ইনসাইড বাংলাদেশ

দেশীয় পণ্যের চাহিদা খোঁজার নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী


প্রকাশ: 26/01/2024


Thumbnail

সরকার আগামী ২০২৬ সালের মধ্যে রপ্তানি পণ্যে নগদ প্রণোদনা সুবিধা পর্যায়ক্রমে তুলে নিতে চায়। এ জন্য নতুন কোনো প্রতিষ্ঠানকে নগদ প্রণোদনার তালিকাভুক্ত করছে না অর্থ বিভাগ। এতে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে নতুন রপ্তানিকারকদের। এই পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে দেশীয় পণ্যের চাহিদা খোঁজার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের পর গতকাল বৃহস্পতিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর প্রথম বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ও অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

 বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ২০২৬ সালে এলডিসি উত্তরণের পরে বাংলাদেশের শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা হারানোর কথা রয়েছে। এরপর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশকেও শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা ছাড়াই ব্যবসা-বাণিজ্য করতে হবে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী রপ্তানি পণ্যের জন্য নগদ প্রণোদনা বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। নগদ প্রণোদনা বন্ধ হওয়ার পর কিভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে টিকে থাকা যায়, সে বিষয়ে বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দেশীয় পণ্যের চাহিদাটা খুঁজে বের করতে এবং উৎপাদন বাড়াতে হবে। প্রত্যেকটি কূটনৈতিক মিশনের কর্মকর্তাদের এ বার্তা পৌঁছানোর কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী বৈদেশিক আয় বাড়াতে তৈরি পোশাকের মতো পাট ও চামড়াজাত পণ্য, ওষুধ, তথ্য-প্রযুক্তি পণ্য, হস্তশিল্পসহ অন্যান্য রপ্তানি পণ্যে একই গুরুত্ব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা একটি গণমাধ্যমকে বলেন, প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ অনেক দেশেই রপ্তানিতে নগদ সহায়তা দেওয়া হয় না। সেই পথে হাঁটছে বাংলাদেশও। চলতি বছর রপ্তানিকারক যেসব প্রতিষ্ঠান প্রণোদনার জন্য আবেদন করেছে, তাদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এসব প্রতিষ্ঠান প্রণোদনার জন্য নানাভাবে তদবির করার পরও তাদের প্রণোদনা তালিকায় যুক্ত করেনি অর্থ বিভাগ। কারণ আগামী ২০২৬ সালের মধ্যে রপ্তানি পণ্যে নগদ প্রণোদনা সুবিধা পর্যায়ক্রমে তুলে নিতে চায় সরকার।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, নগদ সহায়তা বাতিল হলে রপ্তানিতে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে কি না, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি বিকল্প সুবিধাগুলো কী হতে পারে, কাজ করছে তা নিয়েও। এ ক্ষেত্রে পরিবহন এবং সেচকাজে জ্বালানি খরচ কমানো বা অন্য কোনো সুবিধা দেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে কাজ করবে সরকার।

জানা যায়, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪৩ ধরনের পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তা দিচ্ছে সরকার। এসব পণ্য রপ্তানিতে ১ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত নগদ সহায়তা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৮ পণ্য রপ্তানিতে মিলছে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ নগদ সহায়তা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে ৬ খাতের পণ্য রপ্তানিতে। এ ছাড়া ১০ শতাংশ প্রণোদনা মিলছে বেশ কয়েকটি খাতে। এর বাইরে নতুন পণ্য বা নতুন বাজার সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে ৪ শতাংশ হারে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। নতুন মন্ত্রীদের প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকেও এ বিষয়ে বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সব কিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ বা এলডিসি তকমা কাটিয়ে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পাবে বাংলাদেশ। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডাব্লিউটিও) নিয়ম অনুযায়ী, উন্নয়নশীল দেশ হলে তখন আর রপ্তানিতে নগদ সহায়তা কিংবা ভর্তুকি দেওয়া যায় না। সংস্থাটির সদস্য হওয়ায় এ নিয়ম মানার বাধ্যবাধকতা রয়েছে বাংলাদেশের। মূলত এ কারণেই নগদ সহায়তা উঠিয়ে দিতে চায় সরকার। এলডিসি থেকে বের হতে পারলে উজ্জ্বল হবে দেশের ভাবমূর্তি। ক্রেডিট রেটিং উন্নত হওয়ায় সহজ হবে বিদেশি ঋণ পাওয়া। বাড়বে সরাসরি বিদেশি বিনিযোগ বা এফডিআইও।





প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭