ইনসাইড থট

মুক্তি ও শান্তির দূত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন এক নতুন উচ্চতায়


প্রকাশ: 18/01/2024


Thumbnail

আমরা ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে রাজনৈতিক মুক্তি লাভ করে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে সফল হয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি ছিল নানা প্রতিবন্ধকতায়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে আমাদের না ছিল অর্থ না ছিল কোনো শিল্প। মুক্তিযুদ্ধের কারণে আমাদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলো। যুদ্ধের কারণে রাস্তা ঘাট কালভার্ট ভাঙা ছিল। সেই যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে আসেন।সকলের মনে আশা সঞ্চারিত হয়। পূর্ণ হয় আমাদের স্বাধীনতা। জনগণের বিশ্বাস ছিল বঙ্গবন্ধু কিছু একটা করবেন। সেই বিশ্বাসের ওপর ভর করে বাংলাদেশ এগিয়ে চলছিল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে। কিন্তু পরাজিত পক্ষ বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারেনি। তারা লিপ্ত হয় ষড়যন্ত্রে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করে বাংলাদেশে উল্টোপথে নিয়ে যেতে সচেষ্ট হয়।

বাংলাদেশ হারাতে বসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। রাজাকারদের জয়-জয়াকার আর মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা প্রতিদিনকার খবর হয়ে উঠে। গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করে সামরিক রাজতন্ত্র কায়েম করেন জেনারেল জিয়া। সেই ধারা অব্যাহত রাখেন হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ। বাংলার মানুষ গুমুরে গুমুরে কাঁদে।  

ঠিক সেই সময়ে আন্তর্জাতিক চাপে অনুমতি দিতে বাধ্য হন জেনারেল জিয়া সরকার। ১৯৮১ সালের ১৯ মে দেশে ফিরে আসেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা। আশার ভেলাটা আমার জেগে উঠে বাঙালির ঋদয়ে। কিন্তু এরশাদ সাহেব ও তার তৎকালীন সামরিক দোসররা জেনারেল জিয়াকে খুন করে ক্ষমতার উত্তরাধিকার হন। বাঙালির মুক্তির স্বপ্ন আবার বন্দি হয়ে যায় সামরিক কারাগারে।  

মুক্তিকামী বাঙালি থামেনি। অদম্য মুক্তিকামী বাঙালি শেখ হাসিনাকে নিয়ে রাজপথে নামে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে।  আন্দোলনে যোগ দিয়ে জনতা শেষপর্যন্ত বিজয়ী হয় ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর।  স্বৈরতন্ত্রের পতন হয়। ১৯৯১ সালে একটি গণতান্ত্রিক সরকার যাত্রা শুরু করে। কিন্তু বেশি দিন যেতে পারেনি গণতন্ত্র মুক্তি প্রক্রিয়া। দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে আবার রাজপথে নামতে হয়।  

১৯৯৬ সালে বাঙালি আরেকবার মুক্তির স্বাদ পায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের মাধ্যমে। বাঙালি অর্থনৈতিক মুক্তির চাকা দুর্বার গতিতে চলতে থাকে। কিন্তু আবার আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের কারণে ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসে মহাজোট। তারা এক নারকীয় কান্ড ঘটায় অক্টোবরে নির্বাচনে জিতে। ১৯৯৬ সালে তারা যা করেনি ২০০১ সালে তারা পতাকা তুলে দেয় রাজাকারদের বাড়িতে গাড়িতে। নিপীড়ন নির্যাতন নেমে আসে, গজিয়ে ওঠে সাম্পদায়িকতার বিষ দাঁত।  

বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন তোমরা দাবায় রাখতে পারবা না। তাই মুক্তি ও শান্তির দূত শেখ হাসিনাকে কেউই দাবায় রাখতে পারেনি।  ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে, ২০০৭ সালে জেলে পুরে কিংবা দেশে ফিরতে না দিয়ে দাবায় রাখতে পারেনি।  দাবায় রাখতে পারেনি মিথ্যা মামলা দিয়ে। জাতির পিতার কন্যার বলিষ্ঠ উচ্চারণ-পিতার মতো জীবন দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখবো। তাই কারও চোখ রাঙানিতে থামেননি মুক্তির দূত। সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। যারাই অবস্থান নিয়েছিল নির্বাচন বানচালের, যারাই চেষ্টা করেছিল মানুষ পুড়িয়ে বাঙালিকে দাবায় রাখতে-তারা পরাজিত হয়েছে দেশরত্ন শেখ হাসিনার মনোবলের কাছে। তার এই মনোবলের শক্তি জাতির পিতার ও পরিবারে শহীদদের, সেই শক্তি মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লক্ষ শহীদের রক্ত, সেই সামর্থ তিনি অর্জন করেছেন সম্ভ্ৰম হারানো আড়াই লক্ষ মা-বোনের আশীর্বাদে। 

৭ জানুয়ারির নির্বাচন ছিল একটি অগ্নি পরীক্ষা। সেই পরীক্ষায় জাতি সফল হয়েছে আমাদের আপার নেতৃত্বে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়ার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আমি ছুটেছি বিভিন্ন নির্বাচন এলাকায়। পিরোজপুরের মন্দিরে মুগ্ধ হয়ে শুনছি মাননীয় মন্ত্রী শ. ম রেজাউল করিমের সাম্প্রদায়িক ঐক্যের দর্শন, আমি বিমোহিত হয়েছি বাঞ্ছারামপুরের জনসভাতে ক্যাপ্টেন তাজুল ইসলামের মানব কল্যাণ ও মুক্তির স্বপ্ন শুনে। আমি আনন্দিত হয়েছি আধুনিক শিবচরের প্রাণ প্রিয় নেতা মাননীয় চিফ হুইপ জনাব লিটন চৌধুরীর প্রতি এলাকার মানুষের ভালবাসা ও শ্রদ্ধা দেখে। জনগণ তাদের ভালোবাসায় সিক্ত করে নির্বাচিত করেছে তাদের আগামী দিনের নেতাকে যারা কেবল স্বপ্ন দেখায় না। বরং তারা পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু টানেল, মেট্রোরেল দিয়ে স্বপ্ন পূরণ করেছে। আগামী জুনের আগেই চালু হবে ঢাকা-কাশিয়ানী-গোপালগঞ্জ ও খুলনা ট্রেন সার্ভিস। চলন্ত ট্রেনে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে তারা থামতে পারেনি জনতার জোয়ার।

১৬ তারিখ সকালে গণভবনে গিয়েছিলাম প্রবাসী বাঙালিদের সম্মানে আয়োজিত শুভেচ্ছা বিনিময় সভাতে। ২৯টি দেশের প্রায় ১০০০ প্রবাসী সকলকেই মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সময় দিয়েছেন। তাদের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছেন, কথা বলেছেন। খুশি মনে ফিরে গেছেন নিজ নিজ পরবাসে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এই গণভবন আপনাদের যেমনটি বলেছেন ৭ জানুয়ারির বিজয় জনগণের। তাই মুক্তি ও শান্তির দূত শেখ হাসিনাকে হাজার সালাম। মুক্তি ও শান্তির দূত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন এক নতুন উচ্চতায়। ‘‘তোমরা দাবায় রাখতে পারবা না’’ অদম্য নেত্রীকে। বাঙালির অর্থনৈতিক মুক্তির অর্জনের স্বপ্নকে পারবা না দাবায় রাখতে। ৭১ এর মতো বিজয় বারবার ফিরে আসবে বাঙালির ঘরে ঘরে।স্মার্ট বাংলাদেশ একটি স্বপ্ন নয়, বাঙালি সেটি নির্মাণ করে দৃশ্যমান করবে সহসাই।    


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭