ইনসাইড বাংলাদেশ

অবসরে যাচ্ছেন এক ডজন সচিব: আমলাদের দৌড়ঝাঁপ


প্রকাশ: 08/02/2024


Thumbnail

চলতি বছরের জুলাই মাসের মধ্যে এক ডজন সচিব অবসরে যাচ্ছেন। আর এই অবসরে যাওয়া নিয়ে সচিবালয়ে আমলাদের মধ্যে শুরু হয়েছে দৌড়ঝাঁপ। যে সমস্ত সচিব পদগুলো খালি হচ্ছে সেখানে যাওয়ার জন্য এবং কয়েকটি শীর্ষ পদের জন্য আমলাদের মধ্যে এক ধরনের প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আর এই প্রতিযোগিতার কারণে সচিবালয়ে এখন আলাপ-আলোচনা এবং নানা রকম জল্পনা কল্পনার ডালপালা মেলেছে।

বর্তমান রেল সচিব ড. হুমায়ুন কবির অবসরে যাবেন চলতি মাসের ২০ ফেব্রুয়ারি। কোনও কারণে তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ না হলে নতুন রেলসচিব দিতে হবে। পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য এ কে এম ফজলুল হক অবসরে যাচ্ছেন মার্চের ৪ তারিখে। তারও যদি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ না দেওয়া হয় তাহলে তার এখানেও নতুন সচিব নিয়োগ দেওয়া হবে।

কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার আগামী মার্চের ১২ তারিখে অবসরে যাবেন। অবসরে যাবেন মোসাম্মৎ হামিদা বেগম, যিনি পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ১ মে অবসরে যাবেন। এছাড়া আর্থিক বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলিম উল্লাহর অবসরে যাওয়ার কথা ২০ মে। ১২ জুন অবসরে যাওয়ার কথা পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য সত্যজিৎ কর্মকারের। অন্যদিকে, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সচিব হাসানুজ্জামান কল্লোল অবসরে যাবেন জুলাই মাসের ৩ তারিখে।

এছাড়াও যে ১২ জন সচিব চুক্তিতে আছেন তাদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ৫ জুলাই। তার যদি চুক্তির মেয়াদ আবার বাড়ানো না হয় তাহলে  প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব হিসেবে নতুন কাউকে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। এছাড়াও গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব কাজী ওয়াসিউদ্দিন মার্চের ১০ তারিখে চুক্তির মেয়াদ শেষ করছেন। নতুন করে তার চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো না হলে তিনিও অবসরে যেতে পারেন।

বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে এই রদবদলের প্রেক্ষিতে সচিবালয়ে এক ধরনের চাঞ্চল্য এবং উত্তেজনা দেখা দিচ্ছে। প্রধান আকর্ষণ হল প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব যদি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ না পান তাহলে তার জায়গায় কে যাবেন? এখানে তিন জনের নাম আলোচিত হচ্ছে। এর মধ্যে বর্তমান জনপ্রশাসন সচিব মেজবাহ আহমেদ অন্যতম। তিনি জ্যেষ্ঠতম কর্মকর্তা হিসেবে আছেন। তিনি ছাড়াও বর্তমান নৌ পরিবহন সচিব দশম ব্যাচের কর্মকর্তা মোস্তফা কামালের নাম আছে। জ্যেষ্ঠতার হিসাবে জনপ্রশাসন সচিবের পরেই তার অবস্থান। এর পরে আছেন জাকিয়া সুলতানা, যিনি শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। জ্যেষ্ঠতার দিক থেকে তিনি মুস্তফা কামালের পর। তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীর মন্ত্রিপরিষদ সচিব হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিবের চাকরির মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের ১৪ অক্টোবর। এক বছরের চুক্তিতে আছেন তিনি। জ্যেষ্ঠতম ব্যক্তি হিসেবে মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হওয়ার কথা। তবে যেহেতু অক্টোবর পর্যন্ত তাকে অপেক্ষা করতে হবে, আবার জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিবের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। কাজেই মেজবাহ উদ্দিনকে প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব এবং পরবর্তীতে তাকে জনপ্রশাসন সচিব করার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। তিনি যদি শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিব হন সেক্ষেত্রে মুস্তফা কামাল এবং জাকিয়া সুলতানা দুই সিনিয়র সচিবের যে কোন একজন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মূখ্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন।

আরেকটি প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যে, ১৩তম ব্যাচের বেশ কিছু কর্মকর্তা ইতোমধ্যেই সচিব হয়েছেন। এখন নতুন করে যাদের সচিব পদে পদায়ন করা হবে তাদের মধ্যে কি ১৩তম ব্যাচ থেকে নেওয়া হবে? নাকি, দশম ব্যাচে এখনো যারা সচিব হতে পারেননি তাদের করা হবে? এ নিয়ে সচিবালয়ের মধ্যে নানামুখী আলাপ-আলোচনা এবং গুঞ্জন চলছে। আবার পরবর্তী ব্যাচ থেকে সচিব করা শুরু হবে কি না সে আলোচনাও আছে। সবকিছু মিলিয়ে চলতি বছরে সচিবালয়ে যে বড় ধরণের একটা পরিবর্তন হচ্ছে, সেই পরিবর্তনে কার জায়গা কেমন হবে তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে চলছে দৌড়ঝাপ দেনদরবার



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭