ইনসাইড থট

এস কে সিনহা ও আমাদের জ্ঞানপাপী সুশীল সমাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 04/04/2018


Thumbnail

মঙ্গলবার ঢাকার এক গোল-টেবিল বৈঠকে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি কয়েকজন ব্যক্তি সাবেক প্রধান বিচারপতির বিদায় নিয়ে কথা বলেছেন ও দাবি করেছেন তাঁর প্রতি অন্যায় করা হয়েছে ও যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলো প্রমাণিত নয়। তারা এও উল্লেখ করেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার দুর্নীতি কী তা জনগণের জানার অধিকার আছে। মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে নাগরিক সংগঠন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) উদ্যোগে ‘আইনের শাসন : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ কথা বলেন।

বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুজন-এর নির্বাহী সদস্য আব্দুল মতিন। গোলটেবিল বৈঠকে আলোচক হিসেবে সিনিয়র আইনজীবী ড. কামাল হোসেন,বিচারপতি কাজী এবাদুল হক,  ব্যারিস্টার আমির- উল ইসলাম, ড. তোফায়েল আহমেদ, সৈয়দ আবুল মকসুদ, ড. আসিফ নজরুল, ড. বদিউল আলম মজুমদার, স্থপতি মোবাশ্বার হাসান, গোলাম মর্তুজা, এএসএম আকরাম, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা উপস্থিত ছিলেন।

রাতে একাত্তর টিভি চ্যানেলে বদিউল আলম মজুমদার এই বিষয়ে তাঁর বক্তব্য স্পষ্ট করেন এই বলে যে এস কে সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতির যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলো ‘বানোয়াট’ হ’তে পারে এবং তাঁকে দেশত্যাগের আগে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়নি!

প্রথমত: বদিউল আলম মজুমদারের এই বক্তব্য সত্যের অপলাপ ও সত্যকে আড়াল করার অভিসন্ধি বলে মনে করা যেতে পারে। এস কে সিনহার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছিল সেগুলো পত্র-পত্রিকায় ও টি ভি চ্যানেলগুলোর সবিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে। এস কে সিনহা কখনোই তাঁর প্রতিবাদ করেননি এমনকি এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেননি। এতে কি প্রমানিত হয়? আমরা তো জানি কোনো সংবাদ পরিবেশনায় মিথ্যা তথ্য থাকলে সংক্ষুব্ধ ব্যাক্তির তাতে প্রতিবাদ করার সুযোগ থাকে বা আইনের আশ্রয়ও তিনি নিতে পারেন। এস কে সিনহা সেসব কিছু করেন নি। এমনকি বহু প্রচেষ্টার পরেও সাংবাদিকদের কোনো বক্তব্য দেননি বলে সংবাদকর্মীরা জানিয়েছেন। তাহলে এস কে সিনহা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাননি বদিউল আলমের এই তথ্য কি সঠিক?

দ্বিতীয়ত: এস কে সিনহা তাঁর অভিযোগ পরিবেশনকালে ছুটিতে ছিলেন ও ছুটি শেষে তিনি যখন কাজে যোগ দেন তখন তার সহকর্মী সিনিয়র বিচারপতিগণ তাঁর সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানতে চান। জানা যায়, কোনো অভিযোগেরই সঠিক জবাব এস কে সিনহা দিতে পারেন নি ফলে বিচারগতিরা সমস্বরে তাঁর সঙ্গে বিচারকাজে অংশ নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ তথ্য বদিউল সাহেব জানেন কিন্তু তিনি সত্যের অপলাপ করছেন।

তৃতীয়ত: এস কে সিনহা ছুটি নিয়ে বিদেশ চলে যান ও বিদেশ থেকে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দেন। নিশ্চয়ই তিনি সাধু হলে দেশে ফিরে এসে তার অভিযোগ খন্ডন করতে মামলা বা আদালতের আশ্রয় নিতে পারতেন। বদিউল সাহেবরা তাঁকে সে পরামর্শ দেননি কেন?

এইসব তথাকথিত সুশীল সমাজের কারণে দেশে ন্যায়ের শাসন বিতর্কিত হয়। বদিউল আলম মজুমদারগং এস কে সিনহার বিষয়টি বিতর্কিত করে দেশের উন্নয়নের মুল স্রোতের মধ্যে ঘোলা পানি দেখতে চাইছেন। যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি বলছেন না যে এইসব অভিযোগ মিথ্যা বা সঠিক নয়, কিন্তু বদিউল আলম মজুমদার মনে করেন এইসব অভিযোগ ‘বানোয়াট’!

এইসব জ্ঞানপাপী সুশীলদের বিচার হবে কবে?

বাংলা ইনসাইডার/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭