ইনসাইড থট

হারানো পথ ফিরে পাচ্ছে না বিএনপি


প্রকাশ: 27/01/2024


Thumbnail

বর্তমানে বিভিন্ন মিডিয়াতে বলা হচ্ছে যে, রাজপথে সরকারি দল আওয়ামী লীগ আছে, এর সাথে আন্দোলনের জন্যে বিএনপিও আছে। অধিকাংশ মিডিয়ার মতামত হচ্ছে যে, এতে তারা বড় ধরণের কোনও সংঘর্ষের আশঙ্কা করে না। কিন্তু, আমরা একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে বুঝি যে, এই ৭ জানুয়ারিতে নির্বাচন হল। নির্বাচন হওয়ার পরে সরকার গঠন করা হয়েছে এবং ফার্স্ট পার্লামেন্টের তারিখও ঘোষণা করা হয়েছে। সুতরাং, মোটামুটিভাবে দেশের শাসনক্ষমতায় এখন আওয়ামী লীগ। আর রাজপথে রয়েছে বিএনপি। 

এখন প্রশ্ন ওঠে যে, এই সময়ে রাজপথে বিএনপি কেন আসছে? এটা একটা বিরাট প্রশ্ন। কারণ, রাজপথে থাকার কতগুলি পরিবেশ লাগে, কতগুলি আকাঙ্ক্ষা লাগে। তারা ভালভাবে জানে যে, এই ভাবে রাজপথে থেকে যারা সরকার পরিচালনা করছেন তাদেরকে কিছুই করা যাবে না। কারণ, রাজপথে আওয়ামী লীগের যেসব কর্মীরা আছে, আমার ধারণা তারা তাদের নিজের উদ্দেশ্য আছে। সে উদ্দেশ্য কী? এবার যে নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে আওয়ামী লীগ একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করল। নির্বাচনটাকে খুব জমজমাট করার জন্যে যে, এদের বিরুদ্ধে কোনও অ্যাকশন নেওয়া হবে না। তার ফলে আওয়ামী লীগের ভিতরে অনেক বিভক্তি এসেছে। সুতরাং, তারা যদি রাজপথে থাকে এবং বিশেষ করে রাজপথে যদি তারা একটি এমন দল পায় যারা তাদেরকে সমর্থন করে না, তাহলে আওয়ামী লীগের চরিত্র হচ্ছে তারা কাছাকাছি এসে যায়। সুতরাং, আমি তো বিএনপিকে রাজপথে থাকার সবচেয়ে বড় একটি বেনিফিশিয়ারি দেখি তা হলো আওয়ামী লীগ। কারণ, যেহেতু বিএনপি রাজপথে আছে। সুতরাং আওয়ামী লীগ নিজেদের ভিতরে ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে তারাও রাজপথে থাকবে, শান্তির মিছিল করবে। আর আইন রক্ষাকারী সংস্থা তাদের মতো করে দেখবে। এতদিন যেভাবে বিএনপি আন্দোলন করে চলেছে, তাতে বিএনপির একজন দীর্ঘদিনের রাজনীতিককে দেখেছি, প্রায় ৬২ বছর ধরে। তাতে আমার মতো হয়তো অনেকের আশা ছিল যে, এই সময়ে বিএনপি তাদের বিগত আন্দোলনগুলি কেন কোনও সুফল অর্জন করতে পারল না? এমনকি ছোট আকারে না। সেই বিষয়গুলি বরং তারা আলাপ-আলোচনা করবে। প্রয়োজনে তারা বিভিন্ন জায়গায় তাদের দলকে অর্গানাইজ করবে এবং এই দলকে অর্গানাইজ করতে যখন একটা জেলায় যাবে, এমনকি সম্ভব হলে থানা উপজেলা পর্যন্ত যাবে। সেখানে গিয়ে তারা সরকারের সমালোচনা করবে এবং বিভিন্ন কিছু করবে, যাতে তাদের দলও সংগঠিত হয়। একই সাথে আন্দোলন ঠিক না হলেও তারা সরকারের যে কোনো দোষ-ত্রুটি দেখিয়ে দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। আর নিজেদের কর্মীদের উজ্জীবিত করবে এখনও। তা না করে তারা কালো পতাকা, এটা ওটা করছে। এটার মানে কী রকম? মনে হয় যে, এরা যেন আন্দোলনের গ্রামার ভুলে গেছে। গ্রামারবিহীন যে রকম কোন ভাষা সঠিক ভাবে লেখা যায় না, ঠিক তেমনিভাবে বিএনপি এখন যে আন্দোলন করছে এই আন্দোলনের কোন লক্ষ্য ঠিক নাই। লেখার যেমন প্রথম তো একটা হেডিংও থাকে, হেডিংও ঠিক নয়, তার যে টেক্সট থাকে অর্থাৎ অর্থাৎ আন্দোলন যে চলবে তারও কোন দিক নির্দেশনা সঠিক নাই।

পরিশেষে বলা চলে যে, আসলে বিএনপি আন্দোলনের নামে যেটা করছে সেটা বলা চলে যে, আমাদের তো হাসির খোরাক অনেক কম, এটা অনেকেরই হাসির খোরাক জোগাবে। অনেকে আবার এখন এই সব ব্যপারে হাসিও ভুলে যায়, তারা এসব বোদারই করে না। শুধু দেখেন যে, বিভিন্ন মিডিয়া আছে এবং অসংখ্য মিডিয়া এবং বিশেষ করে কিছু টেলিভিশন মিডিয়া আছে যারা খাঁটি বিএনপিকে ওন করে। তারা এই সব কিছু খবর দিয়ে দলটাকে বাঁচিয়ে রাখা। এটা মুসলিম লীগও যেরকমভাবে এখন আর কোনও পত্রিকায় লেখে না। সুতরাং, তারা মারা গেছে। তবুও দুই একটা, যেমন নূরের কোন আদর্শ নাই, কিছু নাই একটা রোম্যান্টিসিজম নিয়ে একটু দল করেছিল। কয়েকটা ভাগ হয়ে সে রোম্যান্টিসিজম কমে গেছে। তাদের এখন মাঠে দেখা যায় না। আসলে আদর্শবিহীন কোনও রাজনীতি আর হয় না। 

যেহেতু বিএনপি কোনো আদর্শ নিয়ে এখন আন্দোলনও করছে না, রাজনীতিও করছে না। তাদের যদি আদর্শ থাকতো, তাদের যদি দর্শন থাকত, একটা দার্শনিক ভিত্তি থাকত তাহলে তারা আন্দালনে গতি পেত। এটা আওয়ামী লীগ প্রধান দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার আছে। তিনি একটি দর্শন নিয়ে রাজনীতি করেন। সুতরাং, তিনি ওই দর্শনটা অর্জন করতে চান। আর বিএনপি যেহেতু কোন দর্শনও নাই, কোনো আদর্শ কী আছে তাও তারা ভুলে গেছে, এমতাবস্থায় এই আন্দোলনে শুধুমাত্র তাদের মিডিয়ার যে কবলে কে কী বলছে সেটা কিছু ছাপা হবে এবং এরকমভাবে যদি চলতে থাকে আশা করা যায় দুই তিন বছর ভিতরে তাদেরটাও ছাপানোর মিডিয়াতে প্রচার করার আর সুযোগ পাওয়া যাবে না।

সুতরাং, আমি মনে করি যে, বিএনপি সম্পূর্ণরূপে যে কোনও রাজনৈতিক দৃষ্টিতে একটি পথ হারানো দলে পরিণত হয়েছে। যে পথিক জানে না কোথায় সে পৌঁছাবে তার জন্য সমস্ত পথই এক। সে বামে গেলেও যা, ডানে গেলেও তা, সোজা গেলেও তা। এখন মোটামুটিভাবে বিএনপিকে বলা চলে যে, তারা পথ হারানো একটি রাজনৈতিক দল। ফরিদা পারভিনের গানের একটা লাইন আছে, ‘পথের মাঝে পথ হারালে আর কি ফিরে পাওয়া যায়।’ তা আমার মনে হয়, তারা সেই পথের মাঝে পথ হারিয়েছে, এখন আর পথ ফিরে পাচ্ছে না।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭