ইনসাইড পলিটিক্স

আবারও কি ২৮ অক্টোবরের মতো কিছু ঘটাতে চায় বিএনপি?


প্রকাশ: 29/01/2024


Thumbnail

আগামীকাল দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হচ্ছে। প্রথম অধিবেশনকে প্রতিহত করার জন্য লক্ষ্যে বিএনপি এ দিন কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি দিয়েছে। শুধু বিএনপি নয়, বিএনপির সঙ্গে যে সমস্ত ছোট ছোট রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন বর্জন করেছিল, তারাও একইরকম কর্মসূচি পালন করেছে। এর ফলে রাজনীতিতে নতুন করে উত্তাপ সৃষ্টি হচ্ছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। বিশেষ করে ২৮ অক্টোবর বিএনপি যে জ্বালাপোড়া এবং তাণ্ডবের সূচনা করেছিল, নির্বাচনের পরে আবার সেই সহিংস পথে ফিরে আসতে চাইছে বলেও মনে করে কেউ কেউ। 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আজ সুস্পষ্টভাবে বলেছে, বিএনপি আবার নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। সহিংস রাজনীতির মাধ্যমে গণতন্ত্রকে ব্যাহত করার ষড়যন্ত্র করছে। আর এ কারণেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আগামীকাল বিএনপির কর্মসূচির ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। যদিও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেছেন, তাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ এবং অহিংস। তারা কোন সংঘাতমূলক কর্মসূচিতে যাবে না। কিন্তু অতীতের ইতিহাস বলে এ ধরনের কর্মসূচির ওপর বিএনপির কোন নিয়ন্ত্রণ থাকে না। কারণ ২৮ অক্টোবরেও বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির কথা বলেছিল এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানতেনই না বিএনপি এ ধরনের কর্মসূচি পালন করবে। আর ওইদিন বিএনপির কিছু উশৃঙ্খল নেতাকর্মী প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করে, একটি হাসপাতালে আগুন লাগিয়ে দেয় এবং একজন পুলিশ কনস্টেবলকে নির্মমভাবে হত্যা করে। 

আগামীকালকের কালো পতাকা মিছিলের মূল লক্ষ্য হল দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনকে প্রতিহত করা। কিন্তু প্রতিহত করতে বিএনপি পারবে না। সেটা বিএনপির নেতাকর্মীরাও ভালো করে জানে। জাতীয় সংসদ থেকে দৃষ্টি রাজপথে নিয়ে আসাই তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচির লক্ষ্য। কিন্তু বিএনপির মধ্যে একটা অংশ আছে যারা ভোট হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি চায়, সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারকে চাপে ফেলতে চায়। এই অংশটি আগামীকাল সহিংসতা করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

তাছাড়া মৌলবাদী, উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী গুলো বিএনপির সঙ্গে কর্মসূচি দিয়েছে। জামায়াতে ইসলাম, হেফাজতে ইসলামের মতো ক্যাডার ভিত্তিক রাজনৈতিক সংগঠন গুলো আগামীকাল কর্মসূচি দিয়েছে। বিশেষ করে অতীতে লক্ষ্য করা গেছে, যখনই জামায়াত কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি দেয় তখন তা হয় উস্কানিমূলক। যেহেতু রাজনৈতিক দলটি অস্তিত্ববিহীন, অনিবন্ধিত সেজন্য তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই, কোন দায়দায়িত্ব নেই। তারা সবসময় রাজনীতিতে একটা সহিংসতার পথে ঠেলে দিতে চায়। আর এ কারণেই আগামীকালের কর্মসূচী নিয়ে এক ধরনের শঙ্কা এবং উৎকণ্ঠা তৈরি হচ্ছে। 

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, আগামী কালের কর্মসূচিতে জনগণের জানমাল হেফাজতের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রস্তুত এবং কোন অবস্থাতেই যেন কোন ধরনের সন্ত্রাস সহিংসতার ঘটনা না ঘটে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যথাযথ ভূমিকা পালন করবে। এখন দেখার বিষয় ২৮ অক্টোবরের কর্মসূচির মাধ্যমে বিএনপি যেভাবে পিছিয়ে পড়েছিল এবং রাজনীতির মূলধারা থেকে ছিটকে পড়েছিল আগামীকাল আবার সেই সহিংস পথে ফিরে কিনা। তবে কূটনৈতিক মহল বিএনপিকে সুষ্পষ্টভাবে বলে দিয়েছে, এ ধরনের সহিংস এবং বিশৃঙ্খল সৃষ্টিকে তারা কখনোই সমর্থন দেয় না। বিএনপি যদি এ ধরনের কর্মসূচিতে ফিরে তাহলে তাদের জন্য সমঝোতা দরজা একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে। এর ফলে কূটনৈতিক মহলও মুখ ফিরিয়ে নিবে। এখন দেখার বিষয় বিএনপি শেষ পর্যন্ত কূটনীতিকদের কথা শুনে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে নাকি তাদের ভেতর যে সন্ত্রাসী চক্র রয়েছে তারা রাজনীতিকে সহিংসতার পথে নিয়ে যায়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭