ইনসাইড পলিটিক্স

তারেকের ভুল রাজনীতি: আবার কোমায় বিএনপি


প্রকাশ: 08/01/2024


Thumbnail

তারেকের ভুল রাজনীতির কারণে আবার মুমূর্ষু অবস্থায় পড়েছে দীর্ঘ ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। এ বারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করা, নির্বাচন বর্জনের ডাক দেওয়া, নির্বাচনের আগে অসহযোগ আন্দোলন ইত্যাদি বাস্তবতা বিবর্জিত রাজনৈতিক কর্মসূচি বিএনপিকে আবার ব্যাকফুটে নিয়ে গেছে। 

বিএনপির নেতারাই এখন বলছেন যে তারা দিক নির্দেশনাহীন। কী করবেন তারা ভেবে পাচ্ছেন না। সামনের দিনে বিএনপির কর্মসূচি কী হবে, সে সম্পর্কেও বিএনপি নেতাদের কোন রকম সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা নেই। ফলে বিএনপি এখন আবার অন্ধকার টানেলে প্রবেশ করল বলেই মনে করছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারাই।

২৮ অক্টোবর বিএনপি তার রাজনীতির প্রথম ভুল পথ বেছে নেওয়া শুরু করে। ওই দিন শান্তিপূর্ণ সমাবেশে তারেক জিয়ার নির্দেশে কিছু সংখ্যক বিশৃঙ্খল ক্যাডার পরিকল্পিত সন্ত্রাস এবং নাশকতা শুরু করে। তারা প্রধান বিচারপতির কার্যালয়ে হামলা করে, হাসপাতালে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটায় এবং একজন পুলিশ কনস্টেবলকে বেধড়ক ভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। এরপর সারাদেশে শুরু হয় বিএনপির সদস্য তাণ্ডব। ২৮ অক্টোবর থেকে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত সারা দেশে বিএনপির শতাধিক গাড়ি অগ্নিসংযোগ করেছে, ভাঙচুর করেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এমনকি দুই দফায় ট্রেনে আগুন দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। এই সমস্ত ঘটনাগুলোর সঙ্গে যে বিএনপি জড়িত তা ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। এর ফলে বিএনপির ত্রিমুখী সঙ্কট দেখা দিয়েছে। 

প্রথমত, সাধারণ মানুষ বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে। সাধারণ মানুষ মনে করছে যে, বিএনপি আবার তার সন্ত্রাসী এবং নাশকতার রাজনীতিতে ফিরে এসেছে। এটির ফলে মানুষের মধ্যে একটি নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হচ্ছে। গত দুই বছর ধরে ধারাবাহিক বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বিএনপি যে শান্তিপূর্ণ রাজনীতির ধারায় ফিরে এসেছে এটা প্রমাণের চেষ্টা হয়েছিল কিন্তু ২৮ অক্টোবরের পর থেকে আবার উল্টো পথে হাঁটতে শুরু করেছে। সাধারণ মানুষ এখন পুরো বিষয়টাকে নেতিবাচক ভাবে দেখছে। 

দ্বিতীয়ত, বিএনপির এই আন্দোলনে যাদের মৌন সমর্থন ছিল সেই সমস্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও ২৮ অক্টোবর থেকে বিএনপি জ্বালাও পোড়াও ধ্বংসাত্মক রাজনীতির ফলে একটি নেতিবাচক ধারণা নিতে শুরু করেছে এবং এই রাজনীতিকে তারা প্রত্যাখ্যান করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কেউই সন্ত্রাস এবং সহিংসতা রাজনীতি পছন্দ করে না। বরং তারা মনে করে যে রাজনীতিতে একটি সহনশীল এবং পরিচ্ছন্ন ধারা থাকা দরকার। বিএনপি যখনই ধ্বংসাত্মক রাজনীতি যেটি তারা ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে করেছিল, সেই ধারায় ফিরে এসেছে। তখন পশ্চিমা দেশগুলো আবার তাদের ব্যাপারে নেতিবাচক ধারণা নিতে শুরু করেছে। 

অনেকেই মনে করেন যে, এই নির্বাচনের পর তাৎক্ষণিকভাবে প্রচুর দেশ নতুন সরকারকে যে সমর্থন দিচ্ছে তার প্রধান কারণ হল বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতির ধারা।

তৃতীয়ত, বিএনপির কর্মীরা এখন গন্তব্যহীন। যে অসহযোগ আন্দোলন করা হল, নির্বাচন বর্জনের ডাক দিল তারপরেও ৪১ শতাংশ ভোট পড়েছে। বিএনপির নেতারা যতই চিৎকার চেঁচামেচি করুক, এই ভোট প্রদানের হার আশাব্যঞ্জক এবং প্রধান একটি রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ ছাড়াই এ ধরনের ভোট প্রদান আওয়ামী লীগের জন্য একটি বড় ধরনের স্বস্তির খবর। এর ফলে বিএনপির রাজনীতি আরেকবার মুখ থুবড়ে পড়ল। বিএনপির নেতারাই প্রশ্ন করছেন নির্বাচন হয়ে গেল এখন তারা কী করবে? 

আজ ভোরবেলা পর্যন্ত বিএনপির হরতালের কর্মসূচি ছিল। এরপর বিএনপি যে কর্মসূচি দিয়েছে সেই কর্মসূচি কোন গ্রহণযোগ্যতা নেই। এই ধরনের পরিস্থিতির ফলে বিএনপি এখন কীভাবে সামনের পথে এগোবে সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। 

বিভিন্ন মহল মনে করছে যে, ভুল রাজনীতির কারণে বিএনপি আবার কোমায় চলে গেল যেমন তারা গিয়েছিল ২০১৫ সালে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭