ইনসাইড বাংলাদেশ

রাখাইনে গোলাগুলি নেই, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে সতর্কতা


প্রকাশ: 28/01/2024


Thumbnail

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে গোলাগুলি এবং সংঘর্ষ বন্ধ রয়েছে, পরিস্থিতিও থমথমে। অন্যদিকে রোহিঙ্গারা যাতে নতুন করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ না করে, সে জন্য বিজিবি সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সূত্রগুলো বলছে, রাখাইনে চলমান সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গারা বিচ্ছিন্নভাবে দু-এক দিন ধরে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছে। তবে সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার হওয়ায় মিয়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠী পুনরায় আদিনিবাসে ফিরে গেছে। এর আগে গত শুক্রবার রাখাইনের বুচিডং ও ফুমালি এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ে।

রাখাইন ও কক্সবাজারের স্থানীয় সূত্র গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, গতকালও রোহিঙ্গারা প্রাণ বাঁচাতে এদিক-সেদিক যাওয়ার চেষ্টা করেছে। এমন পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গারা যাতে নতুন করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ না করে, সে জন্য বিজিবি সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

 শুক্রবার দুপুরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি, সেটি আজকে হঠাৎ করে হয়নি। বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তেজনা চলছে। আমাদের সীমান্তরক্ষীরা অনেক আগে থেকেই সেখানে সতর্ক রয়েছেন। রাখাইনে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।’

নতুন করে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশে সরকারের অনীহার বিষয়টি ইঙ্গিত করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মানবতার কারণে রোহিঙ্গাদের তখন স্থান দিয়েছিলাম। যেসব রোহিঙ্গা আমাদের দেশে এসেছে, তাদের কারণে এখানে নিরাপত্তা ও পরিবেশগত সমস্যা তৈরি হয়েছে। শিবিরগুলো উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বিস্তারের উর্বর ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। এ ছাড়া সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো রোহিঙ্গা শিবির থেকে তাদের সদস্য নিয়োগ করার চেষ্টা করে।’

টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, সীমান্তে বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কোনো ধরনের সুযোগ নেই।

জানা গেছে, রাখাইনে দুই পক্ষের তুমুল লড়াইয়ের পরিপ্রেক্ষিতে বান্দরবান সীমান্ত এলাকা থেকে বিজিবির একটি অংশকে কক্সবাজার জেলার মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় মোতায়েন করে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।  গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এবং আরাকান আর্মির সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা হতাহত হয়েছেন। দুই পক্ষের তুমুল লড়াইয়ের মধ্যে রোহিঙ্গারা হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন।

মিয়ানমারের স্থানীয় গণমাধ্যম নারিনজারা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত শুক্রবার আরাকান আর্মি রাখাইনের বন্দরনগরী পকতাও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের পর ম্রাক উ, মিনবিয়া, কিয়াকতো ও রাথিডং শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য সেনাবাহিনীর সঙ্গে তুমুল লড়াই শুরু করে। শুক্রবার ভোরে কালাদান উপত্যকার কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা সেনাবাহিনীর নবম কমান্ড এলাকায় হামলা চালালে দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল লড়াই হয়। কিয়াকতো এলাকায় অবস্থিত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নবম কমান্ড এলাকাকে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

রেডিও ফ্রি এশিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর লড়াইয়ের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে রাখাইনের কয়েক হাজার অধিবাসী রাজ্য ছেড়ে চলে গেছেন। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ তীব্র হতে পারে—এমন আশঙ্কায় লোকজন এলাকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭