ইনসাইড পলিটিক্স

বিরোধী আন্দোলন থামাতে আওয়ামী লীগের তিন কৌশল


প্রকাশ: 31/01/2024


Thumbnail

৩০ জানুয়ারি জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনের দিন বিএনপি কালো পতাকা মিছিল করেছিল। বিএনপির নেতারা বলছেন, এটি শেষ নয়, সামনের দিনগুলোতে তারা আরও আন্দোলনের কর্মসূচি দেবে। এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে এমন ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি এবং তার মিত্ররা। 

কালো পতাকা কর্মসূচিকে থামানোর জন্য সরকার কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিল। পাশাপাশি এই আন্দোলনে যেন সন্ত্রাস বা নাশকতা তৈরি না হয় সে জন্য আওয়ামী লীগ তার নিজের কর্মসূচি গুটিয়ে নিয়েছিল। সামনের দিনগুলোতে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো আরও রাজনৈতিক কর্মসূচি দিতে পারে। আর এই কর্মসূচি কিভাবে মোকাবিলা করা যায় সে নিয়ে আওয়ামী লীগ এখন তার কৌশল চূড়ান্ত করেছে।

আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, একদিকে যেমন বিরোধী দল আন্দোলন করছে, অন্যদিকে বিরোধী দলের যারা সন্ত্রাস সহিংসতা করছে তাদের গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধেও একটি আন্তর্জাতিক জনমত তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ প্রায় প্রতিদিনই বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে নানা রকম বক্তৃতা বিবৃতি ইত্যাদি দিচ্ছেন। আর এই প্রেক্ষিতে সরকার বিরোধী দলের আন্দোলন বন্ধের জন্য একটি রাজনৈতিক সমঝোতার চেষ্টা করছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

বিরোধী দলের আন্দোলন থামাতে সরকার তিনটি কৌশল গ্রহণ করছে বলে জানা গেছে।

প্রথমত সমঝোতার চেষ্টা: এখন নির্বাচন হয়ে গেছে। নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। কাজেই সরকারের জন্য এখন একটা স্বস্তিদায়ক এবং সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। এই সুবিধাজনক অবস্থানে সরকার বিরোধী দলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলাপ আলোচনা এবং সমঝোতা করতে পারে। বিরোধী দলকে স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে। আর এই পরিকল্পনার অংশ হিসাবে বিরোধী দলের কোন কোন নেতার সঙ্গে যোগাযোগও শুরু হয়েছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

দ্বিতীয়ত, আটক নেতাকর্মীদের মুক্তির ব্যবস্থা দেওয়া: বিরোধী দলের যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ নেতারা আটক রয়েছেন, তারা যেন জামিন পায় সে জন্য সরকার একটি উদার নীতি গ্রহণ করতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ কয়েকজন নেতার জামিনের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। সরকার শীর্ষ নেতাদেরকে বাইরে নিয়ে এসে তাদেরকে স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক করার সুযোগ দিতে চায়। গতকাল ড. মঈন খানকে গ্রেপ্তারের পরও ছেড়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে সরকার বিরোধী দলের ব্যাপারে যে আগের মত কঠোর অবস্থানে যেতে চায় না, সেই বার্তাটি দিয়েছে। 

সরকার একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেছেন, যেহেতু নির্বাচন শেষ হয়ে গেছে। কাজেই এখন বিরোধী দলের প্রতি সরকার উদারতা এবং সহানুভূতি দেখাবে।

তৃতীয়ত, সাংগঠনিক ভাবে মোকাবেলা করা: বিএনপিকে মাঠ ছেড়ে দিবে না আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ মনে করে বিগত দিনগুলোতে বিএনপির কর্মসূচির পাশাপাশি আওয়ামী লীগের পাল্টা কর্মসূচি একটি ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করেছে। এর ফলে রাজপথ বিএনপির দখলে চলে যায়নি। এখনও আওয়ামী লীগ সেই একই কৌশল গ্রহণ করবে। বিএনপিকে রাজপথে রাজত্ব করতে দেবে না। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগ বিভিন্ন রকম সাংগঠনিক কর্মসূচির মাধ্যমে একদিকে যেমন নেতাকর্মীদেরকে সজাগ রাখবে অন্যদিকে বিএনপির জন্য চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিবে। আর এই তিন কৌশলের মাধ্যমেই তারা বিরোধী আন্দোলন দমাতে পারবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭