ইনসাইড পলিটিক্স

ব্যাকফুটে বিএনপি সরকারের সাথে সমঝোতা চায়


প্রকাশ: 11/01/2024


Thumbnail

একদিকে সরকারকে অবৈধ ঘোষণা করেছে, নির্বাচনকে ডামি নির্বাচন বলছে অন্যদিকে সরকারের সাথে সমঝোতার জন্য কূটনীতিকপাড়ায় দেন দরবার করছে বিএনপি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর রীতিমতো ব্যাকফুটে চলে গেছে দীর্ঘ ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি। বিএনপি প্রত্যাশা করেছিল যে নির্বাচনের পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো সরকারের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবে, বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিবে। ফলে সরকার আরেকটি নতুন নির্বাচন করতে বাধ্য হবে। এরকম একটি প্রত্যাশার জায়গা থেকে বিএনপি তাদের অবস্থানে অনড় ছিল। তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। কিন্তু নির্বাচনের পর পরিস্থিতি পাল্টে যেতে শুরু করে। নির্বাচনের পরপরই চীন, রাশিয়া এবং ভারত বাংলাদেশের নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেয়। 

ভারত বাংলাদেশের নির্বাচন সম্পর্কে মন্তব্য করে যে, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হয়েছে। ভারতের মতো প্রভাবশালী একটি দেশ যখন নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেয়, তখন এই নির্বাচন নিয়ে আর্ন্তজাতিক গ্রহণযোগ্যতার কোন সংকট হওয়ার কথা নয় এবং তাই হয়েছে। ভারতের এই সুস্পষ্ট এবং দৃঢ় অবস্থানের কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচনের ব্যাপারে অনেকটাই নমনীয় অবস্থান গ্রহণ করেছে। তারা বাংলাদেশের ব্যাপারে একটি দায়সারা বিবৃতি দিয়েই ক্ষান্ত হয়েছে। এটি বিএনপির জন্য চরম হতাশার বিষয় হিসেবে দেখা দিয়েছে। 

বিএনপি নেতারা ভাবতেও পারেননি যে এরকম একটি পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে তাদেরকে। আর এ কারণেই বিএনপি এখন ছিন্ন ভিন্ন এবং লন্ডভন্ড অবস্থায় বাঁচার পথ খুঁজছে। এই বাঁচার পথ হিসেবে তারা সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপ এবং সমঝোতার চেষ্টা করছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

নির্বাচন পরবর্তী সময়ে কয়েকটি দেশের সঙ্গে বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতার আলোচনা হয়েছে এবং সেই সমস্ত নেতারা বিভিন্ন কূটনীতিকদের কাছে রাজনৈতিক সমঝোতা এবং সংলাপের গুরুত্বের কথা বলেছে। অবশ্য বিএনপির এই সংলাপে প্রত্যাশার মধ্যেও এক ধরনের রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি আছে বলে একাধিক কূটনীতিক সূত্র জানিয়েছে। তারা অন্তত তিনটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের সাথে বৈঠকে বলেছেন যে, এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নয়। এখন আওয়ামী লীগের উচিত অবিলম্বে বিএনপির সঙ্গে একটি রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য চেষ্টা করা এবং রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে যত শীঘ্র সম্ভব একটি নতুন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা। কিন্তু এই ধরনের পরিকল্পনার ব্যাপারটি আওয়ামী লীগ নাকচ করে দিয়েছে। 

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে বলা হচ্ছে যে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু হয়েছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমেই যে নতুন সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে সেই সরকার চাইলে বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা করতে পারে। সেক্ষেত্রে বিএনপিকে তার জ্বালাও পোড়াও ধ্বংসাত্মক রাজনীতি পরিহার করতে হবে। 

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এটাও সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে শুরু করে নির্বাচনের আগের দিন পর্যন্ত সারাদেশে বিএনপি যে নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, ট্রেনে আগুন দেওয়ার মতো বিশৃঙ্খল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে সে সমস্ত কর্মকাণ্ডের বিচার হবে। রাজনৈতিক সমঝোতা যতই হোক না কেন এই বিচার বন্ধ করা যাবে না। আর আওয়ামী লীগের এই অনড় অবস্থানের কারণে বিএনপি এখন আরও ব্যাকফুটে চলে গেছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭