ইনসাইড পলিটিক্স

নতুন সরকারের কূটনৈতিক বিজয়: বিএনপি ধরাশায়ী


প্রকাশ: 21/01/2024


Thumbnail

নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর প্রথম কূটনৈতিক লড়াইয়ে জয়ী হল। বিএনপি প্রবলভাবে ধরাশায়ী হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন নতুন সরকারের সঙ্গে তারা কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারেনি। নির্বাচনকেন্দ্রিক লড়াইয়ের দুটি প্রেক্ষাপট ছিল। প্রথমত, নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। দ্বিতীয়ত, এই নির্বাচনে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। প্রথম লড়াইয়ে বিএনপি চেয়েছিল যেন ভোটাররা উপস্থিতি না হয়, ভোট বর্জন করে এবং নির্বাচন যেন শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত না হয়। এজন্য তারা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে নানা রকম ষড়যন্ত্র করেছিল। বিএনপির এই পরিকল্পনার অনেকগুলো ধাপ ছিল। তারা প্রথমে চেয়েছিল জাতিসংঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো সরকারকে নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে দেবে না। যেহেতু বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না, কাজেই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক নয় এমন একটি বক্তব্য রেখে তারা নির্বাচন না করার জন্য চাপ সৃষ্টি করবে। কিন্তু সেটি হয়নি। বিএনপির লক্ষ্য ছিল জনসংযোগ করা এবং ভোটারদের মধ্যে ভয় ভীতি ঢুকিয়ে দিয়ে এমন একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হবে যে পরিস্থিতিতে জনগণ ভোট দিতে যাবে না এবং এই নির্বাচনকে নিয়ে তারা প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ পাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে ৪০ শতাংশের বেশি ভোট পড়ায় বিএনপির সেই পরিকল্পনাও ভেস্তে যায়।  

বিএনপির দ্বিতীয় ধাপের পরিকল্পনা ছিল আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। মূলত বিএনপি এটির ওপরই বেশি জোর দিয়েছিল। আন্তর্জাতিক মহল যেন এই নির্বাচনকে স্বীকৃতি না দেয়, গ্রহণযোগ্যতা না দেয় এবং পুনরায় নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ দেয় এটি ছিল বিএনপির লক্ষ্য। এ জন্য বিএনপি ব্যাপক লবিং করেছিল, চালিয়েছিল কূটনৈতিক তৎপরতা। বিএনপি আশা করেছিল নির্বাচনের পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা দেশগুলো নানা রকম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে এবং এই নিষেধাজ্ঞার ফলে সরকার স্বীকৃতি সঙ্কটে পড়বে। নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেবে পশ্চিমা দেশগুলো। ফলে বিশ্বে একঘরে হয়ে যাবে সরকার। এমনকি তারা একটি প্রবাসী সরকার গঠনেরও পরিকল্পনা নিয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনের পরে নীরব কূনৈতিক লড়াইয়ে আওয়ামী লীগ বিএনপিকে ধরাশায়ী করল খুব অল্পদিনের মধ্যে। 

নির্বাচনের পরপরই প্রথম স্বীকৃতি পাওয়া গিয়েছিল চীন, রাশিয়া এবং ভারতের কাছ থেকে। নির্বাচনের পরপরই তিনটি দেশ সরকারকে অভিনন্দন জানাই। ১১ জানুয়ারি নতুন সরকার গঠিত হওয়ার পরপরই একের পর এক বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানাতে থাকে। এমনকি ইউরোপিয় ইউনিয়ন নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদিও নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ হিসাবে বলেছে, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি বলে দাবি করেছে। কিন্তু তারপরও ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বঙ্গভবনে শপথের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন এবং বিভিন্ন মন্ত্রীদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছেন। এরকম বাস্তবতায় বাংলাদেশের নির্বাচন এবং নতুন সরকারের স্বীকৃতি সঙ্কট কেটে গেছে। সবচেয়ে বড় কথা হল জাতিসংঘের মহাসচিব বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে টানা চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে সমস্ত সঙ্কট এবং সংশয় কেটে গেল।

একাধিক সূত্র বলছে, বিএনপি শত শত কোটি টাকা খরচ করে বিভিন্ন লবিস্ট ফার্ম নিযুক্ত করেছিল, যারা চেষ্টা করেছিল নির্বাচনের এই নির্বাচন সঠিক হয়নি, এই নির্বাচন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে হয়নি ইত্যাদি কথা বলে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে এবং বিভিন্ন দেশ যেন নতুন সরকারকে স্বীকৃতি না দেয় সেজন্য চেষ্টা করবে। কিন্তু সেই ভেস্তে গেছে। যার ফলে প্রথম কূটনৈতিক লড়াইয়ে বিএনপি ভালো ভাবে পরাজিত হয়েছে আওয়ামী লীগের কাছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭