ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিকে কংগ্রেস মডেল অনুসরণের পরামর্শ


প্রকাশ: 21/01/2024


Thumbnail

১০ বছর আগে ভারতের নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর কংগ্রেস পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সেসময় সোনিয়া গান্ধী দলের সভাপতির পদ ছেড়ে তার পুত্র রাহুল গান্ধীকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কংগ্রেস আশা করেছিল, রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে তারা একটা নতুন জীবন পাবে এবং নরেন্দ্র মোদির রাজত্বের অবসান ঘটবে। কিন্তু পরপর দুটি নির্বাচনে পরাজিত হয় কংগ্রেস। শুধু তাই নয়, কংগ্রেসের সাংগঠনিক এবং রাজনৈতিক অবস্থা সঙ্কুচিত হতে থাকে। এ রকম পরিস্থিতিতে রাহুল গান্ধীর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে খোদ কংগ্রেসে। এমনকী দলের সিনিয়র নেতারা রাহুল গান্ধীকে ভবিষ্যতের নেতা হিসেবে ভাবতে হতাশা প্রকাশ করেন। এই বাস্তবতায় শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস তার পারিবারিক উত্তরাধিকারের রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ায় এবং দলের একজন প্রবীণ নেতাকে সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন দেয়। এখন তার নেতৃত্বে কংগ্রেস চলছে। 

রাহুল গান্ধী বুদ্ধিমান। তিনি বুঝেছিলেন, তার নেতৃত্ব এখন সাধারণ মানুষ গ্রহণ করছে না। এমনকী তাদের সামনে বিকল্প ছিল প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তিনিও দলের হাল ধরতে রাজি হননি। যদিও এখনও কংগ্রেসে গান্ধী পরিবারের একটা বড় রকম প্রভাব রয়েছে এবং গান্ধী পরিবারই কংগ্রেসের নিয়ামক শক্তি। কিন্তু তারপরও কংগ্রেসের নেতৃত্বে এখন একজন বিদগ্ধ প্রবীণ রাজনীতিবিদ। এটির মাধ্যমে কংগ্রেস কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। ইন্ডিয়া জোট গঠন করেছে। যদিও আন্তর্জাতিক নির্বাচন বিশ্লেষকরা টানা তৃতীয়বারের মতো নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা দেখছে উজ্জ্বল ভাবে। কংগ্রেসকে আরও সময় নিতে হবে এবং তাদের নেতৃত্বের খোলনলচে পাল্টে ফেলতে হবে। জনবান্ধব হতে হবে এবং জনগণের কাছে আস্থা সৃষ্টি করতে হবে এমনটি মনে করা হয় কংগ্রেস সম্পর্কে। 

ঠিক তেমনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে ২০০১ সালের পর উত্থান ঘটে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার। তারেক জিয়া হয়ে ওঠে অঘোষিত বিএনপির নেতা। এরপর এক-এগারোর ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় বিএনপির সাজানো বাগান। তারেক জিয়া রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে পাড়ি জমান এবং সেখানে গিয়ে তিনি আবার নতুন করে রাজনীতি শুরু করতে থাকেন। এর মধ্যে খালেদা জিয়ার দুটি মামলায় দণ্ড হওয়ার পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তারেক জিয়া। যদিও বিএনপির গঠনতন্ত্র ছিল দণ্ডিত কোন ব্যক্তি রাজনীতি করতে পারবে না। কিন্তু তারপরও বেগম খালেদা জিয়ার স্থলাভিষিক্ত হন তারেক জিয়া, যিনি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত। তার এই দ্বন্দ্বের পরও তাকে নেতৃত্ব নির্বাচনের করার জন্য বিএনপির গঠনতন্ত্র সংশোধন করে। এখন দেখা যাচ্ছে পর পর দুটি নির্বাচনে বিএনপির বিপর্যস্ত হল এবং এই বিপর্যয়ের পেছনে তারেক জিয়ার রাজনৈতিক কৌশল, অদক্ষতা, অযোগ্যতা এবং ভুল সিদ্ধান্ত দায়ী বলে বিএনপির নেতারাই দাবি করেন। আর এ কারণেই এখন বিএনপির মধ্যে দাবি উঠেছে নেতৃত্ব পরিবর্তনের। 

বিএনপির অনেকে মনে করছে কংগ্রেসের নীতি অনুসরণ করা উচিত বিএনপিতে। বিএনপিতে অনেক যোগ্য এবং রাজনৈতিক ভাবে বিচক্ষণ নেতা রয়েছেন। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস এমনকি ড. আব্দুল মঈন খান বা আমীর খসরু মাহমুদও তারেক জিয়ার চেয়ে ঢের বিএনপি ভালো চালাতে পারেন এমন বক্তব্য শোনা যাচ্ছে অনেকের মুখ থেকে। আর এ কারণেই বিএনপিকে অনেকে পরামর্শ দিচ্ছে কংগ্রেস মডেল অনসরণ করার, যেখানে জিয়া পরিবার থাকবে বটে কিন্তু নেতৃত্বে থাকবেন নিরপেক্ষ কোন ব্যক্তি।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭