ইনসাইড পলিটিক্স

বঞ্চিতরা কী পুরস্কার পাবেন?


প্রকাশ: 08/01/2024


Thumbnail

আওয়ামী লীগের এবার অনেকেই ত্যাগ স্বীকার করেছেন। অনেকেই মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। কৌশলগত কারণে শরিকদের আসন ছেড়ে দেওয়ার কারণে এবং নানা বাস্তবতার কারণে অনেক জনপ্রিয় ব্যক্তিকে এবার মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব হয়নি। এই সমস্ত মনোনয়ন বঞ্চিতরা সামনের দিনগুলোতে কী পুরস্কার পাবেন—নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের মধ্যে এটি এখন বড় আলোচনার বিষয়। 

আওয়ামী লীগের অন্যতম ত্যাগী নেতা এবং প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সাইফুজ্জামান শিখর এবার মাগুরা আসন থেকে মনোনয়ন পাননি। কৌশলগত কারণে সাকিব আল হাসানকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্যই তার আসনটি ছেড়ে দিতে হয়েছে। সাইফুজ্জামান শিখর অত্যন্ত প্রজ্ঞা পরিচয় দিয়েছেন। তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করে সাকিব আল হাসানের পক্ষে কাজ করেছেন। তার এই ত্যাগ স্বীকারের স্বীকৃতি কী তিনি পাবেন? 

একইভাবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত নন্দী এবার মনোনয়ন পাননি। মনোনয়ন না পেলেও তিনি দলের জন্য নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করেছেন। সারা দেশের নির্বাচন পরিচালনা কাজে তিনি অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা এবার মনোনয়ন চেয়েও পাননি। তাছাড়া মনোনয়ন পাওয়ার পরও ২৬ টি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদেরকে সরে দাঁড়াতে হয়েছে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসন সমঝোতার কারণে। জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের কারণে যারা নৌকা প্রতীক ছিলেন, এরকম ২৬ জন প্রার্থী এবার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন দলের নির্দেশে।

শুধু তাই নয়, ১৪ দলের সঙ্গে সমঝোতার কারণেও ছয়জন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করেননি। এরকম ভাবে প্রায় ৫০ জন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা এবং জনপ্রিয় প্রার্থী শেষ পর্যন্ত দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন। প্রশ্ন উঠেছে, নির্বাচনের পরে তারা কী পুরস্কার পাবেন? 

গত বারের অভিজ্ঞতা বলে যে, যারা এরকম ত্যাগ স্বীকার করেন এবং দলের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানান, তারা পরবর্তীতে পুরস্কার পান। গত নির্বাচনে জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আব্দুর রহমান মনোনয়ন পাননি। এরপর পরবর্তীতে তারা তিনজনই প্রেসিডিয়ামে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন এবং এবার তিনজনই মনোনয়ন পেয়েছেন। শুধু তাই নয়, সেই সময়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিমও মনোনয়ন পাননি। পরবর্তীতে তিনি পদোন্নতি পেয়ে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন এবং এবার মতিঝিলের আসন থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। কাজেই আওয়ামী লীগের রাজনীতি হল ধৈর্যের পরীক্ষা, আদর্শের পরীক্ষা এবং ত্যাগ স্বীকারের রাজনীতি। আর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবকিছু জানেন, দেখেন এবং বোঝেন। যারা দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেন এবং কোনো পদপদবী না পেয়ে অভিমানে দলে নিষ্ক্রিয় হয়ে যান তাদের জন্য তিনি সবসময় সহানুভূতি দেখান এবং বড় পুরস্কার রাখেন। 

তবে যে ৫০ জনের মত বিভিন্ন স্তরের নেতারা মনোনয়ন পাননি তারা সবাই যে পুরস্কৃত হবেন এমনটি নয়। ধাপে ধাপে এরা নানাভাবে পুরস্কৃত হতে পারেন। এদের কেউ কেউ হয়তো আগামী কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসতে পারেন। বিভিন্ন কমিটিতে তাদের জায়গা দেওয়া হতে পারে। দু একজন যে গুরুত্বপূর্ণ কোন দায়িত্ব পাবেন না এমনটিও নয়। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে আওয়ামী লীগ সভাপতির অভিপ্রায় এবং তারা কতটুকু ত্যাগ স্বীকার করেছেন তার ওপর।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭