ইনসাইড পলিটিক্স

আজম বনাম আজাদ


প্রকাশ: 09/02/2024


Thumbnail

মির্জা আজম আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতা, সাংগঠনিক সম্পাদক, সাতবারের এমপি। আওয়ামী লীগের তৃণমূলে তার জনপ্রিয়তা প্রশ্নাতীত।

আবুল কালাম আজাদ একজন গুরুত্বপূর্ণ আমলা, সরকারের অন্যতম নীতি নির্ধারক ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মূখ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রীর এসডিজি বিষয়ক সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্ণাঢ্য আমলাতান্ত্রিক জীবন। আমলাতন্ত্রের অবসরের পর তিনি চুপচাপ ছিলেন। এবার নির্বাচনে হঠাৎ করেই তিনি জামালপুর সদর আসন থেকে আওয়ামী লীগের টিকিট পেয়েছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতির প্রচ্ছন্ন সমর্থনে এবং আপত্যস্নেহেই তিনি এই মনোনয়ন পেয়েছেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। আর এই মনোনয়ন পাওয়ার পর আলোচনায় আসে তার মন্ত্রিত্ব নিয়ে। তিনি এলাম, দেখলাম, জয় করলাম এর মতো মন্ত্রী হতে যাচ্ছেন এমন গুঞ্জন ছিল পুরো নির্বাচনের সময়। নির্বাচনে তার প্রতিপক্ষ ছিল আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী। তাকে তিনি ধরাশায়ী করেছিলেন। আর এর পেছনে বক্তব্যই ছিল যে, আবুল কালাম আজাদ নির্বাচিত হলেই জামালপুর একজন মন্ত্রী পাবে। কিন্তু, নির্বাচনের পর আবুল কালাম আজাদ এখন পর্যন্ত মন্ত্রী হতে পারেননি।

মির্জা আজম সাতবারের এমপি। প্রতিবারই যখন আওয়ামী লীগ মন্ত্রিসভা গঠন করে তখন তাকে মন্ত্রী হিসেবে ভাবেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের লোকজন ও সাধারণ মানুষ। ২০১৪ সালে বস্ত্র এবং পাট মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছাড়া তিনি মন্ত্রী হিসেবে কখনোই কাজ পাননি। সেই মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী থাকলেও একজন পূর্ণ মন্ত্রীকেউ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এই বাস্তবতায় এবার মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের যে গুঞ্জন সেই সম্প্রসারণে দুইজনের নামই আলোচনায় আসছে।

বিভিন্ন মহল মনে করছেন যে, মির্জা আজম অথবা আবুল কালাম আজাদের যেকোন একজন মন্ত্রী হবেন। কে মন্ত্রী হবেন? এ নিয়ে সারাদেশে চলছে নানান রকম আলাপ-আলোচনা ও গুঞ্জন।

জামালপুর থেকে ইতোমধ্যেই একজন পূর্ণ মন্ত্রী হয়েছেন। ফরিদ উদ্দিন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী। কিন্তু, একজন পূর্ণ মন্ত্রী দেওয়ার পর আরও একজন মন্ত্রী দেওয়া হবে কি না, এ নিয়ে বিভিন্ন রকম আলোচনা চলছে। তবে, ২০০৯ সালে জামালপুর থেকে দুইজন পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন। এদের মধ্যে ছিলেন রেজাউল করিম হীরা এবং আবুল কালাম আজাদ। বার্ধক্যের কারণে প্রবীণ এই নেতা এবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মির্জা আজম নাকি আবুল কালাম আজাদ, কে হতে পারেন মন্ত্রী?

এক্ষেত্রে তিনটি সম্ভাবনার কথা মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। একটি হলো, ‍দুইজনেরই মন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা এবং সম্ভাবনা আছে। তবে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভা গঠনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন জেলার কোটা নীতি অনুসরণ করেন। এক জেলা থেকে একাধিক মন্ত্রী না করার একটি বৈশিষ্ট্য প্রধানমন্ত্রীর করা মন্ত্রিসভার মধ্যে লক্ষ্য করা যায়। এই বিবেচনায় একজন পূর্ণ মন্ত্রী থাকার পর আরও দুইজন পূর্ণ মন্ত্রী দেওয়া হবে, এমন ভাবনা অলীক স্বপ্নের মতো হতে পারে। এই দুইজনের মধ্যে থেকে যে কোন একজনকে মন্ত্রী করার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সম্ভাবনা কার বেশি, তা নিয়েও রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলাপ-আলোচনা আছে। যদিও রাজনৈতিক বিবেচনায় মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয় তাহলে নিঃসন্দেহে মির্জা আজম আবুল কালাম আজাদের থেকে অনেক এগিয়ে থাকবেন। তবে, এখনো পর্যন্ত মন্ত্রিসভায় আমলাদের হিস্সা নেই বললেই চলে। আর এ কারণেই মন্ত্রিসভায় আবুল কালাম আজাদের সম্ভাবনা এখন পর্যন্ত শেষ হয়ে যায়নি বলেই মনে করছেন অনেকে। আবুল কালাম আজাদ যদি যেকোন একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী হন তাহলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

আবার প্রধানমন্ত্রী যেহেতু জামালপুর থেকে একজনকে পূর্ণ মন্ত্রী দিয়েছেন, সে কারণে এই দুইজনের কাউকেই মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভূক্ত না-ও করতে পারেন। সবকিছু নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর একক সিদ্ধান্তের ওপর। কারণ, সংবিধান মন্ত্রিসভায় যে কোন সদস্যকে নিয়োগ-বরখাস্ত করার একক ক্ষমতা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭