নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 04/04/2018
হাসপাতাল ছেড়ে উত্তরার বাসায় গেছেন বিএনপি মহাসচিব। কিছুটা অভিমান নিয়েই তিনি হাসপাতাল ছেড়েছেন। হাসপাতালে তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন অনেক নেতাই। কিন্তু তাঁর খবর-নেননি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। এমনকি জিয়া পরিবারের কেউ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। অন্যদিকে, নাজিমউদ্দিন রোডে পুরাতন কারাগারে বন্দী বেগম জিয়া রাগ করেছেন। তাঁর হাত ও পায়ের ব্যাথা বেড়েছে। এখন একা একা হাঁটাচলাও করতে পারছেন না বেগম জিয়া। শুক্রবার পুত্রবধূকে বলেছিলেন, তাঁর সুচিকিৎসার জন্য যেন হাইকোর্টে যান আইনজীবীরা। প্রয়োজনে নতুন করে জামিনের আবেদন করারও নির্দেশ দিয়েছিলেন। দলের বিশ্বস্ত ডাক্তারদের তালিকা চেয়েছিলেন। কিন্তু এসব কিছুই হয়নি এক সপ্তাহে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যত: বিএনপি চালাচ্ছেন। গত দুই মাসে প্রশংসার চেয়ে তিরস্কারই বেশি জুটেছে তাঁর। বিশেষ করে, তারেক জিয়ার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কটা এখন শীতলতম পর্যায়ে। এর মধ্যে কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান দেশে আসার পর আরও কোণঠাসা হয়ে পরেন মির্জা ফখরুল। মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হন। রোববার ভর্তি হন ইউনাইটেড হাসপাতালে। বিএনপির মহাসচিব আশা করেছিলেন, অসুস্থ হলে তাঁর প্রতি সবার সহানুভূতি বাড়বে। এই সুযোগ ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে। কিন্তু তাঁর ‘অসুস্থতা’ কে দায়িত্ব এড়ানোর কৌশল বলছেন অনেক নেতাই। কেউ কেউ বলছেন, ‘অসুস্থতার অজুহাত’ দেখানোর আর সময় পেলেন না মির্জা ফখরুল। ইউনাইটেড হাসপাতালের নীচেই বিএনপির এক নেতা বলছিলেন, ‘বুকে ব্যাথা হলেই যদি হাসপাতালে ভর্তি হতে হতো, তাহলে তো আমাকে প্রতিদিনই হাসপাতালে থাকতে হয়।’ তবে নেতাদের এসব টিকা টিপ্পনীতে নয়, মির্জা ফখরুল দু:খ পেয়েছেন জিয়া পরিবারের উপেক্ষায়।
মঙ্গলবার সারাদিনই মির্জা ফখরুল বিশ্রামে ছিলেন। তাঁর সঙ্গে অনেকেই দেখা করেছেন। কিন্তু তারেক জিয়া একবারের জন্যও ফোন করে তাঁর খোঁজ নেননি। মঙ্গলবার রাতে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সদ্য কারামুক্ত বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। সে সময়ও মির্জা ফখরুল তাঁর ব্যক্তিগত স্টাফকে জিজ্ঞেস করেন, লন্ডন থেকে কোনো ফোন এসেছে কিনা। জিয়া পরিবারের অবহেলায় অভিমান করেই বাসায় গেছেন বিএনপি মহাসচিব।
বেগম জিয়াও বিএনপির নেতা এবং আইনজীবীদের ভূমিকায় হতবাক হয়ে গেছেন। বেগম জিয়া মনে করছেন, তার অসুস্থতা এবং চিকিৎসার ব্যাপারে বিএনপি সিরিয়াস না। শুক্রবার বেগম জিয়া শর্মিলা রহমানকে বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে ছিল ১) বিএনপির চিকিৎসকরা যেন অবিলম্বে স্বাস্থ্য পরীক্ষার অনুমতি চেয়ে আবেদন করে। ২) আইনজীবীরা যেন পছন্দের চিকিৎসকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার অনুমতি চেয়ে আবেদন করে এবং ৩) অসুস্থতার পরিপ্রেক্ষিতে যেন তাঁর জামিনের আবেদনের নতুন করে শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হয়। শর্মিলা রহমান এই তিন নির্দেশনাই বিএনপি নেতাদের জানিয়েছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত এ নিয়ে বিএনপির কোনো উদ্যোগ না থাকায় বেগম জিয়া রাগ করেছেন। দলের নেতাদের ওপর চটে তিনি জেল কর্তৃপক্ষকে বলেছেন, ‘ওরা তো নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত। আমার জন্য তাদের সময় নেই।’ দলের দুই প্রধানের রাগ আর অভিমানে বিএনপিও এখন বিপর্যস্ত এবং বিধ্বস্ত।
Read In English: https://bit.ly/2EjnMz7
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭