ইনসাইড বাংলাদেশ

বাংলাদেশকে চীন মুক্ত করার মিশনে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র


প্রকাশ: 19/01/2024


Thumbnail

৭ জানুয়ারি নির্বাচনের মাধ্যমে ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশে নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোট পঞ্চমবারের মতো এবং টানা চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। আর এই নতুন সরকার অভিষিক্ত হওয়ার পরপরই লক্ষ্য করা যাচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত তৎপর। দুই দেশের রাষ্ট্রদূতরা অত্যন্ত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। গত এক সপ্তাহেই দুই দেশের রাষ্ট্রদূতদেরকে দেখা গেছে সচিবালয়ে নবনিযুক্ত মন্ত্রীদের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের সাক্ষাত্কারে। অন্য দেশগুলো এই দৌড়ে বেশ পিছিয়ে পড়েছে। নির্বাচনের পরপরই ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা দেখা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে এবং দু দেশের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তা দেন তিনি।

নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর তিনি করবেন ভারতে। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি তার ভারত সফর করার কথা রয়েছে। এর পরপরই প্রণয় ভার্মা সাক্ষাৎ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এবং সেখানেও দুই দেশের বিভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। অন্যদিকে এই প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে নেই মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসও। পিটার ডি হাস নতুন সরকার শপথ গ্রহণের সাথে সাথে বঙ্গভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানান এবং তাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এরপর তিনি চলে যান ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের কাছে। সেখানে তার সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিভিন্ন সম্ভাবনার দিক নিয়ে আলোচনা করেন। 

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও সাক্ষাত করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের অংশীদারিত্বের সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে থেকে বলা হচ্ছে, ৭ জানুয়ারি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি। ঠিক সেই সময় পিটার ডি হাসের এই তৎপরতা কূটনৈতিক অঙ্গনে কৌতুহল সৃষ্টি করেছে। স্পষ্টতই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত অভিন্ন লক্ষ্য নিয়ে নতুন সরকারের সাথে কাজ করতে চাচ্ছে। সেই লক্ষ্যের অনেকগুলো শাখা প্রশাখা থাকলেও প্রধান লক্ষ্য হলো বাংলাদেশকে চীন থেকে মুক্ত করা। 

গত এক যুগে বাংলাদেশে চীনের অংশীদারিত্বও অনেক বেড়েছে। চীন এখন বাংলাদেশের অন্যতম অর্থনৈতিক অংশীদার।এদেশের প্রায় সবগুলো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে চীন প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে জড়িত। আর এ কারণেই চীনের প্রভাব নিয়ে অনেক পশ্চিমা দেশই উদ্বেগ প্রকাশ করে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত দু বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ নিয়ে যে আগ্রহ দেখাচ্ছে তার অন্যতম কারণ হল চীন কেন্দ্রিক শঙ্কা। বাংলাদেশ যদি চীনের বলয়ে প্রবেশ করে তাহলে এই অঞ্চলে মার্কিন প্রভাব ক্ষুন্ন হবে এবং চীনের প্রভাব বাড়বে। এ রকম আশঙ্কা থেকে বাংলাদেশের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাপ দিচ্ছে এমন ধারণা অনেকের। আর এ বারের নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ নিয়ে যে নেতিবাচক মনোভাব ছিল সেই নেতিবাচক মনোভাব থামাতে ভারত সরাসরি এবং স্পষ্ট ভূমিকা রেখেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আলোচনা করেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও কথা বলেছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ক্লিঙ্কেনের সঙ্গে। সব কিছু মিলিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত বাংলাদেশ নিয়ে একটি অভিন্ন কৌশল গ্রহণ করেছে এমন ধারণা কূটনীতিকদের। সেই কৌশলের একটি বড় বিষয় হলো চীনের প্রভাব বলয় থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করা। আর এ কারণেই হয়তো নতুন সরকার গঠিত হওয়ার পরপরই দুই রাষ্ট্রদূত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭