ইনসাইড থট

‘সুশীল সমাজ’ শব্দটি এক সময় ঘৃণিত শব্দে রূপান্তরিত হবে


প্রকাশ: 20/01/2024


Thumbnail

আমাদের দেশের সাধারণ নির্বাচন সঠিক সময়ে, সঠিক ভাবে এবং সাংবিধানিক উপায়ে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোটাররা তার পছন্দের প্রার্থীকেই ভোট দিতে পেরেছে। এর জন্য অনেক হেভিওয়েট প্রার্থীও নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। এর মধ্যে দলীয় প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীও রয়েছেন। আর বিশ্বও এই নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য বলেছে। কেউ কেউ একটু হয়তো সময় নিচ্ছে। কারণ কথায় আছে একটু দম ফেলে নিই। তেমনি তারা একটু অপেক্ষা করছে।

এখন আমাদের বিপদ দেশের সুশীল সমাজকে নিয়ে। এরা তো আসলে বেতন ভোগী। এদের মাস্টাররা এদের নিয়মিত টাকা দেয় এবং টাকার পরিবর্তে কি করতে হবে সেটাও তারা বলে দেয়। আমার ধারণা তারা দুই ভাবে বলে কি করতে হবে। এর মধ্যে একটা হলো তাদের একটা গাইড লাইন দেয়। অনেক সময় আবার দাঁড়ি, কমা সহ লিখে দেয়। সুতরাং তারা অর্থ নিবে আর কাজ করবে না এটা হয় না। তাদেরকে বলব এনাফ ইজ এনাফ। অনেক হয়েছে। আপনারা যারা নিজেদেরকে সুশীল সমাজ হিসেবে দাবি করেন একটা সময় এটাই আপনাদের জন্য কাল যাবে। যেমন আগে রাজাকার শব্দটি খারাপ ছিল না। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার শব্দটি ঘৃণিত হয়ে গেল। সুতরাং এই সুশীল সমাজ শব্দটিকে আপনারা ঘৃণিত শব্দে রূপান্তরিত করছেন। এই রূপান্তর ঠেকাতে হবে। এবার আপনারা একটু থামেন।

নতুন সরকার মাত্র দায়িত্ব গ্রহণ করেছে আর আপনারা আপনাদের মনগড়া লেখা লিখে যাচ্ছেন। আমার মতে, অন্তত প্রথম ১০০ দিন এই নতুন সরকারকে কাজ করতে দিন। কাজ করতে দেয়ার পর আপনারা এই সরকার নিয়ে যেভাবে আপনাদের মূল্যায়ন সেটা করেন। আপনাদের দৃষ্টিকোণ থেকেই আপনারা বিচার বিশ্লেষণ করেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত অযথা ইনিয়ে বিনিয়ে লেখা, নির্বাচনে কি হয়েছে না হয়েছে ইত্যাদি লেখা বাদ দেন। কারণ আপনারা যা বলেন তার কিছুই ঘটে না। আপনারা বলেছিলেন নির্বাচন হবেই না। কিন্তু নির্বাচন ঠিকই হয়েছে। আপনারা বিরোধী দলের মতো সরকার পতনের তারিখ পর্যন্ত ঠিক করে দেন। সেটাও হয়নি। আপনারা বলেছিলেন নির্বাচন যদি হয়েও যায় অনেক খুনাখুনি হবে, রক্তাক্ত হবে ইত্যাদি। কিন্তু এবারের নির্বাচনেই ইতিহাসের সবচেয়ে কম সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনও সুষ্ঠু হয়েছে। দেশে-বিদেশের শতাধিক পর্যবেক্ষক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে এমনই অভিমত ব্যাক্ত হরেছে। অর্থাৎ আপনারা যা আশঙ্কা করেছেন, আপনারা যা চেয়েছেন তার কিছুই হয়নি। খামাখা জাতির মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন। এজন্য আমার মনে হয় আপনাদের সুশীল না বলে খামামা সমাজ বললে মোটেও অনুচিত হবে না।

আমরা সাধারণ নাগরিক হিসেবে দেখতে চাই নতুন সরকারের নতুন মন্ত্রীরা কি পদক্ষেপ নিচ্ছে। তারা কিভাবে চলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কি পদক্ষেপ নেন এবং অনেকে যেমন বলেছেন আমরা জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করবেন বা ঘোষণা করেছেন আমরা সেটা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে চাই, আমরা সরকারকে কাজ করতে দিতে সময় দিতে চাই। পৃথিবীর কোন দেশেই আসলে জিরো টলারেন্স হয় না। কিছু কিছু অনৈতিক কাজ হবেই। কিন্তু সেটা খুব সামান্য হয়। তাতে দেশের অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক অথবা সামাজিক ভাবে কোন ক্ষতির কারণ হয়না। সুতরাং আমাদের দেশে নতুন মন্ত্রিসভা কি ভূমিকা রাখবে সেটা আমরা প্রত্যক্ষ করতে চাই। কিন্তু আপনাদের ওপর ভরসা রাখতে চাই না। কারণ আপনাদের আশঙ্কা, আপনাদের প্রেডিকশন কোন কাজের না।

সব মন্ত্রণালয় সম্পর্কে আমি হয়তো সব কিছু জানব না। এটা সম্ভবও হবে না। কিন্তু আমি যেহেতু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যুক্ত আছি। যিনি এবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়েছেন তিনি স্বাস্থ্য খাত সম্পর্কে দক্ষ। এটা আপনি অস্বীকার করতে পারবেন না। একটি মন্ত্রণালয় যেহেতু অনেক বড় সেজন্য হয়তো উনার একটু সময় লাগতে পারে সব কিছু পরিষ্কার ভাবে বুঝতে। কিন্তু স্বাস্থ্য খাতে উনার যে অবদান তা আমরা কেউই অস্বীকার করতে পারবো না। কাজের প্রতি উনার যে আন্তরিকতা তাতে এটা নিশ্চিত করে বলা যায় উনি যে দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্সের কথা বলেছেন সেটি তিনি নিশ্চিয় করবেন। একই ভাবে অন্যান্য যে মন্ত্রীরা তাদের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন সেটা তারা করবেন বলে আমি দৃঢ় বিশ্বাস করি। তবে আমাদের কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে, তাদেরকে কাজ করতে দেয়ার সময়টা দিতে হবে। শুধু গদবাধা সমালোচনা করলেই রাতারাতি কোন কিছুর পরিবর্তন হয় না। যা সুশীলরা চান। সুতরাং সুশীল সমাজকে আমি বলবো এবার আপনারা থামুন, একটু বিশ্রামে যান। সময় হলে অবশ্যই আপনারা আপনাদের দৃষ্টিকোণ থেকে মন্ত্রীদের মূল্যায়ন করবেন। এর আগে একটু থামুন, একটু অপেক্ষা করুন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭