৪ হাজার ৭০৮ ভোট. সিরাজগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম শফি ২ লাখ ২০ হাজার ১৫ ভোট তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি হিল্টন প্রামানিক লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ৭ হাজার ৮৮ ভোট, সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত শিল্পপতি আব্দুল মমিন মণ্ডল ৭৭ হাজার ৪২২ ভোট তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আলহাজ্ব আব্দুল লতিফ বিশ্বাস স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকে পেয়েছেন ৭৩ হাজার ১৮৩ ভোট, সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চয়ন ইসলাম ১ লাখ ২৮ হাজার ৮৯০ ভোট তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি হালিমুল হক মীরু ঈগল প্রতীকে পেয়েছেন ২৫ হাজার ৬৭৬ ভোট। এই ৬টি আসনে বেসরকারিভাবে আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭