ইনসাইড বাংলাদেশ

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ: কথা বেশি, কাজ কম


প্রকাশ: 31/01/2024


Thumbnail

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ নিয়ে অনেকে কথা বলছেন। সরকারের যে যেভাবে পারছেন একের পর এক কথা বলছেন। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে যার কিছু করণীয় নেই, তিনিও বক্তৃতায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য নানা রকম আশ্বাসের বাণী শোনাচ্ছেন। কিন্তু আসলে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য যা করা দরকার তা কতটা করা হচ্ছে সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বর্তমান সরকার গত ১১ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। দায়িত্ব গ্রহণ করার পর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে তারা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী একাধিক বক্তৃতায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীই একমাত্র কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। রমজান মাসকে সামনে রেখে চারটি পণ্যের ট্যারিফ কমানোর জন্য তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু এই চারটি পণ্যের বাইরেও অনেক পণ্য আছে যে পণ্যগুলোর দাম গত দু সপ্তাহে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। বিশেষ করে পেঁয়াজ এবং চালের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে ক্রমশ। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের কর্তা ব্যক্তিরা নানা রকম কথাবার্তা বলছেন বটে তবে সেই সমস্ত কথাবার্তায় কোন কাজের কাজ হচ্ছে না। এই ধরনের কথাবার্তা জনবিরক্তির কারণ হচ্ছে। 

দ্রব্যমূল্য নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কথা বলছেন। কথা বলছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকেই কথা বলতে দেখা যাচ্ছে। তবে রাজনীতিবিদদের সাথে পাল্লা দিয়ে আমলারাও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিভিন্ন বক্তৃতা বিবৃতি দিচ্ছেন। বাজারে সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন। কিন্তু এত কথায় কোন লাভ হচ্ছে না। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কথা হচ্ছে বেশি, কাজ হচ্ছে কম। 

ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সরকারি সংগঠনটি বিভিন্ন চালের আড়তে যেয়ে  ফটোসেশন করছেন, তারা ক্যামেরা নিয়ে যেয়ে দু একটি তথাকথিত অভিযান করে বাজার শান্ত করার চেষ্টা করছেন। এই ধরনের অভিযান যে হাস্যকর এবং অকার্যকর তা ইতোমধ্যেই প্রমাণিত হচ্ছে। এই সমস্ত কর্মকর্তাদের টেলিভিশনে চেহারা দেখানো ছাড়া এই ধরনের অভিযানে কোন লাভ হয়েছে বলে সাধারণ মানুষ মনে করে না। সংবাদমাধ্যমের লোকজনকে নিয়ে এ ধরনের অভিযান করে তারা শুধু নিজেদের ইমেজ বৃদ্ধির চেষ্টা করছেন এমনটা মনে করে মানুষ। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য যে ধরনের পরিকল্পিত সমন্বিত পদক্ষেপ দেওয়া দরকার, তার কিছুই হচ্ছে না। 

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী দায়িত্ব গ্রহণ করেই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণের কথা বলেছিলেন। কিন্তু সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণের জন্য কোন ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। এমনকি কারা কারা সিন্ডিকেট করে তা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অজানা থাকার কথা নয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এই সমস্ত সিন্ডিকেটের হোতাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। 

চালের বাজার অশান্ত করার পিছনে মিলার বা পাইকারি বিক্রেতাদের চেয়ে দায়ী কতগুলো কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান, যারা বিপুল পরিমাণ চাল মজুদ করে চালের বাজারকে অস্থিতিশীল করে তুলেছেন। এ কথা খাদ্যমন্ত্রী বিগত সময়ে বলেছিলেন কিন্তু এই সমস্ত কর্পোরেট জায়ান্ডের বিরুদ্ধে সরকার একেবারে নীরব।

পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠলো কেন তার কোন জবাব নেই। শুধু মাত্র আশ্বাসের কথাই শোনা যাচ্ছে। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীকে ভারত আশ্বাস দিয়েছে যে, চিনি এবং পেঁয়াজের ওপর ভারতীয় নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের জন্য কার্যকর হবে না। কিন্তু এই আশ্বাসকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ এখনও নেয়া হচ্ছে না। বাজার পরিস্থিতি নিয়ে এখন পর্যন্ত বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বা সরকারের কোন সমন্বিত পরিকল্পনা চোখে পড়ছে না। আর এ কারণেই জনমনে আরও বেশি বিরক্তি হচ্ছে। সাধারণ মানুষ কথা নয়, কাজ দেখতে চায়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭