ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচন নিয়েও তালগোল পাকাচ্ছে বিএনপি


প্রকাশ: 10/02/2024


Thumbnail

আওয়ামী লীগ আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করবে না। উপজেলা নির্বাচন উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। দল এই নির্বাচনে নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকবে। আজ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি সরাসরি ভাবে উপজেলা নির্বাচনের রূপ পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। এই নির্বাচনে যেকোন ব্যক্তি যেকোন প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন এবং দল কাউকে সমর্থন দেবে না। 

একই ধারায় জামায়াতও উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে বলে তাদের মজলিসে শূরা বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে জাতীয় পার্টি বলেছে, তারা দলীয় প্রতীক ব্যবহার করে উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। এভাবে রাজনৈতিক দলগুলো যখন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তখন বিএনপির অবস্থান কি? উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপি কি ভাবছে?

বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, অন্যান্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে যেমন তারা সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে, উপজেলার ক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটছে। দলের নেতারা এখন পর্যন্ত বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি যে, তারা কিভাবে উপজেলা নির্বাচন করবে বা আদৌ উপজেলা নির্বাচন করবে করবে কি না।

উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণের পক্ষে বিএনপির তৃণমূল। তারা বলছে, যেহেতু আওয়ামী লিগ নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন না, কাজেই বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ে যারা জনপ্রিয় নেতা তাদের স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত। এর পক্ষে বিএনপির তৃণমূলের যুক্তি হল যে, সংগঠন শক্তিশালী হবে, নেতাকর্মীদের হতাশা দূর হবে। তারা আবার চাঙ্গা হবেন এবং এই নির্বাচনে জনপ্রিয়তা যাচাই একটা সুযোগ তৈরি হবে। তবে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে অনেকে মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত হবে সরকারকে এবং নির্বাচন কমিশনকে বৈধতা দেওয়ার সামিল। কারণ নির্বাচনে যেহেতু তারা অংশগ্রহণ করেনি, কাজেই উপজেলা নির্বাচনে দলের প্রার্থীরা যদি স্বতন্ত্রভাবে অংশগ্রহণ করে সেটি গোপন থাকবে না। এর ফলে পরোক্ষভাবে হলেও সরকারকে এবং নির্বাচন কমিশনকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। এটি তারা করতে চাচ্ছে না। 

তারা মনে করেন যে, বিএনপিকে নির্বাচনের মাঠে আনার জন্যই আওয়ামী লীগ এই কৌশল গ্রহণ করেছে। উপজেলা নির্বাচনে যদি ব্যক্তিরা স্বতন্ত্রভাবে অংশগ্রহণ করে তাহলে তাদের ক্ষেত্রে একই রকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অতীতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার অপরাধে বহু বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। এখন যদি কেউ উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে তাদেরকে একইরকম পরিণতি ভোগ করতে হতে পারে- এমন প্রস্তাব কারো কারো। তবে তৈমুর আলম খন্দকার কিংবা সাক্কুরা নির্বাচন করেছিলেন দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে। এখন দেখার বিষয় যে, উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে বিএনপি দলগতভাবে কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। 

পাল্টাপাল্টি অবস্থানের মধ্যে তৃতীয় একটি মতামত দাঁড়িয়েছে। যেটিতে বলা হচ্ছে যে, উপজেলা নির্বাচন বিষয়টিও তারা উপক্ষো করবে। উপজেলা নির্বাচনে যদি কেউ অংশগ্রহণ করে তাহলে সেই বিষয়টিকে বিএনপি আমলে নেবে না। কারণ উপজেলা নির্বাচন যেহেতু একটি নির্দলীয় চরিত্র পেয়েছে যেকোন ব্যক্তি এখানে অংশগ্রহণ করতে পারে। তবে সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় উপজেলা নির্বাচনে দাঁড়াতে ইচ্ছুক বিএনপির শত শত নেতা। তারা মনে করছে দ্রুত তাদেরকে যেকোন একটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়া হতে পারে। না হলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপিতে আরেকটি স্ববিরোধী অবস্থান দেখা দিতে পারে। বহু বিএনপির নেতারা উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত না দেয় তাহলে সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেই তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭