ইনসাইড পলিটিক্স

পদ ছাড়তে চান বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা


প্রকাশ: 09/02/2024


Thumbnail

বিএনপির মধ্যে হতাশা তৃণমূল থেকে ছড়িয়ে পড়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে, এমনকি শীর্ষ নেতৃত্বে। অনেকেই এখন বিএনপি ছাড়ার কথা ভাবছেন। রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। এই পরিকল্পনার কথা তারা কর্মীদেরকে জানাচ্ছেন, জানাচ্ছেন শীর্ষ নেতাদেরকেও। এ রকম অন্তত এক ডজন বিএনপির বিভিন্ন স্তরে কেন্দ্রীয় নেতা পাওয়া গেছে, যারা এখন দলের পদ ছাড়তে চান, রাজনীতি থেকে অবসর নিতে চান। 

ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকার প্রতিষ্ঠাকাল সময় থেকেই বিএনপির সঙ্গে ছিলেন। বিএনপি সরকারে থাকার সময় তিনি মন্ত্রী হয়েছেন, স্পিকার হয়েছেন৷ তার রাষ্ট্রপতি থাকার সম্ভাবনার কথা আলোচিত হলেও শেষ পর্যন্ত তিনি রাষ্ট্রপতি হননি। বিএনপিতে যাদের কোনো বিচ্যুতি নেই, তাদের মধ্যে একজন ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার। কিন্তু এখন তিনি রাজনীতির মাঠে আর পদচারণা করেন না। বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি বাড়িতেই অবস্থান করেন। কিন্তু রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তিনি একেবারেই যান না। এখন এই জীবনসায়াহ্নে এসে বিএনপির পদ আঁকড়ে রাখতে অনাগ্রহ ব্যক্ত করেছেন তিনি। অন্তত কয়েকজন নেতার কাছে তিনি বলেছেন যে, এখন তিনি অবসর জীবনযাপন করতে চান। এই পথ কাউকে দিলে তারা যদি দলের জন্য কাজ করে সেটাই ভাল হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত জমির উদ্দিন সরকার নির্লিপ্ত ভাবেই যে একরকম অবসর জীবন যাপন করছেন। 

বিএনপির আরেকজন ত্যাগী পরীক্ষিত নেতা ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া। তিনি এক সময় বিএনপিতে তারেক বিরোধী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তারেক জিয়ার কারণে তিনি ২০০১ সালের নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি। কিন্তু মনোনয়ন না পেলেও বেগম খালেদা জিয়ার কারণে তিনি দলে ছিলেন এবং দলে অবহেলিত থেকেও তিনি বিএনপির রাজনীতিকে আঁকড়ে ধরেছিলেন। এক-এগারোর সময় তিনি প্রস্ফুটিত হন এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবেও তিনি আছেন। কিন্তু শারীরিক ভাবে প্রচণ্ড অসুস্থ রোগশয্যায় দীর্ঘদিন শায়িত বিএনপির এই প্রবীণ নেতাও এখন রাজনীতি করতে চান না। রাজনীতিতে তার কোন ভূমিকা নেই। কিন্তু আমি তাকে একটি পদে রাখা হয়েছে। 

বিএনপির আরেক আলোচিত নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ তিনি নানা নাটক করে ভারতে অবস্থান নিয়েছিলেন। ভারতের আদালত থেকে মুক্ত হওয়ার পরও তিনি এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে আসেননি। অনেকেই ধারণা করেছিল যে, তিনি দেশের শীর্ষ নেতৃত্ব দেন। কিন্তু গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে যে, সালাহউদ্দিন আহমেদ বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে আর সক্রিয় ভাবে থাকতে চান না। এরকম বিএনপিতে বেশ কয়েকজন নেতার পরিচয় পাওয়া গেছে, যারা এখন রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয়। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর তাদের মধ্যে হতাশা বেড়েছে। এই দলটির আর কোন ভবিষ্যৎ নেই- এই বিবেচনা করে এখন তারা রাজনীতি থেকে নিজেদেরকে গুটিয়ে ফেলতে চান। 

শুধুমাত্র যে অসুস্থতার কারণে বা বার্ধক্যজনিত কারণে রাজনীতি থেকে অনেকে সরে যেতে চাইছেন এমনটা নয়। বিএনপির বেশ কিছু কেন্দ্রীয় নেতা এখন নিষ্ক্রিয়। তারা কোনো কর্মসূচিতে যাচ্ছেন না। স্থায়ী কমিটির নেতারা ডাকলেও সাড়া দিচ্ছেন না। এরা এখন আর রাজনীতি করবেন না বলেও মন স্থির করেছেন। আনুষ্ঠানিক ভাবে পদত্যাগ পত্র জমা না দিলেও এরা নিজেদেরকে সামনে আনছেন না। এর একমাত্র কারণ হলো বিএনপির ভুল রাজনীতি। ভুল রাজনীতির কারণে বিভিন্ন মামলায় তাদের নাম লেখা হচ্ছে।

বিএনপির একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেছেন যে, গত এক বছর ধরে তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। বিএনপির রাজনীতিতে তার কোন ভূমিকাও নেই। তারপরও তিনি বিভিন্ন মামলার আসামী হয়েছেন। এ কারণেই তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে পদত্যাগের কথা ভাবছেন। এরকম ভাবে বিএনপিতে এখন শীর্ষ নেতাদের মধ্যে পদ ছাড়া ভাবনা চিন্তা গুলো বেশি বাড়ছে এবং খুব শিগগির বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনেকে পদত্যাগ করবেন এমন গুঞ্জন রয়েছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭