ইনসাইড বাংলাদেশ

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের অস্পষ্ট অবস্থান


প্রকাশ: 09/01/2024


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আজ তাদের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু হয়নি বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর সোমবার এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তবে এই বিবৃতির শেষাংশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে যে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে একটি অবাধ এবং মুক্ত ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় (ইন্দো প্যাসিফিক) অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অভিন্ন লক্ষ্যে কাজ করা, বাংলাদেশের মানবাধিকার সুরক্ষা এবং নাগরিক সমাজের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখা এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই বিবৃতি ইঙ্গিতবাহী এবং এই বিবৃতির মধ্যে এক ধরনের অস্পষ্টতা রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতোই যুক্তরাজ্যও প্রায় অভিন্ন এক বিবৃতি দিয়েছে। যেখানে তারা বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হয়নি বলে মন্তব্য করেছে। এই দুটি প্রভাবশালী দেশ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হয়নি বলে মন্তব্য করলেও তারা বাংলাদেশের নির্বাচনকে বাতিল করে দেয়নি। এছাড়া এই নির্বাচনের ভিত্তিতে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির কোন বার্তাও দেননি। বাংলাদেশের ওপর কোন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণাও দেওয়া হয়নি এই দেশের পক্ষ থেকে। কাজেই স্পষ্টভাবেই এই দুটি দেশের বিবৃতি ব্যাখ্যার দাবি রাখে। 

নির্বাচনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার বিবৃতিতে বলেছে, সব দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি। সে কারণে বাংলাদেশের মানুষের ভোট দেওয়ার যথেষ্ট বিকল্প ছিল না। যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, একটি টেকসই রাজনৈতিক সমঝোতা এবং সক্রিয় নাগরিক সমাজের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হলে দীর্ঘমেয়াদে দেশের প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে। 

স্পষ্টতই লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে এই নির্বাচনের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং এবং যুক্তরাজ্যের তিনটি প্রতিক্রিয়া লক্ষণীয়। প্রথমত, তারা বলেছে যে নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়নি এমনটি কেউই দাবি করে না। কারণ যেহেতু একটি প্রধান বিরোধী দল এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। কাজেই নির্বাচন যে ভাবে উৎসব মুখর হওয়ার কথা ছিল, তেমনটি হয়নি। কিন্তু দুই দেশের একটিও এই নির্বাচনকে পুরোপুরি ভাবে নাকচ বা বাতিল করে দেয়নি। বরং তারা বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব এবং সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছে। 

দ্বিতীয়ত, এই নির্বাচনে বিরোধী দলের অংশগ্রহণ না করার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে এবং সে কারণেই যে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়নি, এটি তার এটি তারা মন্তব্য করেছে। এই ব্যাপারে কারোরই কোন দ্বিমত নেই। আর বিরোধী দলকে নির্বাচনে না আনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের যেমন নেই, তেমনই আওয়ামী লীগের নেই। কারণ আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে একটি পক্ষ। কারণ নির্বাচনে আসবে না আসবে সেটি ওই দলের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। আর এ কারণেই বিএনপির নির্বাচনে আসা না আসা তাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। এরকম বাস্তবতায় যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতিতে কিছু অস্পষ্টতা রয়েছে। 

বিভিন্ন কূটনৈতিক মহল মনে করছেন যে, এই দুটি প্রভাবশালী দেশ এখন বাংলাদেশের নতুন সরকারের কার্যক্রম দেখবেন। রাজনৈতিক ঐক্য এবং সমঝোতা প্রতিষ্ঠাতারা কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেই বিষয়টির দিকে নজর দেবে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তারা প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।বাংলাদেশের নতুন সরকারকে তারা এক ধরনের নজরদারি বা মনিটরিং এর মধ্যে রাখবে। তার ওপরই নির্ভর করবে বাংলাদেশের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাবের চূড়ান্ত প্রকাশ।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭