ক্লাব ইনসাইড

ইবিতে ফের র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ, গণরুমে ছাত্রকে উলঙ্গ করে নির্যাতন


প্রকাশ: 12/02/2024


Thumbnail

২০২৩ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নবীন ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে বিবস্ত্র করে র‌্যাগিং ও নির্যাতনের ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। পরে তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনায় জড়িত পাঁচ ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার করেছিল কর্তৃপক্ষ।

তবে ঘটনার বছর না পেরুতেই একই কায়দায় এবার ছাত্র হলের গণরুমে এক নবীন ছাত্রকে উলঙ্গ করে রাতভর র‌্যাগিং ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারী) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের ১৩৬ নং কক্ষে (গণরুম) এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-ফিকহ এবং লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী সুত্রে জানা যায়, গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের ১৩৬ নং কক্ষে কিছু সিনিয়র পরিচয়পর্বের নামে তাকে ডাকেন।

এসময় তাকে খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে সিনিয়ররা। পরে ভুক্তভোগীকে নানা কুরুচিপূর্ণ আচরণ করতে বাধ্য করলে সে অস্বীকৃতি জানালে তাকে বার বার রড দিয়ে আঘাত করতে থাকে।

পরে তারা জোরপুর্বক উলঙ্গ করে টেবিলের উপর দাড় করিয়ে রাখা হয় ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীকে। এছাড়াও এসময় তাকে নাকে খত দেওয়া সহ বিভিন্নভাবে শারীরিক নির্যাতন করে অভিযুক্তরা। ওইদিন রাত সাড়ে ১২ টা থেকে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দফায় দফায়  নির্যাতন চালায় তার উপর৷ এছাড়াও দেখিয়ে বার বার বেড-পত্র বাইরে ফেলে দেয় বলে জানান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন, শারিরীক শিক্ষা বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মুদাচ্ছির খান কাফি এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের মো. সাগর। তারা সকলেই লালন শাহ হলের ১৩৬ নং কক্ষে থাকেন। এছাড়াও অভিযুক্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী বলে জানা যায়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত বুধবার আমার সাথে এমন একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। তবে পরে হলের ছাত্রলীগের সিনিয়র ভাইয়েরা বিষয়টা মিটমাট করে দেয়। মিটমাটের পর অভিযুক্তদের হলে তেমন একটা দেখা যায়নি।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সাগর ঘটনাটি অস্বীকার করে বলেন, এ রকম কোন ঘটনা ঘটেনি। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তাছাড়া আমি ওইদিন হলের বাইরে ছিলাম। ওই রুমে ছিলাম না, পাশের রুমে ছিলাম। বাকি অভিযুক্তদের একাধিকবার কল করেও পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে। যদি ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ দেয় এবং অভিযুক্তরা ছাত্রলীগ কর্মী হয়ে থাকে তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন বলেন, বিষয়টি শোনার পর আমি হলের নেতাদের সাথে কথা বলেছি। তারা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন এবং মিউচুয়াল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন। তবে বিষয়টি আমার কাছে অনেক ভয়াবহ বলে মনে হচ্ছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না পেলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা আমার পক্ষে কঠিন।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসনে আজাদ বলেন, বিষয়টি শুনেছি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে গেল বছরের জুন মাসে লালন শাহ হলের গণরুমে এক নবীন শিক্ষার্থীকে বিবস্ত্র করে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠে। এই ঘটনায় প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছিল ভুক্তভোগী। তবে ভয়ভীতি দেখানোয় পরে অভিযোগপত্র তুলে নিয়েছিল ভুক্তভোগী।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭