লিভিং ইনসাইড

যুগের পরিবর্তনে আধুনিক সম্পর্কের দৃষ্টি ভঙ্গিতেই কি বাড়ছে বিবাহবিচ্ছেদ?


প্রকাশ: 11/02/2024


Thumbnail

সামাজিক একটি বন্ধন হচ্ছে বিয়ে। বিয়ের মাধ্যমে একটি বৈধ চুক্তিতে নারী-পুরুষ দুজন দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপন করে, কখনও পারিবারিক সম্মতিতে, আবার কখনওবা নিজেদের পছন্দে। তবে দেশ, কাল, পাত্র, ধর্ম ও বর্ণভেদে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা অনেকটাই ভিন্ন হয়ে থাকে।

বিয়ে মানব জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ, যার মাধ্যমে নারী-পুরুষ একত্রে বৈধভাবে মিলিত হয়, রচনা করে স্বপ্নের সুখী নীড় এবং গড়ে তোলে পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন। আবার এই সামাজিক বন্ধন বিয়ে টা যেমন সামাজিক মর্যাদায় পারিবারিক দাম্পত্য জীবন শুরু করে তেমন করে বিয়ে বা বিবাহ বিচ্ছেদ ও হয়ে থাকে নিমিশেই। কেননা বিয়ে হচ্ছে একটি শক্তিশালী ও পবিত্র বন্ধন।

একটি বিয়ে শুরু হয় উদযাপন ও ভালবাসায়। এই বন্ধন ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত অনেক কঠিন হলেও জীবন চলার পথে বিভিন্ন কারণে অনেককে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিতে হয়।

যুগের পরিবর্তন কালের বিবর্তনে পরিবার ও সমাজের নানান অসঙ্গতির কারনে বিচ্ছেদ হতে পারে। যদি স্বার্থপর বা অসমান যৌথ জীবনের সমস্যা উঠে এবং এটি সমাধান করা সম্ভব না থাকে, তাহলে একটি দাম্পত্য জীবনের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যেতে পারে।

এমনকি স্বামী স্ত্রীর মধ্যে অসম্মান আচরণ বা আধুনিক সম্পর্কের দৃষ্টিভঙ্গি যদি অবধারিত থাকে তাহলে সেই আচরণের বা সম্পর্কের ভিত্তিতে আধুনিক সম্পর্ক সংরক্ষণ করা সম্ভব না হলে বিবাহ বিচ্ছেদ হতে পারে। সবচেয়ে বড় কারন হতে পারে অর্থনৈতিক সমস্যা।

কেননা সংসার জীবনে আর্থিক বিপদ হলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক দূরত্ব তৈরি করতে পারে, এতে করে বিবাহ বিচ্ছেদটা এক ধাপ বেড়ে যায়। যদি একটি পরিবার সামাজিক মূল্যবোধের স্থান থেকে চিন্তাকরা হয় তাহলে, একটা পরিবারের পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে বা কোন মামলা বা আইনি জটিলতার কোন বিতর্কের অবস্থা থাকে সে ক্ষেত্রেও পারিবারিক কলরহ হতে পারে এবংকি সেটা বিবাহ বিচ্ছেদ পর্যন্ত ও যাওার সম্ভাবনা থেকে যায়।

দেখা যায়, দম্পতিদের মধ্যে মনোমালিন্য, মারামারি, তর্ক ও, বিশ্বাসঘাতকতা করার কারণেও অনেকেরই বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক দাম্পত্য জীবন ধ্বংস করে দেয়। অ্যালকোহল, ড্রাগে আসক্ত ব্যক্তিরাও সম্পর্ক ও সঙ্গীকে ধরে রাখতে পারেন না. অতিরিক্ত উচ্চাকাঙ্খা কিংবা লোভী নারী-পুরুষ অর্থ, ক্ষমতা, সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির লোভে তার চেয়ে তিনগুণ বয়সী নারী-পুরুষ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছে। রিবারিক নির্যাতনের কারণেও একটি সংসার ভেঙে যায়।

বিশেষ করে অনেক নারী তার সঙ্গীর কাছ থেকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটান। শুধু নারীরাই নন, পুরুষদের ক্ষেত্রেও অনেক সময় এটি দেখা যায়।

বিবাহ বিচ্ছেদের প্রতিকার বিভিন্ন দেশে এবং ধর্মে বিভিন্ন হতে পারে এবং কানুনি নির্ধারণে ভিন্ন হতে পারে। তবে, কিছু সাধারিতভাবে অনুভব হওয়া প্রতিকার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে:

আলিমোনি (অনুগ্রহিতা): কিছু দেশে, বিচ্ছেদের পর এক পক্ষে অপর পক্ষকে আলিমোনি বা অনুগ্রহিতা দেওয়া হতে পারে, যা আত্মা-নির্ভরশীলতা এবং আর্থিক সহায়ক সরবরাহ করতে সাহায্য করে।

বাচ্চাদের জন্য পুনর্নির্মাণ অধিকার: বিবাহ বিচ্ছেদ হলে, সাধারণভাবে বাচ্চাদের জন্য পুনর্নির্মাণ অধিকার দেওয়া হতে পারে, এটি তাদের দেখভাল এবং শিক্ষার জন্য অভিভাবকের সাথে মিলে। যা বিচ্ছেদের প্রতিকার হতে পারে।

সম্পত্তির বন্টন: বিবাহ বিচ্ছেদের পর সম্পত্তির মামলা বন্টন করা হতে পারে, এটি বৈধ সম্পত্তি এবং অধিকারের ভিন্নতা নিরসন করে এর ফলে দাম্পত্য জীবনে বিচ্ছেদের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যেতে পারে।

আলোচনা এবং সম্ঝোদন: কিছু ক্ষেত্রে, বিচ্ছেদের পর আলোচনা এবং সম্ঝোদনের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে, যাতে দুই পক্ষের মধ্যে সমস্যা সমাধান হতে পারে। যা বিচ্ছেদের পরও সঠিক সমাধান করতে সহায়তা করে।

এই প্রতিকারগুলি একে অপরের মধ্যে ভিন্নতা দেখায় এবং কানুনি নিয়মাবলীর মধ্যে ভিন্নতা থাকতে পারে। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে বিবাহবিচ্ছেদ বেড়ে পড়ছে অসংখ্য পরিবারে এর প্রভাব। যা কিনা সমাজ ও জাতিগত দিক থেকে সঠিক নিরসন হওয়া একান্তই জরুরি নলে মনে করেন বিশ্বের একাধিক সমাজবিজ্ঞানীরা।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭