ইনসাইড বাংলাদেশ

যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক কোন পথে?


প্রকাশ: 13/01/2024


Thumbnail

অনেকের ধারণা করেছিল যে, নির্বাচনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করবে। কিন্তু বাস্তবে কোন ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করেনি। বরং যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচনের পর যে বিবৃতি দিয়েছে সেই বিবৃতিটি অত্যন্ত নরম। সেই বিবৃতিতে অবশ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে যে, বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি। তবে এই নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করা বা নির্বাচনকে নাকচ করে দেওয়ার পথে যুক্তরাষ্ট্র হাঁটেনি। 

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বঙ্গভবনে গত বৃহস্পতিবার শপথ অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। এই শপথ অনুষ্ঠানে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান। টানা চতুর্থ বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করেছে বলে কোনো কোনো কূটনীতিক বিশ্লেষক মনে করেন। তবে পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা মনে করেন যে বাংলাদেশের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কখনোই খারাপ ছিল না। বরং দুই দেশের কৌশলগত অনেকগুলো ঐকমত্যের জায়গা আছে এবং দুই দেশই সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানায়নি। যেখানে ভারত, রাশিয়া, চীনসহ বিশ্বের অনেকগুলো প্রভাবশালী দেশ নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এখন পর্যন্ত নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানাননি বা তাকে কোন শুভেচ্ছা বার্তা পাঠাননি।

আশার কথা হল যে সরকারের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন একজন দক্ষ রাজনীতিবিদ ড. হাছান মাহমুদ। যিনি কূটনৈতিক বিষয়ে পড়াশোনাও করেছেন। তিনি নিশ্চয়ই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের ব্যাপারটিকে গুরুত্ব দিবেন এবং এই ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিবেন। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে ভারত।

বিভিন্ন মহল মনে করে যে, ভারতের কারণেই নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অযাচিত হস্তক্ষেপ করেনি এবং এই নির্বাচনের সময় একটা নির্লিপ্ত অবস্থায় ছিল। ভারত এখন এই অঞ্চলে কৌশলগত অবস্থান সংহত করতে চায়। এ জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পাশে নিতে চায়। আর তাই বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ধারা নির্ভর করছে ভারতের কূটনৈতিক চাহিদা এবং কৌশলের ওপর বলে মনে করেন কোনো কোনো বিশ্লেষক। 

তবে বিভিন্ন কূটনৈতিক মহল মনে করেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়া তাদের প্রধান অগ্রাধিকার। এছাড়াও বাংলাদেশের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সামরিক কৌশলগত অবস্থান জোরদার করতে চায়। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের তেল, গ্যাস ক্ষেত্রে কিছু কিছু যৌথ কার্যক্রম আছে। এই কার্যক্রমকে আরও এগিয়ে নিতে চায়। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন অনেকগুলো জটিলতার মধ্যে আছে। একদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, অন্যদিকে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যু এবং সর্বশেষ ইয়েমেনে হামলার ঘটনাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কটি যেভাবে আছে সেভাবে থাকতে দিতে চায়। ফলে বাংলাদেশের নির্বাচনকে হ্যাঁ/না কোনোটাই না বলে একটা উপেক্ষার নীতি গ্রহণ করতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর এ রকম একটি কৌশল নিয়েই যুক্তরাষ্ট্র সামনের দিনগুলোতে এগোবে। বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আস্তে আস্তে একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় আসবে। তবে বাংলাদেশের যে নতুন মিত্র এবং বিশ্ব কূটনীতিতে বাংলাদেশের যে অবস্থান তাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হঠাৎ করেই অতি নাটকীয় হওয়ার সম্ভাবনা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭