ক্লাব ইনসাইড

জাবিতে ধর্ষণ ও মাদককাণ্ডে মশাল মিছিল, আন্দোলনকারীদের মুখোমুখি উপাচার্য


প্রকাশ: 12/02/2024


Thumbnail

সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত ও অছাত্রদের হল থেকে বের করে গণরুম বিলুপ্তপূর্বক নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিতসহ ৫দফা দাবিতে মশাল মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ‘নীপিড়ন বিরোধী মঞ্চ’ এর ব্যানারে মশাল মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে বঙ্গবন্ধু হল, বটতলা, নতুন প্রশাসনিক ভবন, পরিবহন চত্বর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিন করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

এসময় শিক্ষার্থীরা তাদের ৫ দফা দাবিগুলো মেনে নেয়ার নিমিত্তে উপাচার্যের বাসভবনের সম্মুখে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে চলমান আন্দোলনের পঞ্চম দিনে আন্দোলনকারীদের মুখোমুখি হন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিবর্গ।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলো হলো- নিপীড়ক শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির বিচার নিষ্পত্তি করা, নিপীড়নে সহায়তাকারী প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্টের অপরাধ তদন্ত করতে হবে এবং সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে তাদেরকে তদন্ত চলাকালে প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান এবং মাদকের সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে জড়িতদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণাপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সংগঠক নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনি যৌন নিপীড়নের দায়ে অভিযুক্ত। কিন্তু আজ পর্যন্ত তার বিচার হয়নি৷ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও রাষ্ট্রীয় প্রশাসন হাতে হাত রেখে হাঁটছে৷ রাষ্ট্রের মতো বিশ্ববিদ্যালয়েও গণতান্ত্রিক পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো জাকসু নির্বাচন হয়নি, নিপীড়ন ও অপকর্মের মতো নানা ঘটনার বিচার হয়নি।

আ র ক রাসেল বলেন, গণরুম বিলুপ্তির জন্য পাঁচ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম আমরা। প্রশাসন গণরুম বিলুপ্তির নামে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানি করেছে। হল প্রশাসন রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা এসকল অবৈধ শিক্ষার্থীদের কক্ষে যায়ই নাই।

অতীতে সংগঠিত ঘটনাগুলোর বিচারহীনতার ফলে বিশ্ববিদ্যালয় আজকে এই পর্যায়ে উপনীত হয়েছে সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন বলেন, উপাচার্য বলেছিলেন ধর্ষণকান্ডে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এবং আবাসিক হলে অবস্থানরত অছাত্রদের বের করার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিবেন। পাঁচ কর্ম দিবসের মধ্যে অছাত্রদের হল থেকে বের করার কথা থাকলেও আজকে সে সময়সীমা শেষ হয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি এ ব্যাপারে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। গোয়েন্দা সংস্থা এবং র‍্যাবের ভাষ্যমতে এই বিশ্ববিদ্যালয় মাদকের আখড়া হয়েছে। এই বাণিজ্য অনেকদিন ধরে চলছে। বিশ্ববিদ্যালয় ধর্ষণের মত একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটার পরেও বিশ্ববিদ্যালয় এবং হল প্রশাসন নিষ্ক্রিয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও প্রভোস্ট বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এরকম হলে সামনের ভর্তি পরীক্ষায় অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠাবেন কিনা তা নিয়ে আমরা শঙ্কিত। আমি বিশ্বাস করি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি শিক্ষক এই পরিস্থিতির পরিবর্তন চায়। তবে প্রশাসনের সমস্যা কোথায়?

এদিকে চলমান আন্দোলনের পঞ্চম দিনে আন্দোলনকারীদের মুখোমুখি হন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলমসহ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিবর্গ। আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবি মানার বিষয়ে আশ্বস্ত করলে সিন্ডিকেটের বেধে দেয়া পাঁচদিনের সময়ের মধ্যে আবাসিক হল থেকে অছাত্রদের বের করতে না পারা সহ গনরুম বিলুপ্ত করে মিনি-গনরুম চালু রাখায় একপর্যায়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের সাথে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।

এছাড়া আন্দোলনকারীরা আবাসিক হলে অবস্থান করা অছাত্রদের তালিকার বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্যসহ উপস্থিত প্রশাসনিক শিক্ষকরা তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং আরও দুই-তিন দিন সময় চান। একপর্যায়ে প্রশাসনের অক্ষমতার বিষয়টি তুলে ধরে নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের সংগঠকদের পক্ষে পারভীন জলি আগামী দুইদিন প্রতিকী অবরোধ কর্মসূচির ঘোষনা দেন। এছাড়া প্রশাসন দাবি না মানলে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রশাসনের ব্যার্থতার প্রতিবাদে এক দফা দাবিতে আন্দোলননের ডাক দেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭