ইনসাইড বাংলাদেশ

বাংলাদেশে চীনকে কোণঠাসা করতে একসাথে কাজ করবে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র?


প্রকাশ: 12/01/2024


Thumbnail

বাংলাদেশের নির্বাচনের পর আন্তর্জাতিক রাজনীতির নতুন মেরুকরণ ঘটছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচনকে পরোক্ষ ভাবে মেনে নিয়েছে। গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। নির্বাচনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সম্পর্কে যে বিবৃতি দিয়েছেন তা অনেকটাই ইতিবাচক। বিশেষ করে ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলে অংশীদারিত্বের কথা বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তাই দিয়েছে। এই সবকিছুই করা হয়েছে কৌশলগত কারণে—এমনটি মনে করেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে ভারত এই অঞ্চলে সন্ত্রাস মুক্ত একটি রাজনৈতিক আবহ রাখার জন্যই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে একটি কূটনৈতিক সমঝোতা করেছে—এমন বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন মহল থেকে। আর শেষ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই কূটনৈতিক সমঝোতায় সারা দিয়েছে বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে। 

এখন বাংলাদেশে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শেখ হাসিনা টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। আর এই সময় ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ নিয়ে অভিন্ন তৎপরতা চালাবে বলেই মনে করছেন কূটনীতিক মহল। 

বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবর বিশ্লেষণ করে মনে হচ্ছে যে, ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের এখন প্রধান লক্ষ্য হবে বাংলাদেশে চীনের অর্থনৈতিক আধিপত্য হ্রাস করা এবং চীনের সঙ্গে যেন বাংলাদেশের নতুন সরকারের সম্পর্ক আরও গভীর না হয় সেটি নিশ্চিত করা। ইতোমধ্যেই মালদ্বীপ নিয়ে ভারতের এক তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেখানে চীনের আধিপত্যের কারণে এই অঞ্চলে ভারতের অবস্থান অনেকটাই নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। এরকম বাস্তবতায় বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারত আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করবে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। আর এক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পাশে রাখতে চায় ভারত। 

বাংলাদেশের সঙ্গে গত গত এক দশকের বেশি সময় ধরে চীনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়েছে এবং এই সম্পর্ক উত্তরোত্তর বাড়ছে। একথা অস্বীকার করার কোন কারণ নেই যে, বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রধান অংশীদার হল এখন চীন। বড় বড় মেগা প্রকল্পগুলোর সবই চীনের অর্থায়নে চলছে। এখন চীন বাংলাদেশকে ব্যবহার করে কিছু কৌশলগত উন্নয়ন তৎপরতা করতে চাচ্ছে যাতে ভারতের ওপর তাদের প্রভাব বিস্তার আরও সহজ হয়। কিন্তু সেটি করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনও ইতিবাচক সাড়া দেননি। আর এ কারণেই বাংলাদেশের নির্বাচনের ব্যাপারে ভারত কিছুটা আগ্রাসী কূটনীতি গ্রহণ করেছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেন নির্বাচন নিয়ে কোনরকম নেতিবাচক তৎপরতা না চালায় সেটা নিশ্চিত করেছে। এর অন্যতম লক্ষ্য ছিল যে বাংলাদেশকে আস্থায় রাখা। এখন নতুন সরকারের সঙ্গে ভারত যে দর কষাকষি করবে তাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেও পাশে রাখবে।

চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্কের লাগাম টেনে ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং বাংলাদেশ যেন চীনের ওপর নির্ভরশীল না হয়, বাংলাদেশের পরিণতি যেন মালদ্বীপের মতো না হয় সেটি নিশ্চিত করার জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা এখন দৃশ্যমান হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। আর এ কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন অপেক্ষা করছে। সামনের দিনগুলোতে অনেকগুলো বাণিজ্য সমঝোতার সম্ভাবনার কথাও শোনা যাচ্ছে। এই বাণিজ্য সমঝোতা হলে একদিকে যেমন দু দেশের সম্পর্কের উন্নয়ন হবে অন্যদিকে চীনের বলয়ে বাংলাদেশের প্রবেশ না করাটাও নিশ্চিত হবে। সেটি এখন নির্বাচন পরবর্তী বাংলাদেশ নিয়ে কূটনীতির প্রধান লক্ষ্য।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭