হেসে-খেলে চট্টগ্রামকে হারালো খুলনা

লো স্কোরিং ম্যাচটা শেষ দিকে এসে একপাক্ষিকই হয়ে গেল যেন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ৪ উইকেটের সহজ জয় পেয়েছে খুলনা টাইগার্স। প্রথম ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে এবারের বিপিএলে শুভসূচনা করল খুলনা। 

মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে চট্টগ্রামকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় খুলনা টাইগার্স। ব্যাট করতে নেমে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি চট্টগ্রাম। ওপেনার আভিশকা ফার্নান্দো ফিরেছেন দলের ৯ রানের মাথায়, খেলেছেন ৯ বলে ৮ রানের ইনিংস। আরেক ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম শুরুতে কিছুটা ঝলক দেখালেও বড় করতে পারেননি ইনিংস। আউট হয়েছেন ১৩ বলে ১৯ রান করে। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভার থেকে ৩ উইকেট হারিয়ে ৪২ রান তোলে চট্টগ্রাম।

এরপর ধুঁকতে ধুঁকতে এগিয়ে চট্টগ্রামের ইনিংস। মাঝে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছেন ইবরাহিম জাদরান। তবে তার ইনিংসও খুব একটা লম্বা হয়নি। ২২ বলে ২৪ রান করে আউট হয়েছেন তিনি। ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিলে একের পর এক উইকেট হারিয়ে ১০০ রানের নিচে অলআউট হওয়ার উপক্রম হয়েছিল চট্টগ্রামের। তবে শেষ মুহূর্তে ত্রাতা হিসেবে দেখা দিলেন শহিদুল ইসলাম। ব্যাট হাতে দায়িত্ব নিয়ে ৩১ বলে ৪০ রানের ক্যামিও ইনিংস খেললেন শহিদুল, ১০০ পার করল চট্টগ্রাম। ১৯.৫ ওভারের মাথায় ১২১ রান তুলে অলআউট হয় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।

খুলনার হয়ে ১২ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন নাহিদুল ইসলাম। এছাড়া ৩ উইকেট নেন ফাহিম আশরাফ। ২ উইকেট তোলেন ওশান থমাস। ১ উইকেট নিয়েছেন নাসুম আহমেদ।

জবাব দিতে নেমে শুরুটা কিছুটা আগ্রাসীভাবে করেন খুলনার ওপেনার এভিন লুইস। তবে বেশিক্ষণ স্থায়ী হননি তিনি। ৬ বলে ১২ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। আরেক ওপেনার এনামুল হক বিজয়ও খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। ৮ বলে ৯ রান করে দলীয় ৩০ রানের মাথায় আউট হন তিনি। তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি শাই হোপ। ১১ বলে ৯ রান করেন তিনি। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভার থেকে ৩৫ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে খুলনা।

লক্ষ্যটা মামুলি হলেও দ্রুত বেশ কিছু উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় খুলনা। তবে সেই অস্থিতিশীল পরিস্থিতিটা সামাল দেওয়ার অভিযানে নামেন আফিফ হোসেন ধ্রুব এবং মাহমুদুল হাসান জয়। ধীরেসুস্থে সাবলীল ব্যাটিংয়ে দলের ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন দুজন। অযথা ঝুঁকি না নিয়ে দায়িত্বশীল ব্যাটিং করেছেন জয়-আফিফ। আর তাতেই এসেছে রান।

কার্যকরী ব্যাটিংয়ে দলের বোর্ডে রান তুলতে থাকেন জয় এবং আফিফ। দুজনের জুটিটা ভাঙে দলের ৭৮ রানের মাথায়। জুটি থেকে রান এসেছে ৪৬। ২৮ বলে ২৬ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন আফিফ। তবে সঙ্গীকে হারালেও দমে যাননি জয়। দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট হাতে বাকি কাজটুকু সারছিলেন তিনি। মাঝে হাবিবুর রহমান সোহান ব্যর্থ হলেও শেষ দিকে জয়ের সাথে দলের হাল ধরেন ফাহিম আশরাফ।

দলকে জয়ের একদম দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়ার পর আউট হয়েছেন জয়। দলের ১১৪ রানের মাথায় ৪৪ বলে ৩৯ রানে রিনিংস খেলে আউট হন মাহমুদুল হাসান জয়।

এরপর ফাহিম আশরাফ বেশ আরামেই সেরেছেন বাদবাকি কাজটা। ১০ বল এবং ৪ উইকেট হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় খুলনা। ৮ বলে ১৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন ফাহিম।

চট্টগ্রামের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন আল-আমিন হোসেন এবং শহিদুল ইসলাম। এছাড়া ১টি করে উইকেট তোলেন বিলাল খান এবং নিহাদউজ্জামান।

প্রথম ম্যাচে জিতে দ্বিতীয় ম্যাচে হারের স্বাদ পেল চট্টগ্রাম। অন্যদিকে প্রথম ম্যাচে জয় পেয়ে এবারের বিপিএলে শুভসূচনা করল খুলনা।