প্রকাশ: 07/02/2024
আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব
পালনকালে করা অপরাধ থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিস্তার নেই, যতই তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে
এককালে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য দায়িত্ব পালন করে থাকেন না কেন। ফেডারেল নির্বাচনের বিরুদ্ধে
বিদ্রোহের অভিযোগে তাঁর বিচার হওয়া উচিত নয়— ট্রাম্পের এমন যুক্তি স্পষ্টভাবে খারিজ
করে দিয়েছেন আদালত। আদেশ দিয়েছেন, ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের
অভিযোগে তাঁর বিচার করা যাবে। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল
আপিল আদালত এমন অভিমতই প্রকাশ করেছেন।
ফেডারেল আপিল আদালতের এমন সিদ্ধান্তের ফলে
তার বিরুদ্ধে ২০২০ সালের নির্বাচনের ফল পাল্টে দেয়ার অভিযোগসহ আরও যেসব মামলা রয়েছে
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সেগুলোর বিচার চলতে
আর কোনো বাধা থাকল না।
এদিকে আদালতের এই আদেশের সমালোচনা করে একে
‘জাতি–বিধ্বংসী’ বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক এই প্রেসিডেন্ট।
যদিও ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করে আসছেন, সাবেক
প্রেসিডেন্ট হিসেবে সব ধরনের অপরাধ থেকে তার দায়মুক্তি আছে এবং তিনি ওই সময় যা করেছিলেন
সেটি প্রেসিডেন্টের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। তবে মঙ্গলবার (৬ জানুয়ারি) ওয়াশিংটন ডিসির
আদালত তার এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
ওয়াশিংটন ডিসির তিন সার্কিট জজের প্যানেলের
৫৭ পৃষ্ঠার সর্বসম্মত অভিমতে বলা হয়েছে, একজন সাবেক প্রেসিডেন্টকে দায়িত্বে থাকাকালে
তাঁর নেওয়া পদক্ষেপের জন্য বিচারের মুখোমুখি করার সুযোগ বিচারব্যবস্থায় রয়েছে।
অভিমতে বিচারকেরা আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের
দপ্তর এর সাবেক দায়িত্ব পালনকারীকে পরবর্তী পুরোটা সময়ের জন্য আইনের ঊর্ধ্বে রাখবে,
আমরা তা মেনে নিতে পারি না।’
আদেশে আরও বলা হয়, ‘২০২০ সালের নির্বাচনে
হেরে যাওয়ার পরও সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ক্ষমতায় থাকার প্রচেষ্টা ছিল বলে আভিযোগ
রয়েছে। যদি প্রমাণিত হয়, এটা আমাদের সরকারের কাঠামোর ওপর এক নজিরবিহীন আক্রমণ। অভিযোগ
রয়েছে, তিনি নিজেকে ইলেক্টোরাল কলেজের ভোট গণনা ও প্রত্যয়নের এমন একটি প্রক্রিয়ায়
যুক্ত করেছিলেন, যেখানে প্রেসিডেন্টের কোনো ভূমিকা নেই। বিষয়টি সাংবিধানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত
পদ্ধতি এবং কংগ্রেসের ইচ্ছাকে ক্ষুণ্ন করে।’
রায়ের পর ট্রাম্পের প্রচারণা শিবিরের মুখপাত্র
স্টিভেন চেউং এক বিবৃতিতে বলেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট আদালতের এই রায়ের শ্রদ্ধার সঙ্গে
দ্বিমত পোষণ করেন এবং তিনি আপিল করবেন।
স্পেশাল কাউন্সেল জ্যাক স্মিথ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে
২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেয়ার অভিযোগ এনেছেন। ওই সময় ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকার
জন্য চতুরতার আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন স্মিথ।
এদিকে এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান
পার্টি থেকে ট্রাম্পের মনোনয়ন অনেকটাই নিশ্চিত। আদালতের এই আদেশকে তাঁর জন্য বড় ধাক্কা
হিসেবে দেখা হচ্ছে। অবশ্য ট্রাম্পের প্রচার মুখপাত্র স্টিভেন চেউং বলেছেন, এ আদেশের
বিরুদ্ধে তাঁরা উচ্চ আদালতে যাবেন।
সুপ্রিম কোর্টে আপিলের জন্য ১২ ফেব্রুয়ারি
পর্যন্ত সময় পাবেন ট্রাম্প। এরপর এ আদেশের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন কি না, সুপ্রিম কোর্ট
সিদ্ধান্ত নেবেন।
এদিকে মঙ্গলবারের আদেশের কড়া সমালোচনা করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রেসিডেন্টকে সঠিকভাবে কাজ করতে এবং আমাদের দেশের ভালোর জন্য যা করতে হবে, তা করার অবশ্যই পূর্ণ দায়মুক্তি থাকতে হবে। এ রকম জাতি-বিধ্বংসী আদেশ বহাল রাখতে দেওয়া যাবে না।’
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭