ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

পালিয়ে আসা সেনা ও সীমান্তরক্ষীদের সমুদ্রপথে ফিরিয়ে নিতে ইচ্ছুক মিয়ানমার


প্রকাশ: 08/02/2024


Thumbnail

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি), পুলিশ, ইমিগ্রেশনসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা যারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন তাদের দেশটির নৌবাহিনীর জাহাজে ফিরিয়ে নিতে চায়। এ ব্যাপারে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।

গতকাল বুধবার পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক আন্তমন্ত্রণালয় সভায় মিয়ানমারের দেওয়া প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এমন আলোচনা হয়েছে। এদিন মিয়ানমারের প্রশাসনিক রাজধানী নেপিডোতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের আলোচনাতেও বিষয়টি উঠে এসেছে।

আন্তমন্ত্রণালয়ের এই সভায় পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি মিয়ানমারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মনোয়ার হোসেন অনলাইনের মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন।

সভায় উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশ নাফ নদীর পরিবর্তে আকাশপথে বান্দরবানে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের লোকজনকে ফেরত দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের আকাশপথে ফেরাতে চায় না। এই পরিস্থিতিতে মিয়ানমার তাদের লোকজনকে সমুদ্রপথে ফিরিয়ে নেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।

বঙ্গোপসাগর হয়ে মিয়ানমারের লোকজনকে কীভাবে ফেরত নেওয়া হবে, জানতে চাইলে একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মিয়ানমার নৌবাহিনীর নৌযান বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেবে। এর আগে আন্তর্জাতিক রীতি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। আশা করা যায়, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেবে।

আন্তমন্ত্রণালয় সভা শেষে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, মিয়ানমারের ৩২৮ জন নাগরিককে কীভাবে ফিরিয়ে দেওয়া যাবে, সেটাই সভার মূল আলোচ্য বিষয় ছিল।

রাখাইনের বর্তমান পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকি তৈরি করেছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, সরাসরি কোনো ঝুঁকি দেখছি না। বিজিবির সর্বোচ্চ প্রস্তুতি আছে, যাতে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়।

উল্লেখ্য, গতকাল আরাকান আর্মিসহ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হামলার মুখে নতুন করে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সামরিক কমান্ডারসহ ৬৪ জন টেকনাফের হোয়াইক্ষ্যং সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে। এ নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন ৩২৮ জন মিয়ানমারের নাগরিক।

এদিকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া লোকজনকে দ্রুত ফেরত নেওয়ার পাশাপাশি রাখাইনের সংঘাত যাতে এ দেশে কোনোভাবে ঝুঁকি তৈরি না করে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মিয়ানমারকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। গতকাল দুপুরে নেপিডোতে দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান শোয়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মনোয়ার হোসেন।

কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, জানতে চাইলে মুঠোফোনে রাষ্ট্রদূত মনোয়ার হোসেন জানান, ‘রাখাইনের অস্থিরতা যাতে বাংলাদেশে নিরাপত্তাঝুঁকিসহ কোনো ধরনের প্রভাব না ফেলে, সে বিষয়ে তাঁকে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছি। মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেলে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে হতাহতের ঘটনায় লোকজন উদ্বিগ্ন। তবে বাংলাদেশ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিচ্ছে। মিয়ানমারকে এই পরিস্থিতি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে সতর্ক থাকা উচিত। এ ছাড়া দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় এগিয়ে নিতে হলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করাটা জরুরি।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭