ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচনকে যারা প্রশ্নবিদ্ধ করবে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেবে আওয়ামী লীগ


প্রকাশ: 21/01/2024


Thumbnail

এবার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অনেক দলীয় প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন। স্বতন্ত্রদের কাছে পরাজয়ের পর তারা নির্বাচনকে নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইছেন। অনেক পরাজিত প্রার্থী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে, জাল ভোট হয়েছে, এমনকি কেউ কেউ বলেছেন, অলৌকিকভাবে তাদের হারানো হয়েছে। এই ধরনের প্রশ্ন যারা সৃষ্টি করছেন তাদেরকে সতর্ক করা হবে। 

আগামীকাল সোমবার সন্ধ্যা ছয় টায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। এই বৈঠকের প্রধান তিনটি উদ্দেশ্য হল ক) দলীয় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দল বন্ধ করা। ২) নির্বাচনকে কেউ যেন প্রশ্নবিদ্ধ না করে সে ব্যাপারে দলের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান এবং ৩) উপজেলা নির্বাচনের কৌশল নির্ধারণ। আর এই তিনটি বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের মতামত যেমন নেওয়া হবে, তেমনই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিষয়ে নীতিনির্ধারণী বক্তব্য দেবেন এবং সুস্পষ্ট নির্দেশনার কথা জানাবেন। 

গত ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবার নিরঙ্কুশভাবে বিজয়ী হয়েছে। টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে দলটি। আর এই নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর আওয়ামী লীগের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং বিশৃঙ্খল অবস্থা নিয়ন্ত্রণ। এবার নির্বাচন আওয়ামী লীগ উন্মুক্ত করে দিয়েছিল। এই উন্মুক্ত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের যারা মনোনয়ন পাননি, তারা স্বতন্ত্রভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। আর এই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছে আওয়ামী লীগের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা পরাজয় বরণ করেছেন। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় যেটি সেটি হল স্বতন্ত্রদের সাথে আওয়ামী লীগের এই নির্বাচনী লড়াই এখন সারা দেশে কোন্দল রূপে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক জায়গায় সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। নির্বাচনের পর থেকে এ পর্যন্ত দেড় হাজারের মতো সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। 

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য এবং কোন্দল পরিহার করে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার বার্তা দিয়েছেন। কিন্তু তারপরও সহিংসতা কমেনি। আর এ কারণেই আগামীকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে এবং এ ব্যাপারে এক সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। 

নির্বাচনের পর দেখা গেছে, বিএনপি-জামায়াত এবং কিছু সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। আর এই চেষ্টায় বাতাস দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের কিছু পরাজিত প্রার্থী, যারা নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে, কারচুপি হচ্ছে ইত্যাদি নানা রকম অভিযোগ করছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা যখন এই ধরনের অভিযোগ করে, তখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার গ্রহণযোগ্যতা পায়। 

আওয়ামী লীগ সভাপতি ইতোমধ্যে বলেছেন, ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হয়েছে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। স্বাধীনতার পর এটি অন্যতম সেরা নির্বাচন বলে মনে করে আওয়ামী লীগ। এই অবস্থায় যে সমস্ত প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন তাদেরকে পরাজয় মেনে নেওয়ার বার্তা দেওয়া হবে। যদি তারা পরাজয় মেনে না নেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারি জানানো হবে কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে।

বিভিন্ন প্রার্থীরা যারা নির্বাচনকে নিয়ে নানা রকম প্রশ্ন করছেন তাদেরকে সতর্ক হওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হবে। জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে সামনে উপজেলা নির্বাচন কোন প্রক্রিয়ায় হবে? এটি কি উন্মূক্ত করে দেওয়া হবে নাকি এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করা হবে এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত দিবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। এছাড়াও সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের ব্যাপারেও কথা বলবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, বিরোধী দল কারা হবেন এ ব্যাপারেও আলোচনা হতে পারে। তবে সে আলোচনা শেষ পর্যন্ত হবে কিনা তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭