ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

গাছে ঝুলিয়ে আগুনে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হলো জান্তাবিরোধী দুই তরুণকে!


প্রকাশ: 08/02/2024


Thumbnail

বর্তমানে মিয়ানমার সকল সভ্যতার সীমা যেন পার হয়ে গেছে। বিভৎস সব ঘটনা ঘটছে সেখানে। এবার মিয়ানমারের ম্যাগওয়ে অঞ্চলে বিদ্রোহী এক যোদ্ধাকে প্রকাশ্যে পুড়িয়ে হত্যা করেছে জান্তা বাহিনী। তার অপরাধ সে একজন জান্তাবিরোধী, বিদ্রোহী। প্রায় তিন মাস আগেই ঘটে যাওয়া এ নৃশংস জঘন্য অপরাধের ভিডিও গত মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সংবাদমাধ্যম ইরাবতীতে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, বয়স ২০–এর কোঠায় দুই তরুণকে গাছে ঝোলানোর হয় এবং এরপর তাদের পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়। প্রথমে স্থানীয় দুটি সংবাদমাধ্যমে এ ভিডিও নিয়ে খবর প্রকাশিত হয়।

বিদ্রোহী গোষ্ঠী ইয়াও ডিফেন্স ফোর্স (ওয়াইডিএফ) বলেছে, গাঙ্গাও শহরের মায়ুক খিন ইয়ান গ্রামে জান্তা সেনা ও তাদের মিত্র পিউ সো হতি মিলিশিয়া সদস্যরা এই ঘটনার জন্য দায়ী।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ওই দুই ব্যক্তিকে স্বীকার করতে বাধ্য করা হচ্ছে যে, তাঁরা স্থানীয় পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের সদস্য। ভুক্তভোগীদের ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকা জান্তা সেনারা তাঁদের নিজেদের ‘কুকুর’ বলতে বাধ্য করে। অনেক বেসামরিক নাগরিক জান্তা সেনাদের বোঝাতে ‘সামরিক কুকুর’ শব্দগুলো ব্যবহার করে।

জীবন্ত পুড়িয়ে মারার আগে তাঁদের নির্যাতন করা হয়েছে বলে ভিডিওতে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাঁদের গুরুতর জখম এবং রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা যায়। ওই তরুণদের হাতে পায়ে লোহার শিকল বেঁধে একটি গাছের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। নিজেদের কুকুর বলে সম্বোধন করতে বাধ্য করার পর তাঁদের গাছ থেকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। এরপর গায়ে দাহ্য তরল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। জনসম্মুখেই তাঁদের জীবন্ত পোড়ানো হয়।

ওয়াইডিএফ জানায়, গ্রামের প্রতিটি পরিবারকে ফাঁসির সাক্ষী থাকার জন্য একজন করে সদস্যকে পাঠাতে বলা হয়েছিল। ভিডিওটিতে একটি আনন্দিত কণ্ঠে এই অপরাধকে ‘বিজয়’ হিসেবে উপস্থাপন করে বর্ণনা করা হয়েছে।

অবশ্য যে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে ইরাবতী সেটি যাচাই করতে পারেনি।

ওয়াইডিএফ নিহত ওই দুই তরুণকে ফো তে এবং থার হাতুং বলে শনাক্ত করেছে। তাঁরা ওয়াইডিএফ সদস্য ছিলেন, যাদের ২০২৩ সালের ৭ নভেম্বর মিয়াউক খিন ইয়ান গ্রামে একটি অভিযানের সময় জান্তা সেনা এবং পিউ সো হতি সদস্যরা আটক করে।

সামরিক বাহিনী সমর্থিত ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির সাবেক আইনপ্রণেতা ‘বুলেট’ খ্যাত হ্লা সোয়ের নির্দেশনায় গ্রামটি পিউ সো হতি মিলিশিয়ারা নিয়ন্ত্রণ করে। মিলিশিয়ারা বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, গ্রামে এবং আশপাশের গ্রামে নির্বিচারে গোলাবর্ষণের কারণে কুখ্যাত। ২০২২ সালের মার্চে ওই গ্রামে দুই বেসামরিক নাগরিককে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়।

পিউ সো হতি মিলিশিয়াদের বিস্তৃতির কারণে গ্রামের অনেক বাসিন্দাই পালিয়ে গেছে।

ওয়াইডিএফ বলেছে, ওই দুই ব্যক্তিকে ‘প্রকাশ্যে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে’। এর আগে তাঁদের ওপর বারবার নির্যাতন চালানো হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী জনগণ ভিডিওটি দেখে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। আতঙ্ক ছড়ানোর উদ্দেশ্যে এ ধরনের অমানবিকতা স্বৈরাচারী কর্মকাণ্ড বিপ্লবী চেতনাকেই আরও শক্তিশালী করবে বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন।

এক বিবৃতিতে ওয়াইডিএফ বলেছে, ‘সন্ত্রাসী সামরিক বাহিনী অনেক আগে থেকেই অমানবিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে তা নিশ্চিত করার একমাত্র উপায় হচ্ছে, সামরিক শাসনের মূলোৎপাটন করা এবং বিপ্লবের সাফল্য নিশ্চিত করা।’

 

সূত্র: ইরাবতি



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭