এডিটর’স মাইন্ড

স্বতন্ত্রদের কেন ডাকলেন প্রধানমন্ত্রী


প্রকাশ: 24/01/2024


Thumbnail

আগামী ২৮ জানুয়ারি রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচিত ৬২ জন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যকে গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। স্বতন্ত্রদের গণভবনে আমন্ত্রণ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। অবশ্য এবার যারা স্বতন্ত্র নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের সমর্থক অথবা নেতাকর্মী। তারা বিভিন্ন কারণে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। তবে এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের একটি অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হল স্বতন্ত্র বিপ্লব। কারণ এবারের সংসদে যত জন স্বতন্ত্র নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ইতিহাসে এত জন স্বতন্ত্র  অতীতে আর কখনও নির্বাচিত হননি। তাই স্বতন্ত্ররা এবার একটি বড় ফ্যাক্টর। এমনকী জাতীয় পার্টির চেয়ে তারা বেশি আসন পেয়েছে। স্বতন্ত্র চাইলে বিরোধী মোর্চা গঠন করতে পারে কিন্তু এখন পর্যন্ত স্বতন্ত্রদের কোন মোর্চা হয়েছে বলে জানা যায়নি। 

অন্যদিকে জাতীয় পার্টিকে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিরোধী দলের স্বীকৃতি দেওয়ার কথাও শোনা যাচ্ছে। যদিও জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী এটা কতটুকু সম্ভব সে নিয়ে অনেক সংবিধান বিশেষজ্ঞ এবং আইনজ্ঞদের প্রশ্ন রয়েছে। তবে স্বতন্ত্ররা বিরোধীদল হবে, কি হবে না সেটা পরের ব্যাপার। কিন্তু স্বতন্ত্রদের একটি বড় অংশই আওয়ামী লীগের একান্ত অনুগত এবং আবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার আশাবাদ ব্যক্ত করছেন। তারা মনে করছেন, শেখ হাসিনাই তাদের নেতা এবং শেখ হাসিনা তাদেরকে যেভাবে নির্দেশনা দেবেন সেভাবেই তারা কাজ করবে। এরকম বিভিন্ন যখন আলোচনা তখন স্বতন্ত্রদের গণভবনে আমন্ত্রণের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবারের নির্বাচনে স্বতন্ত্রদের গুরুত্ব যেমন আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিলেন, তেমনই স্বতন্ত্রদের কাছে তার যে প্রত্যাশা সেটিও তিনি তাদেরকে জানাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, স্বতন্ত্রদেরকে গণভবনে ডাকার পিছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে। প্রথমত, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সংরক্ষিত মহিলা আসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংসদে আসন প্রাপ্তির সমানুপাতিক হারে সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচন করা হবে। সে হিসাবে আওয়ামী লীগ ৩৭ জন সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য মনোনয়ন দিতে পারবে। অন্যদিকে স্বতন্ত্ররা পারবে ১১ টি। ১১ টি সংসদ সদস্য পদে তাদেরকে মনোনয়ন দেওয়া হবে সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী স্বতন্ত্রদের একটি দিক নির্দেশনা দিতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রতি ছয়জন সংসদ সদস্য একজন করে স্বতন্ত্র প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারবে। এক্ষেত্রে যারা স্বতন্ত্র হয়েছেন তারা সবাই কোন না কোন ভাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত, কাজেই আওয়ামী লীগ সভাপতি তাদেরকে যেভাবে দিক নির্দেশনা দেবেন, সেভাবে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

দ্বিতীয়ত, এবার জাতীয় সংসদে বিরোধী দল নিয়ে একটি ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বতন্ত্রদের স্বতন্ত্র অবস্থানে থেকে জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দল হিসেবে সমর্থন দেওয়ার বার্তাও দিতে পারেন। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি এ ধরনের বার্তা দেবেন কি না এব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

তৃতীয়ত, স্বতন্ত্রদের সংসদে ভূমিকার ব্যাপারেও প্রধানমন্ত্রী তাদেরকে অবহিত করবেন। স্বতন্ত্ররা যেন স্বতন্ত্রভাবেই কাজ করে, সব সময় সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করে, ভালো কাজের প্রশংসা করে এবং সদস্য হিসেবে তারা যেন দেশের এবং তাদেরকে যারা ভোট দিয়েছেন তাদের মুখ উজ্জ্বল করে সেই বার্তাটাও প্রধানমন্ত্রী দিবেন। একই সাথে এই নির্বাচন ফসল করার জন্য এবারে স্বতন্ত্রদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। সেই ভূমিকার কথা তাদেরকে স্মরণ করিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানাবেন প্রধানমন্ত্রী। তবে এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে একটি বিষয় সুস্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে তা হলো স্বতন্ত্ররা আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ট হিসেবেই সংসদে কাজ করবেন। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭