আগামী ১৮ জানুয়ারি থেকে নারী সংসদ সদস্যদের জন্য মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করবে আওয়ামী লীগ। চলতি মাসেই এই প্রক্রিয়া শেষ হবে বলে জানা গেছে। আগামী ৩০ জানুয়ারি জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন ডাকা হয়েছে। প্রথম অধিবেশনেই নারী সংসদ সদস্যদের নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
সংবিধান অনুযায়ী ৫০ টি নারী সংসদ সদস্যের মধ্যে নির্বাচনের আসন বিন্যাস অনুযায়ী আওয়ামী লীগ পাবে ৩৭ টি। স্বতন্ত্ররা নির্বাচন করবে ১১ টি-তে। আর দুটি মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষমতা থাকবে জাতীয় পার্টির। আওয়ামী লীগের ৩৭ টি আসনের জন্য সহস্রাধিক মনোনয়নপত্র জমা পড়তে পারে বলে একাধিক মহল মনে করছেন। এ বার সংরক্ষিত আসনে মনোনয়নের লাভের জন্য আওয়ামী লীগে রীতিমতো বিস্ফোরণ ঘটতে যাচ্ছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে। তবে আওয়ামী লীগ এবার নারী সংসদ সদস্য মনোনয়নের ক্ষেত্রে একটি রূপরেখা চূড়ান্ত করেছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে যে নারী সংসদ সদস্য হওয়ার জন্য যোগ্যতার কিছু মাপকাঠি চূড়ান্ত করা হয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা পরাজিত হয়েছেন অংশগ্রহণ করে এরকম কোনো নারী সংসদ সদস্য এ বার সংরক্ষিত কোটায় মনোনয়ন পাবেন না। একাধিকবার নারী সংরক্ষিত কোটার সংসদ সদস্য আছেন এমনটিও মনোনয়ন পাবেন না। যাদের স্বামী বা পুত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হয়েছেন বা পরাজিত হয়েছেন তাদের স্ত্রী বা মা সংরক্ষিত কোটায় এমপি হতে পারবেন না। এ ছাড়াও আরও কিছু বিষয় দেখা হবে যে বিষয়গুলোর ওপর ভিত্তি করে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ।
তবে যে সমস্ত আসনগুলোতে আওয়ামী লীগ শরিকদের সঙ্গে সমঝোতা করে ছেড়ে দিয়েছে সে সমস্ত আসনে যারা নারী সংসদ সদস্য ছিলেন, তাদের মনোনয়ন মোটামুটি নিশ্চিত। এ ছাড়াও মনোনয়ন প্রত্যাশা করে যারা মনোনয়ন পাননি তারাও সংসদ সদস্য মনোনয়নের দৌড়ে এগিয়ে থাকবেন বলে জানা গেছে। সেই বিবেচনায় গাইবান্ধা থেকে মাহবুব আরা গিনি, জামালপুরের মারুফা আক্তার পপি, কেন্দ্রীয় নেতা তারানা হালিম সহ বেশ কয়েকজন মনোনয়ন প্রত্যাশী আওয়ামী লীগের পরিচিত মুখ এ বার মনোনয়নের দৌড়ে এগিয়ে থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রতিবারের মতো এ বারও শোবিজের অনেকেই মনোনয়ন লাভে আগ্রহী এবং তারা মনোনয়নের জন্য দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন। গত শোবিজ তারকাদের মধ্যে শুধুমাত্র সুবর্ণা মোস্তফাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। এবার সূবর্ণা মোস্তফার দ্বিতীয় দফার মনোনয়ন পাবেন না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। সেখানে তারিন জাহান এর মনোনয়নের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও এ বার মনোনয়ন লাভের জন্য চেষ্টা করেছেন শমী কায়সার সহ আরও অনেকে। তবে শেষ পর্যন্ত কাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে সেটি নির্ভর করছে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকের ইচ্ছার ওপর। তবে জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন এবং বিভিন্ন সময় ত্যাগ স্বীকার করেছেন কিন্তু কখনো মনোনয়ন পাননি এরকম ব্যক্তিরাই মনোনয়নে প্রাধান্য পাবেন।
গতবার যারা সংসদ সদস্য ছিলেন এবার যারা মনোনয়ন পাননি যেমনমন্নুজান সুফিয়ান তিনিও এবার নারী সংসদ সদস্যের মনোনয়েনের জন্য চেষ্টা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়াও যারা এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন তারা নারী সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য চেষ্টা তদবির করবেন কিন্তু তারা মনোনয়ন পাবেন না বলেই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। আগামী ১৮ জানুয়ারি থেকে মনোনয়নপত্র জমার দেওয়ার পর বুঝা যাবে যে মনোনয়ন লড়াইয়ে কারা এগিয়ে কারা পিছিয়ে।