ইনসাইড বাংলাদেশ

সংসদে স্বতন্ত্র ভূমিকা নিয়ে ত্রিমুখী অবস্থান


প্রকাশ: 25/01/2024


Thumbnail

জাতীয় সংসদে যারা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত হয়েছেন, তাদেরকে আগামী রোববার (২৮ জানুয়ারি) গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বতন্ত্রদের ভূমিকা কি হবে এবং স্বতন্ত্ররা জাতীয় সংসদে কিভাবে কাজ করবেন সে সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাশপাশি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সফল করার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য স্বতন্ত্রদের ধন্যবাদও জানাবেন এই বৈঠকে। তবে যারা স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন, তারা জাতীয় সংসদে কি ভূমিকা নেবেন এ নিয়ে তাদের মধ্যে মতভিন্নতা রয়েছে। 

স্বতন্ত্ররা কি ধরনের ভূমিকা নিতে পারেন—এ নিয়ে তিন রকম অবস্থানের কথা পাওয়া গেছে। কিছু কিছু স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য বলছেন, তারা আওয়ামী লীগেরই সন্তান। আওয়ামী লীগের ঘরের ছেলে। কাজেই আওয়ামী লীগার হিসেবেই তারা কাজ করতে চান। তারা খুশি হবেন যদি আওয়ামী লীগ তাদেরকে আত্তীকরণ করে। অর্থাৎ তারা আওয়ামী লীগে আবার যোগদান করে। স্বতন্ত্রের তকমা মুছে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হিসাবেই থাকতে চান। এদের অনেকেই মনে করেন, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হিসাবে না থাকলে ভবিষ্যতে মনোনয়ন পাওয়া এবং আগামী দিনে কিছু চাওয়া পাওয়ার হিসাব মেলানো কঠিন হয়ে যাবে। এ কারণে তারা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত করলেও আওয়ামী লীগের এমপি হিসেবে থাকতে চান। 

দ্বিতীয় একটি পক্ষ আছেন, যারা মনে করেন স্বতন্ত্র হিসেবে তারা নির্বাচিত হয়েছেন, জনগণ স্বতন্ত্র হিসেবে তাদেরকে ভোট দিয়েছেন। কাজেই জাতীয় সংসদে তাদের একটা বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করার সুযোগ আছে। তারা জাতির কণ্ঠস্বর হিসেবে থাকতে চান। জনগণের বিবেক হিসেবে সংসদে কথা বলতে চান। সরকারের ভাল কাজ যেমন তারা প্রশংসা করবেন, তেমনই খারাপ কাজের সমালোচনা করবেন। এই নীতি নিয়ে তারা জাতীয় সংসদে একটি প্রাঞ্জল এবং অর্থবহ অবস্থান নিয়ে দাঁড়াতে চান। তারা মনে করেন, জনগণের কাছে তাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। জনগণ তাদেরকে নির্বাচিত করেছে সংসদ সদস্য হিসেবে এবং জনগণ তাদের কাছে প্রত্যাশা করে যে, তারা জনগণের কথাগুলো বলবেন এবং জনগণের দুঃখ কষ্টের কথাগুলো নির্ভয়ে বলা বলার জন্যই তারা সংসদে কথা বলতে চান। যেহেতু তাদের ক্ষেত্রে সংবিধানের ৭০ প্রযোজ্য হবে না, সেজন্য তারা স্বাধীন। এই স্বাধীনতাটুকু তারা উপভোগ করতে চান।

আবার তৃতীয় যে অংশটি রয়েছে তারা মনে করেন স্বতন্ত্ররা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন। কাজেই জাতীয় সংসদে তাদের ভূমিকা হওয়া উচিত বিরোধী দলের। যেহেতু এখন জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি স্বতন্ত্রদের মোট সংখ্যার চেয়ে কম, কাজেই বিরোধী দল হিসেবে স্বতন্ত্র উপযুক্ত এবং স্বতন্ত্রদের একটি বলিষ্ঠ ভূমিকা নেওয়া উচিত। 

সরকারের সমালোচনা করা বিশেষ করে যারা দুর্নীতি অনিয়ম করবে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলা এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, অর্থনীতির বিভিন্ন ত্রুটি বিচ্যুতি নিয়ে তারা সংসদে কথা বলতে চান এবং বিরোধী দলের ভূমিকায় অবর্তীণ হতে চান। তবে এবার যারা স্বতন্ত্র হয়েছেন তাদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগেরই বিদ্রোহী প্রার্থী, তারা এখনো আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদ পদবীতে আছেন। কাজেই তারা দ্বিতীয় এবং তৃতীয় অবস্থানে কতটুকু থাকতে পারবেন সেটি নিয়ে অনেকের সন্দেহ রয়েছে। তবে স্বতন্ত্রদের কেউ কেউ আছেন যারা যখন আওয়ামী লীগে ছিলেন তখনো আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করতেন। তারা কিছু কিছু বিষয়ে তাদেরদের স্বতন্ত্র অবস্থান জাতীয় সংসদে দেখাতে চান। আগামী রোববার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরই বুঝা যাবে যে তারা আসলে কি করবেন এবং প্রধানমন্ত্রী তাদেরকে কি ধরনের নির্দেশনা দিবেন। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭